ফের দুয়ারে বাঘ! নজরে মৈপীঠ থেকে বরাবাজার, সতর্ক বনদফতর

ফের দুয়ারে বাঘ। এবার সুন্দরবনের মৈপীঠ ও পুরুলিয়া-ঝাড়খণ্ড সীমান্তে। দু-দিকেই তৎপরতা তুঙ্গে। সতর্ক বনদফতর। সতর্ক গ্রামবাসীরা। তবে এখনও পর্যন্ত মৈপীঠের বাঘের দাপাদাপি যথেষ্ট বেশি। পুরুলিয়ার কাছের বাঘটিকে বাড়তি নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। কারণ তার রেডিও কলার নেই।

মঙ্গলবার থেকে বাঘ তাড়াতে হিমশিম খাচ্ছে বনদফতরের কর্মীরা সুন্দরবনে কুলতলির মৈপীঠে বৈকুণ্ঠপুরের জঙ্গলে। বাঘটিকে তার নিজের ডেরায় ফেরানোর জন্য বনকর্মীদের সহযোগিতায় পটকা ফাটিয়ে আওয়াজ করে তাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। মৈপীঠের কিশোরীমোহনপুর সংলগ্ন দক্ষিণ বৈকুণ্ঠপুর এলাকায় মঙ্গলবার সকালে বাঘের উপস্থিতি টের পেয়েছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। সেইমতো বনদফতর এসে ঐ জায়গায় জাল দিয়ে ঘিরে দেয়। ফের আজ সকালে জালের কাছে বাঘের পায়ের ছাপ পেয়েছে বনদফতর। আরও খানিকটা পূর্বদিকে এগিয়ে উত্তর বৈকুণ্ঠপুর সংলগ্ন জঙ্গলে বর্তমানে অবস্থান বাঘের। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বনদফতরও। ফের নতুন করে ১ কিলোমিটার জঙ্গল ঘেরার কাজ চলছে। তিনদিক ঘিরে নদী পেরিয়ে গভীর জঙ্গলের দিক খোলা রাখা হচ্ছে। বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে প্রাথমিকভাবে বাঘটিকে তাড়িয়ে গভীর জঙ্গলে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। আজ সকালেই ঘটনাস্থলে এসেছেন অতিরিক্ত ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার অনুরাগ চৌধুরী। তিনি পুরো কাজের তদারকি করছেন। ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার। তিনি আসার পর পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করা হবে বলে জানা গিয়েছে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাশাপাশি নতুন করে বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়েছে বান্দোয়ান, বরাবাজারে। তবে এবার বাঘিনি নয়, বাঘ! ঝাড়খণ্ড বনদফতর জানিয়েছে পালামৌর জঙ্গল থেকে বেরিয়ে একটি বাঘ এখন চলে এসেছে দলমা পাহাড়ে। যেখান থেকে পুরুলিয়ার সীমানা মাত্র কুড়ি কিলোমিটার দূরে। তাই সীমানা এলাকায় বসানো হয়েছে ট্র্যাপ ক্যামেরা। নজর রাখছেন বনকর্মীরাও। এই বাঘটির গলায় রেডিও কলার নেই। তার অবস্থান বুঝতে পায়ের ছাপ ভরসা বনদফতরের।

ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুর বনবিভাগের এক কর্তা জানিয়েছেন পালামৌ থেকে আগত বাঘটি টানা চারদিন ছিল চান্ডিলের কাছে বালিডি জঙ্গলে। সেটিও দলমা পাহাড়ের অংশ। সেখানে বেশ কয়েকটি গবাদি পশু মেরেছিল সে। সোমবার রাতে বালিডির জঙ্গল থেকে সেটি গভীর জঙ্গলের পথ ধরে ঢুকেছে দলমায়। মঙ্গলবার এলাকার অন্তত সাতটি গ্রামের পাশের জঙ্গলে তার পায়ের ছাপ মিলেছে। তবে সেখানে কোনও প্রাণিহত্যা করেনি সে। যে এলাকায় বাঘটি রয়েছে, সেখান থেকে পুরুলিয়ার বান্দোয়ান সীমানা বারো-তেরো কিলোমিটার। আবার পশ্চিম মেদিনীপুর সীমানাও কুড়ি কিলোমিটারের মধ্যে। ফলে স্বভাবতই সতর্ক রয়েছে বাংলার বনদফতর।

অন্যদিকে, লোকালয় সংলগ্ন এলাকায় বাঘ চলে আসায় আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা। জঙ্গলের পাশেই তাঁদের বসবাস। রুজি-রুটির জন্য তাঁদের জঙ্গলেও যেতে হয়। সেই ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে প্রশাসন। এলাকার বাসিন্দা লোকালয় সংলগ্ন জঙ্গল নেট দিয়ে ঘিরে ফেলার দাবি জানাচ্ছেন। এছাড়া রাস্তায় যাতে আলো লাগানো হয় তারও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। ঘটনাস্থলে রয়েছে মৈপীঠ থানার পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকার বাসিন্দাদের সচেতন করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন- একদিনেই ২২ হাজার, অভিষেকের সেবাশ্রয় ছুঁল ৮০ হাজারের মাইলস্টোন

_

_

_

_

_

_