Friday, November 7, 2025

রেলস্টেশন একটাই, বিভক্ত দুই রাজ্যে! বিরল এই ছবি রয়েছে আমাদের দেশেই

Date:

রেলস্টেশন একটাই, কিন্তু বিভক্ত দু’টি রাজ্যে! বিরল এই ছবি রয়েছে ভারতের রেল মানচিত্রেই। এই স্টেশনটির এক প্রান্তে এক রাজ্য, বিপরীত প্রান্ত রয়েছে অন্য রাজ্য। একটি রেলস্টেশন (Railway Station) এক সূত্রে গেঁথেছে দুই রাজ্যকে। দুই রাজ্যের সেতুবন্ধন করেছে স্টেশনটি। ভারতের পশ্চিম রেলে অবস্থিত বিরল এই স্টেশন। মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) নন্দুরবার আর গুজরাটের (Gujarat) তাপি জেলাকে মিলিয়ে দিয়েছে স্টেশনটি।

নবপুর (Nabapur) রেলস্টেশন। গুজরাট ও মহারাষ্ট্রের একেবারে সীমান্তে অবস্থিত। একসঙ্গে রেলস্টেশনটি স্পর্শ করেছে দুই রাজ্যকে। এমন বিরল রেলওয়ে স্টেশন সারা দেশে একটাই রয়েছে। কিন্তু কেন এমন হল? কী করেই বা সম্ভব হল এক রেল স্টেশনের দুই রাজ্যের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরি করা। আসলে এর মধ্যে রয়েছে রাজ্যভাগের গল্প। যখন স্টেশনটি নির্মিত হয়েছিল, তখন মহারাষ্ট্র (Maharashtra) ও গুজরাত (Gujarat) ছিল একটি রাজ্য। পরে তা ভাগ হয়ে যায়।

১৯৬১ সালের মে মাসের আগে পর্যন্ত ছিল একটাই রাজ্য মুম্বই প্রদেশ। ওই বছরের ১ মে মুম্বই প্রদেশকে ভেঙে দুটি রাজ্য করা হয়। মুম্বই ভেঙে হয় মহারাষ্ট্র আর গুজরাট। এই বিভাজন রেখা নবপুর স্টেশনকে আধাআধি ভাগ করে দেয়। তখন থেকেই আলাদা পরিচয় তৈরি হয় এই রেলস্টেশনের। দুই রাজ্যের সীমানা এমন একটি অংশ দিয়ে গিয়েছে যে, এই রেলস্টেশনে একটি বেঞ্চও দু-ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে। একটি বেঞ্চের অর্ধেক মহারাষ্ট্রে এবং বাকি অর্ধেক গুজরাতে। এবং ওই বেঞ্চটি আজও সেই রাজ্যভাগের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। পর্যটকদের কাছে তা আকর্ষণীয়। সেই কারণে সংরক্ষিত করে রাখা হয়েছে আসনটি। সরানো হয়নি নির্দিষ্ট জায়গা থেকে।

ওই সংরক্ষিত বেঞ্চে বসে যাত্রী ও পর্যটকরা দুই রাজ্যকে একসঙ্গে ছোঁয়ার সাধপূরণ করেন। এক বেঞ্চে, কিন্তু কেউ বসে থাকেন মহারাষ্ট্রে, আর কেউ গুজরাটে। এই বেঞ্চকে কেন্দ্র করে রেলস্টেশনে তৈরি করা হয়েছে একটি সেলফি পয়েন্ট। এই বেঞ্চে বসে দূর-দূরান্ত থেকে আসা পর্যটক বা যাত্রীরা ছবি তোলেন, এই বিরল ঘটনার সাক্ষী থাকতে। এখানেই শেষ নয় বিস্ময়ের। আরও বিস্ময় রয়েছে রেলস্টেশনটিকে ঘিরে। এই স্টেশনের টিকিট উইন্ডোটি মহারাষ্ট্রে পড়ে। আর স্টেশন মাস্টার বসেন গুজরাতে। শুধু তাই নয়, এই স্টেশনে চারটি ভিন্ন ভাষায় ঘোষণা হয়ে থাকে। হিন্দি (Hindi), ইংরেজির (English) সঙ্গে গুজরাতি (Gujarati) ও মারাঠি (Marathi) ভাষাতেও ট্রেনের ঘোষণা হয়। যাবতীয় তথ্যও লেখা থাকে চারটি ভাষায়। মহারাষ্ট্র ও গুজরাত উভয় রাজ্য থেকে আসা যাত্রীদের সুবিধার্থে এই পদ্ধতিতে তথ্য সরবরাহ করা হয়ে থাকে। মোটকথা পরতে পরতে বিস্ময় লুকিয়ে রয়েছে মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের এই বিরল রেলস্টেশনকে কেন্দ্র করে।

উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্র ও গুজরাট— এই দুই রাজ্যের মধ্যে অবস্থিত নবপুর রেলস্টেশনের মোট দৈর্ঘ্য ৮০০ মিটার। তার মধ্যে ৩০০ মিটার মহারাষ্ট্রে অবস্থিত। বাকি ৫০০ মিটার গুজরাটে। স্টেশনে রয়েছে মোট তিনটি প্ল্যাটফর্ম। চারটি রেলপথ দিয়ে ছুটে চলে ট্রেন।

Related articles

আইএসএল নিয়ে প্রবল অনিশ্চয়তা, অনুশীলনই বন্ধ রাখল মোহনবাগান

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে মোহনবাগানের(Mohun Bagan) সিনিয়র দলের অনুশীলন। খবর অনুযায়ী, আইএসএল নিয়ে প্রবল অনিশ্চয়তা। টেন্ডার সংক্রান্ত বিষয়...

জন্মদিনে মানুষের ভালবাসা মনে করিয়ে দেয় কর্তব্য: ভিড়ে মিশে গেলেন অভিষেক

সকাল হওয়ার অপেক্ষা নয়। রাত ১২টা বাজার অপেক্ষায় ছিল বাংলার বিপুল জনতা। জননেতা, তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক...

ফলপ্রকাশ SSC একাদশ-দ্বাদশের: ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ বাস্তবায়নের পদক্ষেপ, দাবি ব্রাত্যর

বাংলায় কর্মসংস্থানে সদা সচেষ্ট প্রশাসন ও প্রশাসনের সব দফতর। ফের একবার তার প্রমাণ মিলল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই এসএসসি-র...

দুর্নীতির অভিযোগ তোলা চিকিৎসকই দুর্নীতিতে অভিযুক্ত! সাসপেন্ড আখতার আলি

আরজিকরের চিকিৎসক তরণীর ধর্ষণ খুনের ঘটনার মধ্যেই আর্থিক দুর্নীতি ঘিরে শোরগোল শুরু হয় আর জি কর হাসপাতালে। গ্রেফতার...
Exit mobile version