আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা, বৃহস্পতির রাতেই স্থলভাগে আছড়ে পড়তে চলেছে সুপার সাইক্লোন ‘ডানা’ (Super Cyclone Dana)। ঝড়ের অভিঘাত থেকে বাঁচতে সতর্ক জল, স্থল, আকাশপথ।দক্ষিণবঙ্গের জেলায় জেলায় ফেরি সার্ভিস (Ferry service) নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কলকাতা, হাওড়া, হুগলির বিস্তীর্ণ ঘাটে আগামী দুদিন জলপথ পরিষেবা বন্ধ থাকছে। সাইক্লোনের জেরে সন্ধ্যা থেকেই শিয়ালদহ শাখায় (Sealdah Division) বন্ধ হতে চলেছে লোকাল এবং দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল। যাঁদের কাজে বের হতে হয়েছে তাঁদের জন্য জানিয়ে রাখা দরকার যে আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় শিয়ালদহ থেকে শেষ ট্রেন ছাড়বে। পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র (Kaushik Mitra) জানিয়েছেন, শিয়ালদহ ডিভিশনের শাখাগুলিতে ১৯০টি লোকাল ট্রেন ২৪ তারিখ রাত ৮টা থেকে আগামিকাল অর্থাৎ ২৫ তারিখ সকাল ১০টা পর্যন্ত বাতিল থাকবে। কলকাতা এবং ভুবনেশ্বরে বন্ধ উড়ান পরিষেবা।

সাগরে ফুঁসছে ‘ডানা’ (Dana)। ইতিমধ্যেই উপকূলে ঝোড়ো হাওয়ার দাপট শুরু হয়েছে। এই মুহূর্তে সাগরদ্বীপ থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড়টি। ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে আর মাত্র ২৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে এবং ধামারা থেকে ২৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে ‘ডানা’।খাঁখাঁ করছে জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকতগুলি। পুরী, দিঘা, গোপালপুর, চাঁদিপুরে শুধুই প্রকৃতির তাণ্ডব। আতঙ্ক বাড়ছে বাংলায়। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের (Alipore Weather Department) পূর্বাভাস অনুযায়ী পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, হুগলিতে এই সাইক্লোনের প্রভাব পড়বে। তাই আগেভাগেই সতর্ক পূর্ব রেল (ER)। যেহেতু ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল হবে বৃহস্পতির রাত থেকে শুক্রবার সকালের মাঝে, তাই ২৫ অক্টোবর তুমুল বৃষ্টিতে জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কায় দক্ষিণবঙ্গ। আগাম সতর্কতা হিসেবে শুক্রবার সকালে ট্রেন পরিষেবায় কাটছাঁট করা হলো। হাওড়া থেকে বাতিল থাকবে ২৫ লোকাল ট্রেন, ব্যান্ডেল থেকে ১২টি, বর্ধমান থেকে বাতিল থাকবে ৫টি লোকাল ট্রেন, শেওড়াফুলি থেকে বাতিল থাকবে ৬টি, শ্রীরামপুর থেকে ২টি, কাটোয়া থেকে ২টি, মেমারি থেকে ১টি এবং আরামবাগ, গোঘাট, তারকেশ্বর, বারুইপাড়া, চন্দনপুর, পান্ডুয়া, গুরাপ, মশাগ্রাম, সিঙ্গুর, বেলুড়মঠ থেকে ১৫টি লোকাল ট্রেন বাতিল থাকবে। এর পাশাপাশি আকাশপথেও ব্যাহতভাবে পরিষেবা। সতর্ক কলকাতা বিমানবন্দর (NSCBI Airport)। এদিন সকাল থেকে ভুবনেশ্বরে বিমান চলাচল স্থগিত করা হয়েছে।আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, শহর ও শহরতলিতে ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৭০ কিমি হতে পারে। তাই প্রায় দু’দিন সব বিমান পরিষেবা বাতিল করল কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পরেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সকাল ন’টা পর্যন্ত কোন কলকাতা থেকে কোনও বিমান ওঠা নামা করবে না। বৃষ্টিতে রানওয়ে জুড়ে জল জমার আশঙ্কায় বিশেষ পাম্প প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঝড় চলাকালীন রানওয়েতে যাতে কোনও কর্মচারী না থাকে তার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিআইএসএফ এবং নিরাপত্তা রক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের (NSCBI Airport) মূল প্রবেশদ্বারের সামনে বালির বস্তা দিয়ে প্রবেশদ্বার বন্ধ করা হবে বলেও জানা যাচ্ছে।
