জল জীবন মিশন প্রকল্প: ডিসেম্বরেই সব বাড়িতে পরিশ্রুত পানীয় জল, উদ্যোগ রাজ্যের

বিশুদ্ধ পানীয় জলের সংযোগ পাওয়ার পরেও সরবারাহ শুরু হয়নি এমন সাড়ে পাঁচ লক্ষ বাড়িতে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে জল সরবরাহ নিশ্চিত করতে রাজ্য সরকার নির্দেশ দিয়েছে। কেন এতিদিন ওইসব উপভোক্তারা জল পাননি তা খতিয়ে দেখা হবে। এর পিছনে কোনও অসাধু উদ্দেশ্য থাকলে দোষীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতর সূত্রে জানা গেছে, জল জীবন মিশন প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের ৯৩ লক্ষ বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। অথচ সংযোগ দেওয়া হলেও জল পাচ্ছেন না অনেক উপভোক্তা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করার পর দফতরের তরপে এর কারণ খুঁজতে সমীক্ষা করা হয়।

সেখানে দেখা যায় কয়েক যায়গায় পাইপ থেকে জল চুরি করা হচ্ছে। যার ফলে প্রকৃত উপভোক্তারা জল পাচ্ছেন না। রাজ্যে এমন বাড়ির সংখ্যা সাড়ে ৫ লক্ষ। কিন্তু এই ঘটনার জেরে যারা ‘অনায্য ভাবে জলচুরি’ করছে তাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে পারছে না রাজ্য সরকার। কেননা, কেন্দ্রের জল জীবন মিশন প্রকল্পের টাকায় হওয়া ওইসব জল সরবরাহ প্রকল্পের সমস্যার ক্ষেত্রে রাজ্যগুলির কী করণীয়, তা সুনির্দিষ্টভাবে কেন্দ্র জানায়নি। এই পরিস্থিতিতে ‘জলচুরি’ রুখতে রাজ্য নিজস্ব আইন আনার কথা ভাবছে। নতুন আইন আনার বিষয়টি বিধানসভায় আগেই জানিয়েছিলেন বিভাগীয় মন্ত্রী পুলক রায়। সমস্যাটি এখন আরও বেড়েছে। তাই নতুন আইন আনতেই তৎপর হচ্ছে নবান্ন। সূত্রের খবর সংশ্লিষ্ট আইনের খসড়াও তৈরি হয়ে গিয়েছে।

২০১৯ সালে কেন্দ্র সরকার সারা দেশে জল জীবন মিশন নিলেও এ রাজ্যে তা শুরু হয়েছে ২০২১ সালে। ইতিমধ্যে, টার্গেটের ৫৩.০৯ শতাংশ বাড়িতে জলের সংযোগ পৌঁছে দিয়েছে রাজ্য। বাকি কাজ ২০২৫-এর মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, নতুন সংযোগ দেওয়ার পাশাপাশি, রাজ্য আরও একটি কাজ দ্রুততার সঙ্গে করতে চলেছে, আর তা হল –ড্রাই কানেকশানে’র সংখ্যাটা শূন্যে নামিয়ে আনা। অর্থাৎ, যেসমস্ত জায়গায় কল থাকা সত্ত্বেও মানুষ জল পাচ্ছেন না, সেখানে পর্যাপ্ত পানীয় জলের সরবরাহ সুনিশ্চিত করা। ডিসেম্বরের মধ্যেই তাই এই সাড়ে ৫ লক্ষ বাড়িতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পাঠানোর চ্যালেঞ্জ নিয়েই জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের আধিকারিকেরা মাঠে নামছেন। কেন্দ্র সরকার তড়িঘড়ি জল জীবন মিশনের কাজ শেষ করার তাগাদা দেওয়ায় শুরুর দিকে একটি পাড়ার মুখে যে কল বা স্ট্যান্ড ছিল, সেখান থেকেই এলাকার বাড়ি বাড়ি সংযোগ দেওয়া হয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই বেশ কিছু বাড়িতে পর্যাপ্ত জল যায়নি। তাই ওই সমস্ত এলাকায় জলের পাইপ পরিবর্তন করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন- কলকাতা পুলিশের তৎপরতা, সাইবার প্রতারণার টাকা ফেরৎ পেলেন প্রতারিত