নবান্নে বৈঠকের আমন্ত্রণ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নিজে করেছিলেন শনিবার। সেই মতো জুনিয়র চিকিৎসকদের সোমবার বিকাল ৫টায় নবান্ন আমন্ত্রণ জানিয়ে মেল করেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ (Manoj Pant)। সেখানেই আন্দোলনকারীদের দশ দফা দাবি লিখিত আকারে জানানো কথা বলা হয়। মুখ্যসচিবের মেলে দশ দফা দাবি লিখিত চাওয়ার পরই সমালোচনায় সরব হয়ে ওঠা জুনিয়র চিকিৎসকরা ফের মেল করে সেই দাবিগুলি আবার জানালেন মুখ্যসচিবকে (chief secretary)। তৃণমূলের দাবি, যেভাবে গত দুমাসে বারবার দাবি বদলেছেন চিকিৎসকরা, তাতে নতুন দাবি কী, তা স্পষ্ট করার দাবি জানানো হয় রাজ্যের শাসকদলের পক্ষ থেকে। কার্যত তাঁরাও যে দাবি বদলের পথেই চলেছেন বারবার, তা মেনে নিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা (junior doctors)।

সোমবার নবান্নের বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। সেই বৈঠকে যে দাবি নিয়ে তাঁরা আলোচনা করতে চান, প্রশাসনিকভাবেই সেই দাবিগুলি আগে জানানোর কথা মেলে জানা মুখ্যসচিব (chief secretary)। তার পাল্টা রবিবার মেল করে নিজেদের দশ দফা দাবি জানিয়ে দেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। যদিও তার আগে একাধিক জুনিয়র চিকিৎসককে দেখা যায় মুখ্যসচিবের মেলের সমালোচনা করতে। অনেকেই দাবি করেন, যে দাবি নিয়ে তাঁরা দুমাস আন্দোলন করছেন তা কেন আবার জানাতে হবে। যদিও মুখে সে কথা বললেও লিখিত মেল করে সেই সব দাবি মুখ্যসচিবকে তাঁরা জানিয়ে দেন। অনশন না ভাঙার জেদের মতো এই দাবি না জানানোর জেদ ধরে রাখতে এদিন দেখা যায়নি তাঁদের।
রাজ্যের শাসকদলের কটাক্ষ, চিকিৎসকরা নিজেরাও জানেন তাঁরা দাবি বদল করেছেন। প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষের দাবি, “দশ দফা দাবির পর্যাগুলো বদলাচ্ছে। প্রথমে দাবি ছিল কলকাতা পুলিশের তদন্ত মানি না। পরবর্তীকালে সেটা উই ওয়ান্ট সিবিআই (we want CBI) হল। ন্যায়বিচারের তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে। খুব বিপ্লবী জুনিয়র ডাক্তার চিৎকার করলেন সিবিআইয়ের চার্জশিটে (chargesheet) আস্থা নেই। অথচ পরের দিন সুপ্রিম কোর্টে তাঁদের আইনজীবীরা সিবিআইয়ের চার্জশিট চ্যালেঞ্জ করে একটা পিটিশনও জমা দেননি। ফলে ওনাদের দশ দফা দাবিগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যখন প্রেক্ষিত পরিবর্তন হচ্ছে তখন দাবিরও সুর বদল হচ্ছে।”

সেই সঙ্গে কুণালের কটাক্ষ, “ওনাদের লেটেস্ট কী? সিপিএম লেটেস্ট কী শেখালো। নকশালপন্থীরা লেটেস্ট কী বলতে বলল। যাঁরা ইনভেস্ট করছেন বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে তাঁদের কোনও পরামর্শ আছে কিনা। সেই অনুযায়ী তো দশ দফা দাবি হবে। ফলে তাঁদের অনুরোধ করব, আপনাদের দাবি যেমন থাকছে তেমন দুটো অভিযোগ থাকছে।” তিনি স্পষ্ট করেন, স্বাস্থ্য প্রশাসনে টেন্ডার বা অন্য চক্র দিয়ে দুর্নীতি যেমন বন্ধ করা যেমন, তেমন একাংশের চিকিৎসক প্রেসক্রিপশন থেকে যে চক্র চালান, ওষুধ কোম্পানির কমিশন, ল্যাবরেটরির কমিশন থেকে যে চক্র বন্ধের ব্যবস্থা করুন। সেই সঙ্গে জেলাস্তরে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো বাড়ার পরেও যে ডাক্তারবাবুরা সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থায় কৌশলে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন, যাঁদের জন্য সাধারণ মানুষ পরিষেবা পান না তাঁদের শুদ্ধিকরণ করতে হবে।
