সারের জোগানেও এবার কেন্দ্রীয় বঞ্চনা। কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়ায় রাজ্যে সারের জোগানে ঘাটতি দেখা যেতে পারে। ফলে আসন্ন রবি মরশুমে আলু-সহ বিভিন্ন শাকসবজি চাষে বিপাকে পড়তে পারেন কৃষকরা। কেন্দ্রের এই বঞ্চনার পর তাদের উপর ভরসা না করে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সারের সুষম বন্টন এবং বিকল্প সারের ব্যবহারের উপর জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার। একই সঙ্গে সারের কালোবাজারি রুখতেও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

রবি মরশুমে কৃষকদের জন্য সারের জোগান মসৃণ রাখতে মঙ্গলাবার নবান্নে সার আমদানিকারী, বিক্রেতা ও কৃষি সমবায়-সহ বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, কৃষি সচিব ওঙ্কার সিং মিনাও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের শেষে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের পর থেকে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যে আলু চাষে প্রয়োজনীয় ১০:২৬: ২৬ এমপিকে সারের জোগান কমিয়ে অর্ধেক করে দিয়েছে। বারবার এ নিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েও কোন লাভ হয়নি। পঞ্চায়েত মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন, ধান উৎপাদনে দেশের মধ্যে এ রাজ্য প্রথম স্থানে রয়েছে। আলু উৎপাদনে দ্বিতীয় স্থানে। অথচ ওইসব চাষে অপরিহার্য স্যারের জোগান দেওয়ার ক্ষেত্রে এ রাজ্যের গরিব চাষিরাই কেন্দ্রের বৈমাতৃসুলভ আচরণের সম্মুখীন হচ্ছেন। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ, যেটুকু সার বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে, বাস্তবে সেটুকুও দেওয়া হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে যেটুকু সার রাজ্যের হাতে রয়েছে, তার সুষম বন্টনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সরবরাহকারীদের। ডিভিসির বাঁধ থেকে অপর্যাপ্ত জল ছাড়া এবং ঘূর্ণিঝড় দানার কারণে ইতিমধ্যেই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন কৃষকেরা। এখন সারের ঘাটতির কারণে যাতে তাঁদের কোনও সমস্যায় পড়তে না হয় রাজ্য সরকার তা নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি ই-পস মেশিনে বাধ্যতামূলকভাবে বায়োমেট্রিকের মাধ্যমে চাষিদের কাছে সার বিক্রি করার কথা বলা হয়েছে। সার বিক্রির সময় চাষিদের অতিরিক্ত কিছু বিক্রি করা যাবে না বলেও ব্লকের কৃষি আধিকারিকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে তাদের নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরের পক্ষ থেকে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এনপিকে সারের বিকল্প যে সকল সার রয়েছে, বিক্রয়কেন্দ্রগুলিতে তার তালিকা ও দাম বাধ্যতামূলকভাবে লিখে রাখতে হবে। উল্লেখ্য, রাজ্যে বর্তমানে রবি চাষে ৬ লক্ষ ৭২ হাজার হেক্টর কৃষি জমির জন্য পাঁচ লক্ষ এক হাজার মেট্রিক টন এনপিকে সারের প্রয়োজন হয়।
আরও পড়ুন- তৈরির আগেই গুজরাতে ভেঙে পড়ল বুলেট ট্রেনের সেতু! মৃত ২, আটকে থাকার আশঙ্কা বহু মানুষের
