ভুয়ো ডিগ্রি ব্যবহারের অভিযোগ। আর জি করের জুনিয়ার চিকিৎসক আসফাকুল্লা নাইয়ার (Asfakullah Naiya) বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ (Police)। এই বিষয়ে অতিসক্রিয়তা নিয়ে পুলিশকে ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাই কোর্ট। আসফাকুল্লা আবেদনের ভিত্তিতে মঙ্গলবার, এই মামলার শুনানিতে একাধিক প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ (Tirthankar Ghosh)। বুধবার, শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবীকে কেস ডায়েরি নিয়ে আসার নির্দেশ দেন বিচারপতি।

আর জি কর আন্দোলনে হোতা WBJDF-এর আসফাকুল্লা নাইয়া (Asfakullah Naiya) MS- না হয়েও নামের পাশে ভুয়ো ডিগ্রি লেখেন বলে অভিযোগ। পরীক্ষায় পাশ না করেই নামের পাশে ডিগ্রি বসিয়ে প্রাইভেট প্র্যাক্টিস শুরু করেন তিনি। পোস্ট গ্র্যাkজুয়েটের প্রথম বর্ষের ছাত্র হয়েই নামের পাশে এমএস লিখতে শুরু করেন। কোন আইনে এটা করলেন? প্রশ্ন তুলে মুখ্যসচিবকে চিঠি দেন WBJDA-র শ্রীশ চক্রবর্তী। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে নাইয়াকে চিঠি পাঠান ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার মানস চক্রবর্তী। যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও কেন নামের পাশে ইএনটি সার্জন লিখেছেন- প্রশ্ন তুলে ৭দিনের মধ্যে নাইয়াকে দেখা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর পরেই বৃহস্পতিবার আসফাকুল্লা নাইয়ার (Asfakullah Naiya) বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ (Police)। তাঁর গ্রামের কাকদ্বীপ থানার রামতনু নগর তদন্তে যায় বিধাননগর থানার পুলিশ। বেশ কিছু নথিও সংগ্রহ করে নিয়ে যায় তারা। পরিবারের অভিযোগ হঠাৎ করেই তাদের বাড়িতে বিধাননগর থানার পুলিশ আসে। আগে থেকে কোনও নোটিশ দেওয়া হয়নি। হাজিরা দেওয়ার জন্য নাইয়াকে তলবও করে পুলিশ। তার বিরোধিতা করে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি।

এদিন সেই মামলার শুনানিতে আসফাকুল্লার আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “যিনি অভিযোগ করেছেন তাঁর সঙ্গে তাঁর মক্কেলের কোনও সম্পর্ক নেই। ডাক্তার নাইয়ার বিরুদ্ধে কেউ ভুল চিকিৎসার অভিযোগও দায়ের করেনি। তাহলে তদন্ত হচ্ছে কীসের ভিত্তিতে?“ এর পর বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, “প্রেসক্রিপশন কোথায়? সেখানে কি ডাক্তারবাবু এমন কোনও যোগ্যতার উল্লেখ করেছেন যা তার নেই?“ এর পরেই বিচারপতি ঘোষ উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, “কত জায়গায় তো ভুয়ো চিকিৎসার কত অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করে না। এক্ষেত্রে পুলিশ এত তৎপর কেন? কেন পর্যাপ্ত নথি না জোগাড় করে ও প্রাথমিক তদন্ত না করে FIR রুজু করেছে পুলিশ।“ বুধবার সকালে এই মামলার কেস ডায়েরিসহ সরকারি আইনজীবীকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।

এই বিষয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, বিচারপতির মন্তব্য নিয়ে তিনি কিছু বলবেন না। তবে, অভিযোগ বিজ্ঞাপনে ফলাও করে যে ডিগ্রি দেওয়া হয়েছে, সেটা আসফাকুল্লার নেই। এখন আইনা অনুযায়ী তদন্ত চলবে। এর পরেই নাম না করে কুণাল বলেন, বিচারপতিদের কাজেও তাঁরা হতাশ। কারণ অনেক সময় বিচারপতিরা কাজ ছেড়ে বিজেপির টিকিটে নির্বাচনে লড়েন। সুতরাং, অন্তর থেকে কে সরকারের বিরোধী তা বলা যায় না। আর জি করের প্রতিবাদের কারণে প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপের অভিযোগ উড়িয়ে কুণাল বলেন, রাতজাগায় ছিলেন বলে কেউ অন্যায় করলে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না, সেটা তো হতে পারে না।

–

–

–

–

–

–
