নদীবেষ্টিত সুন্দরবনে গঙ্গাসাগর মেলার (Gangasagar Mela 2025) সবথেকে বড় প্রতিকূলতা নদীপথ। দীর্ঘদিন ধরে মুড়িগঙ্গা নদীকে ড্রেজিং (dredging) করে গঙ্গাসাগর যাত্রা সহজ করেছে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রের কোনও রকম সাহায্য ছাড়াই কুম্ভমেলার মতো আকারে ও পুণ্যার্থীর ভিড়ের নিরিখে বৃহৎ মেলা আয়োজন রাজ্য সরকার কীভাবে করে তার বর্ণনা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee) আগেও দিয়েছেন। মঙ্গলবার গঙ্গাসাগরে বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে তিনি তুলে ধরলেন গঙ্গাসাগর মেলাকে বিশ্বমানের মেলা হিসাবে তুলে ধরার জন্য কী কী পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে রাজ্য সরকার।

এবছর গঙ্গাসাগর মেলার পুণ্যস্নান ১৪ জানুয়ারি ভোর ৬.৫৮ মিনিটে। মেলা আয়োজন করা হয়েছে ৮ জানুয়ারি বুধবার থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত, মঙ্গলবার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। মেলা শুরুর আগেই ১৫৩ কোটি টাকায় মোটি ৩০টি প্রকল্পের উদ্বোধন (inauguration) করেন তিনি। সেই সঙ্গে ১৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে শিলান্যাস (foundation stone laying) করা হয় ১৯টি প্রকল্পের। এর একটা বড় অংশ গঙ্গাসাগর মেলাকে লক্ষ্য রেখে। ইতিমধ্যেই মুড়িগঙ্গায় ড্রেজিং (dredging) করে গঙ্গাসাগর পৌঁছানোর পথ সহজ করেছে রাজ্য সরকার। এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, মুড়িগঙ্গায় যেভাবে ড্রেজিং করা হয়েছে তাতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২০ ঘণ্টা ভেসেল (vessel) পারাপার করা সম্ভব হবে।
সাগরে মেলায় পর্যটক থেকে পুণ্যার্থীদের সুবিধার জন্য বিদ্যুতের ব্যবস্থাও করেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী জানান, সাগরে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবার (electricity) জন্য মুড়িগঙ্গার উপর দিয়ে বিদ্যুতের লাইন টেনে পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা উদ্বোধন করা হয়। এছাড়াও মুড়িগঙ্গার উপর গঙ্গাসাগর সেতু নিয়েও বিস্তারিত জানান তিনি। তিনি বলেন, সেতুর কাজ শেষ করতে চার বছর সময় লাগবে এবং সরকারিভাবে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা খরচ হবে। মমতার কথায়, এই সেতু ৫ কিমি লম্বা এবং চার লেনের। এই সেতুর নামই হবে গঙ্গাসাগর সেতু (Gangasagar Setu)।

গঙ্গাসাগরের পাশাপাশি সুন্দরবন এলাকার উন্নয়নেও প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ মনি নদী (Mani river), সুন্দরিকা-দ্বারিকা নদী ও পিয়ালী নদীর (Piyali river) উপর তিনটি সেতুর উদ্বোধন। এছাড়াও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণায় যাতায়াতের সুবিধার জন্য গুরুত্বপূর্ণ চালতাদুনিয়া থেকে পাখিরালয়ের মধ্যে চারটি ভেসেল পরিষেবা (vessel service) উদ্বোধন হল মঙ্গলবার। বিভিন্ন এলাকায় উদ্বোধন হয় একাধিক জেটি, যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ চালতাদুনিয়ার তিনটি ও পাখিরালয়ে তিনটি ফেরিঘাটের উদ্বোধন। পাথরপ্রতিমা, গোসাবা ও নামখানা মিলিয়ে ১২টি জেটিঘাটের (jetty) উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। গঙ্গাসাগরে তিনটি স্থায়ী হেলিপ্যাড, গঙ্গাসাগর থানা, হারউড পয়েন্টে কোস্টাল থানা উদ্বোধনের ঘোষণাও করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে সাগরব্লকে মোট ১৭টি অঙ্গনওয়াড়ি থেকে একাধিক রাস্তার উদ্বোধন হয় মঙ্গলবার।

–

–

–

–

–

–
