”যে কোনও ধর্মের উপরই হোক না কেন, এমন ঘটনা সমর্থন করি না আমরা”- বাংলাদেশের (Bangladesh) পরিস্থিতি নিয়ে সকালে বিধানসভার অভিবেশনের পরে বিকেলে ঝাড়খণ্ড থেকে ফিরে ফের অবস্থান স্পষ্ট করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বৃস্পতিবার বিকেলে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনে শপথগ্রহণ থেকে ফিরে কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা জানান, “ভারত একটা দেশ, বাংলাদেশ আর একটা দেশ। অন্য দেশ সম্পর্কে কিছু করতে হলে দেশের সরকারই করবে। আমরা দুঃখিত, মর্মাহত। আগেও অনেক মানুষ মারা গিয়েছেন, এখনও অত্যাচারিত হচ্ছেন। আন্দোলনের সময়ও অনেক ছাত্রছাত্রী মারা গিয়েছেন। আজও তার রেশ চলছে।” তবে, তিনি যে ধর্মীয় ভেদাভেদ কোনও ভাবেই মানবেন না, তা স্পষ্ট করেন দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। নাম না করে বিজেপিকেও নিশানা করেন মমতা। কটাক্ষ করেন মোদি সরকারকেও।

বাংলাদেশ নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা কেউ এমন ঘটনাকে সমর্থন করছি না। যে কোনও ধর্মের উপরই হোক না কেন, এমন ঘটনা সমর্থন করি না আমরা। কিন্তু এক্ষেত্রে আমাদের ভূমিকা খুবই সীমিত। আমরা আলাদা দেশ, বাংলাদেশ আলাদা দেশ। ভারত সরকার বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ করতে পারে। আমরা এটুকু বলতে পারি যে, সরকারে যেই থাকুন না কেন, তাঁদের বিদেশনীতিতেই সমর্থন করব। আমাদের বক্তব্য পরিষ্কার, কোনও ধর্ম, বর্ণ, জাতির উপর অত্যাচারকে সমর্থন করি না আমরা। না হিন্দু, না মুসলিম, না শিখ, না খ্রিস্টান। আমরা সবাই এক, এটাই আমাদের নীতি। আমরা প্রত্যেকটি ঘটনার জন্য দুঃখিত। গত এক বছর ধরে চলছে। কিন্তু কেন্দ্রই পদক্ষেপ করতে পারে, সেটল করতে পারে। আমাদের যুক্তও করা হয় না, আমরা জানিও না। তিস্তা চুক্তির সময়ও জানানো হয়নি।”


ওপার বাংলার সঙ্গে এপারের সৌভ্রাতৃত্বের কথা উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “আমরা বাংলাদেশকে (Bangladesh) ভালবাসি। ওরাও নিশ্চয়ই ভারতকে, বাংলাকে ভালবাসে। আমাদের ভাসা, সাহিত্য, পোশাক এক। রাজনৈতিক মতভেদ থাকলেও, ধর্মে ধর্মে বিভেদ চাই না আমরা। চাই না, কারও উপর কোনও রেশ পড়ুক।”

আরও খবর: ওয়াকফ বিলের নামে বুলডোজার চালাচ্ছে কেন্দ্র, বিধানসভায় সরব মুখ্যমন্ত্রী


কেন্দ্রের মোদি সরকারকে নিশানা করেন মমতা বলেন, “কেন্দ্রে যাঁরা আছেন, একটি বিশেষ ধর্মের প্রতি তাঁদের আচরণও প্রতিহিংসামূলক। আমরা মনে করি, কোনওটাই ঠিক নয়। মন্দির, মসজিদ, গুরুদ্বার, গির্জা সব থাকবে। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমরা শান্তি, উন্নয়নের পক্ষে, স্বাধীন ধর্মাচারণের পক্ষে। মানুষ যেন তাঁর ধর্মীয় রীতি পালন করতে পারেন, এটা সরকারের দেখা দরকার।”
