নবান্ন থেকে রাতভর ‘ডানা’য় নজর, দুর্যোগের বাংলায় অতন্দ্র প্রহরী মমতা

প্রাকৃতিক দুর্যোগ হোক বা হঠাৎ করে আসা কোনও বিপর্যয়, বাংলার মানুষকে রক্ষা করতে সবার আগে এগিয়ে যান রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এবারেও তার ব্যতিক্রম হলো না। ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’র (Cyclone Dana) ঝাপটায় তৈরি হওয়া দুর্যোগের ময়দানে অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে নিশিযাপন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর (West Bengal CM) । সারা রাত নবান্নের (Nabanna ) কন্ট্রোল রুম থেকে গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখলেন। কখনও হাওয়া অফিসের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করলেন কখনও বা স্বরাষ্ট্রসচিবকে নিয়ে জেলাশাসকদের অবস্থান সম্পর্কে খোঁজখবর নিলেন। বিপর্যয় মোকাবিলায় নবান্নের কন্ট্রোলরুমে আধিকারিকদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কাজ করেন মমতা নিজেও। মনিটরে চোখ রেখে সর্বক্ষণ বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করলেন পরিস্থিতি কতটা প্রতিকূল। বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ১২ মিনিটে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। দিঘা (Digha), মন্দারমনির পাশাপাশি উপকূলবর্তী এলাকাতেও তীব্র জলচ্ছ্বাস দেখা যায়। ল্যান্ডফল শুরু হতেই সবার আগে সুন্দরবন এবং মেদিনীপুরের খোঁজ নেন মমতা।

বৃহস্পতিবার বিকেলেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন তিনি নবান্নে রাত জাগবেন এবং দুর্যোগ পরিস্থিতির উপর নজর রাখবেন। সকলকে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। যে কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের রাত্রি জাগরণ এখন রাজ্যবাসীর কাছে পরিচিত দৃশ্য। ‘ডানা’ (Dana) দাপট দেখানো শুরু করতেই সব জেলার জেলা শাসকের সঙ্গে কথা বলা থেকে শুরু করে কলকাতা পুরসভায় থাকা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) এবং বিদ্যুৎ দফতরে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের কাছ থেকেও প্রতিমুহূর্তে আপডেট নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আগে থেকেই সতর্ক ছিল বাংলা। সেইমতো সারারাত রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তা থেকে আমলা, সরকারি কর্মচারী থেকে বিধায়ক মন্ত্রী সকলকেই সক্রিয় থাকতে দেখা গেল। বৃহস্পতিবার রাত দশটা থেকেই নবান্নে বিপর্যয় কন্ট্রোল রুমে বসে স্যাটেলাইট ম্যাপের মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কিত সব আপডেট বুঝে নিতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। এর পাশাপাশি কোথায় কোথায় বৃষ্টি বাড়তে পারে সেই সম্পর্কিত খোঁজখবরও নেন। ‘ল্যান্ডফল’ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর ঝড়ের দাপট আরও বেড়ে যায় ওড়িশায়। পশ্চিমবঙ্গের উপকূলেও ঝড়বৃষ্টি হয়েছে সারারাত। সকালেও কলকাতা- সহ জেলায় জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি চলছে।