ওড়িশাতেই আটকেছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’। আশঙ্কা থাকলেও বাংলায় বড়সড় প্রভাব ফেলতে পারেনি ঘূর্ণিঝড়। তবে ঝড়ো হাওয়ার দাপটে রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকায় কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। শুক্রবার দুপুরে নবান্নে (Nabanna) প্রশাসনিক বৈঠক থেকে এ কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay)। একই সঙ্গে এখনই দুর্গত এলাকা না ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রশাসনিক আধিকারিকদের। জোর দিয়েছেন পর্যাপ্ত ত্রাণ বিলির উপরেও।দুর্যোগ-পরবর্তী পরিস্থিতিতে জেলাগুলিতে বিশেষ নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। উপকূলবর্তী পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার পরিস্থিতির উপর বিশেষ ভাবে নজর দিতে বলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এক জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। সেটাও খুব দুর্ভাগ্যজনক। উনি বাড়িতে কেবল তার নিয়ে কাজ করছিলেন।” মৃত ব্যক্তির পরিবারের পাশে প্রশাসনকে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন তিনি। দানার দাপটে চাষের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। পাকা ধানের জমিতে জল দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কৃষি দফতরকে কোথায় কতটা ক্ষতি হয়েছে চাষের তার যাবতীয় তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে ৪৮ ঘণ্টা পর থেকে সেই ফিল্ড সার্ভের নির্দেশ দিয়েছেন। বাংলা শস্য বিমার টাকা সরাসরি চাষীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনও ক্ষতিগ্রস্ত সাহায্য থেকে যেন বঞ্চিত না হন-কড়া নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর।

আবহাওয়া পরিস্থিতির সম্পূর্ণ উন্নতি না-হওয়া পর্যন্ত ত্রাণ শিবিরগুলি চলবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষজন যাতে এখনই নিজেদের বাড়ি না ফেরেন, তাও দেখতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কোথাও কাঁচাবাড়ি ভেঙে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে দেখতে বলেন মমতা (Mamata Bandopadhyay)।

বিপর্যস্ত এলাকায় আরও দু-দিন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল (এনডিআরএফ) এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দল (এসডিআরএফ)-এর কর্মীদের মোতায়েন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিভিন্ন রোগের হানা রুখতে মেডিক্যাল ক্যাম্প চালানোর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি জমা জল থেকে মশাবাহিত বিভিন্ন রোগের প্রকোপের কথা মনে করিয়ে মশারি বিলির পরামর্শ দেন তিনি। তাঁর কথায়, “যেখানে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ রয়েছে, সেখানে মশারি দিতে হবে।” একইসঙ্গে অ্যান্টি ভেনাম মজুত রাখা এবং সাপে কামড়ালে দ্রুত চিকিৎসা নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। টেলি মেডিসিন কার্যকর করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে বলেন মমতা।

জেলাশাসকদের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, কোথাও পলির কারণে জল জমে থাকলে, তা খতিয়ে দেখতে হবে।
