আর জি করে মৃত ডাক্তার-পড়ুয়ার পরিবারের হয়ে মামলা লড়তে গিয়ে সরে দাঁড়াচ্ছেন একের পর আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি শুরুর প্রথমদিকেই মামলা ছাড়েন বাম নেতা তথা বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাটার্য (Bikashranjan Bhattacherya)। এবার বিকাশের পরে মামলা হাতে নেওয়া দাপুটে আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার ছাড়লেন আর জি কর মামলা। মঙ্গলবার, সুপ্রিম কোর্টে নতুন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার (Sanjiv Khanna) বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। পরবর্তী মামলার তারিখ দিয়েছে মার্চে। এর মধ্য়েই অযাচিত হস্তক্ষেপ এবং পারিপার্শ্বিক তৈরি হওয়া পরিস্থিতির কারণ দেখিয়ে মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন অভয়ার পরিবারের আইনজীবী বৃন্দা।

–

প্রথমে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) মৃতার পরিবারের তরফে সওয়াল করছিলেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। সেপ্টেম্বর মাসে আইনজীবী বদল হয়ে অভয়ার পরিবারের তরফে দাঁড়ান বৃন্দা গ্রোভার (Vrinda Grover)। বিনা পারিশ্রমিকেই তিনি মামলা লড়তে রাজি হন। সুপ্রিম কোর্টেই শুধু নয়, যেখান মূল ধর্ষণ-খুনের মামলা চলছে সেই শিয়ালদহ কোর্টেও উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং বৃন্দা। তাঁর টিমের আইনজীবীরাও শিয়ালদহ আদালতে শুনানির দিনগুলিতে ছিলেন।

আরও খবর: গলফ গ্রিনের আবর্জনার স্তূপে মিলল মহিলার কাটা মুন্ডু, চাঞ্চল্য তুঙ্গে


–


তাহলে হঠাৎ কেন এই সিদ্ধান্ত? বৃন্দার তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, তথ্য, আইন এবং পেশাদারি নৈতিকতা মেনেই মামলা লড়ছিলেন। এখনও পর্যন্ত ৪৩ জনের বয়ান নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তের জামিনের জোরালো বিরোধিতা করা হয়েছে। এখনও সে জামিন পায়নি কেউ। একজন আইনজীবী হিসাবে তিনি তাঁর পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই সঙ্গে আরও বলা হয়েছে, এই পর্যায়ে, হস্তক্ষেপের কারণে, বৃন্দা গ্রোভার মামলা থেকে সরে আসছেন। অযাচিত হস্তক্ষেপ এবং পারিপার্শ্বিক তৈরি হওয়া পরিস্থিতির কারণে সরে যাচ্ছেন তিনি। আর বিবৃতি নিয়েই জল্পনা তৈরি হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে কে বা কারা তাঁর আইন লড়াইয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ করছিলেন? পারিপার্শ্বিক চাপ বলতেই বা কী বোঝাতে চেয়েছেন বৃন্দা? তাঁরা আইনের মধ্যে থেকেই লড়াই করেছেন- একথাই বা কেন বলা হল! তাহলে কি আইনের বাইরে গিয়ে রাজনীতি করতে চাপ দেওয়া হচ্ছিল?

–

সূত্রের খবর, বৃন্দাকে (Vrinda Grover) ব্রিফ দেওয়ার সময় বলা হয়েছিল, মামলার মধ্যে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র রয়েছে। কিন্তু শিয়ালদহ আদালতে শুনানিতে উপস্থিত হয়ে ও মামলার নথি, তথ্য-প্রমাণ দেখে বর্ষীয়ান আইনজীবী ক্রমশ বুঝতে পারছিলেন ঘটনার সঙ্গে তাঁকে বলা কেস ব্রিফিং-এ বিস্তর ফারাক রয়েছে। মামলার নথি অনুযায়ী এগোনোর বদলে রাজনীতি করে বাজার গরম করতে চাননি বলেই বৃন্দা নীরবে নিজেকে সরিয়ে নিলেন! এমনটাই মত আইনজ্ঞ মহলের।

–

একই সঙ্গে রাজনৈতিক চাপের জল্পনাও উঠছে। বিকাশ ভট্টাচার্য মামলা ছাড়ার সময় বলেছিলেন, আমাদের লোকই মামলা লড়বে। তাহলে কী প্রভাব খাটিয়ে বৃন্দাকে দলে টানতে চেষ্টা করে বামেরা। তাতে রাজি না হওয়াতেই তাঁকে দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এই জটিলতা এড়াতেই মামলা ছাড়েন বর্ষীয়ান আইনজীবী। মৃতার পরিবারের হয়ে আপাতত লড়বেন আইনজীবী রাজদীপ হালদার, আইনজীবী অমর্ত্য দে ও আইনজীবী তড়িৎ ওঝা।

–

–
–
–
–
–
–