Saturday, May 3, 2025

জয়নগরে নাবালিকাকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত মুস্তাকিন সর্দারকে ফাঁসির সাজা দিল আদালত৷ গতকাল অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত।শুক্রবার ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেন বারুইপুর ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়৷ অভিযুক্তের ফাঁসির সাজা চেয়েই সওয়াল করেছিলেন বিশেষ সরকারি আইনজীবী৷

জয়নগরের ঘটনায় দোষীর ফাঁসির সাজা হতেই এক্স হ্যান্ডলে রাজ্য পুলিশের তরফে একটি পোস্ট করা হয়েছে। লেখা হয়েছে, ‘‘জাস্টিস ফর জয়নগর!’’ এরই পাশাপাশি লেখা হয়েছে, এই রায় নজিরবিহীন। নাবালিকাকে ধর্ষণ-খুনের মামলায় ঘটনার মাত্র ৬২ দিনের মধ্যে অভিযুক্তের ফাঁসির আদেশ এর আগে পশ্চিমবঙ্গে কখনও ঘটেনি। এই মামলার তদন্তে আমাদের একটাই উদ্দেশ্য ছিল, যত দ্রুত সম্ভব নির্যাতিতা এবং তার পরিবারকে ন্যায়বিচার দেওয়া। মেয়েটি আর ফিরবে না। কিন্ত যে অভূতপূর্ব দ্রুততায় তাকে এবং তার পরিবারকে আমরা ‘জাস্টিস’ দিতে পেরেছি, দীর্ঘ দিন বিচারহীন থাকতে হয়নি, এটুকুই আমাদের সান্ত্বনা, আমাদের প্রাপ্তি।

এই ঘটনার তদন্তে শুরু থেকেই তৎপর ছিল পুলিশ৷ ঘটনার ২৬ দিনের মাথায় আদালতে চার্জশিট ঘোষণা করে পুলিশ৷ ৬২ দিনের মাথায় অভিযুক্তে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করল আদালত ৷ সরকারি আইনজীবী জানান, মৃতার শরীরে ৪২ টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। মৃতার জামাকাপড়ে যে রক্ত পাওয়া গিয়েছে তার সঙ্গে অভিযুক্তের ডিএনএ মিলে গিয়েছে।

গত ৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল ওই নাবালিকা। মেয়ে বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন পরিবারের লোকজন। পরে একটি ক্ষেতের আল থেকে উদ্ধার হয় তার ক্ষত বিক্ষত দেহ৷ ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগে ঘটনার দিন রাতেই মুস্তাকিন সর্দারকে গ্রেফতার করে পুলিশ৷ দ্রুত তদন্ত শেষ করে আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়৷

এদিন সরকারি আইনজীবী বলেন, স‍্যার আপনি যদি ভাববেন এই অভিযুক্তকে সুযোগ দেওয়া যায়, সংশোধনের সুযোগ দেওয়া যায়, আমি ভাবছি দেওয়া যায় না। কারণ আজও ওর কোনও অনুতাপ নেই। এটা পরিকল্পনা করে খুন। এটা হঠাৎ করে খুন নয়। সাইকেলে তুলে নির্জন জায়গায় গিয়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ ও পরে খুন করে জলে ফেলে দিল। কোনও অনুতাপ নেই অভিযুক্তর। বলছে প্রেম করতে নিয়ে এসেছিলাম৷ এই নাবালিকা ক্লাস নাইনে পড়ত। ক্লাসে প্রথম হতো। ভারতবর্ষের একজন প্রতিভাবান নাগরিক হতে পারত। মেয়েটি ডাক্তার হতে পারত, উকিল হতে পারত। বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে। ফুলের মতো জীবনকে মেরে ফেলা হল। শেষ করে দেওয়া হল। এটা ক্লোজ ব্লাডেড মার্ডার। এখানে ফাঁসিই সর্বোচ্চ সাজা হতে পারে।

ঘটনার পরে প্রাথমিক ভাবে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশে পকসো ধারা যুক্ত করা হয়। ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে শাস্তির আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরেই ঘটনার তদন্তে সিট গঠন করা হয়। ২৬ দিন পর ৩০ অক্টোবর চার্জশিট পেশ করে তদন্তকারী দল। ৫ নভেম্বর থেকে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। মোট ৩৬ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল ওই মামলায়।

3.
4.
5.
6.
7.
8.
9.
10.

 

 

Related articles

নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ! অভিযুক্তকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিল জলপাইগুড়ি আদালত 

নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনায় এক যুবককে ২০ বছরের কঠোর কারাদণ্ড দিল জলপাইগুড়ির বিশেষ পকসো আদালত। শনিবার এই রায় ঘোষণা...

দিলীপ ঘোষকে কালো পতাকা দেখিয়ে অভ্যাস! দলবদলু বিজেপি নেতাদের তীব্র খোঁচা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির

দিলীপ ঘোষকে কালো পতাকা দেখিয়ে অভ্যাস। দলবদলু বিজেপি নেতারা এখনও সেই অভ্যাস ছাড়তে পারেননি। দিঘার জন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটনে...

মাধ্যমিকের মতো মাদ্রাসাতেও! কন্যাশ্রীরাই সফল ফলাফলে

একটা সময় নারী শিক্ষায় রাজ্যের অবস্থান ছিল তলানিতে। আজও দেশের, বিশেষত উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে নারী শিক্ষার হার লজ্জাজনক।...

ফের অগ্নিকাণ্ড শহরে! এবার কেষ্টপুরের স্কুলে আগুন 

কলকাতায় একের পর এক আগুন লাগার ঘটনা আতঙ্কে ফেলেছে শহরবাসীকে। বড়বাজারের মেছুয়া এলাকার আগুন লাগার কয়েকদিনের মধ্যেই আবার...
Exit mobile version