ফের বিরোধীদের কণ্ঠরোধ! ওয়াকফ JPC নিয়ে মোদি সরকারকে তোপ তৃণমূলের

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নাদিমুল হক। এই বিলের মাধ্যমে ওয়াকফ বোর্ডের (WAQF Board) হাতে থাকা সম্পত্তি গুলি দখল করতে চায় মোদি সরকার

আরও একবার সংসদীয় গণতন্ত্রকে ভেঙে চুরমার করে বিরোধীদের কন্ঠরোধ করলো মোদি সরকার। বুধবার গায়ের জোরে যৌথ সংসদীয় কমিটি বা জেপিসিতে পাস করানো হলো ওয়াকফ সংশোধনী বিল (Waqf amendment)। গত সোমবার ১৪টি সংশোধনী-সহ ওয়াকফ বিলকে যৌথ সংসদীয় কমিটিতে (Joint parliamentary committee) পাশ করার প্রস্তাব গৃহীত হয়। সেই সংশোধনীগুলি নিয়ে বুধবার ভোটাভুটি হয়। সেখানে ১৫টি ভোট পড়েছে সংশোধিত বিলের পক্ষে। বিলের বিপক্ষে পড়েছে ১১টি ভোট।

এই বিলকে অসাংবিধানিক (unparliamentary) আখ্যা দিয়েছেন বিরোধী সাংসদরা। বিলের বিরুদ্ধে ৩৫ পাতার ডিসেন্ট নোট দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের দুই সাংসদ, জেপিসি (JPC) সদস্য কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নাদিমুল হক। তাদের দাবি, জেপিসি গঠন করার উদ্যোগ ছিল পুরোপুরি লোকদেখানো। সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করে যেভাবে এই বিলকে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে, তা দেশের গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোর পরিপন্থী। এই বিলের মাধ্যমে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। জেপিসির সামনে সংখ্যালঘু সংগঠনের প্রতিনিধিরা যে বক্তব্য রেখেছেন, তার পর্যালোচনা করা হয়নি, এমনকি বিরোধী সাংসদদের হাতে এর প্রতিলিপিও তুলে দেওয়া হয় নি, সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দুই তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নাদিমুল হক। এই বিলের মাধ্যমে ওয়াকফ বোর্ডের (WAQF Board) হাতে থাকা সম্পত্তি গুলি দখল করতে চায় মোদি সরকার, একইসঙ্গে সরকারের মনোনীত ব্যক্তিদের ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য (WAQF member) করতে চায় সরকার, অভিযোগ করেছে বিরোধী শিবির।

এই প্রসঙ্গেই বুধবার তৃণমূল সাংসদ নাদিমুল হক বলেন, এমনিতেই মোদি সরকারের কার্যকালে ১০টি বিলের মধ্যে মাত্র ২টি বিল পর্যালোচনা করা হয়। বিশ্লেষণের হার তলানিতে ঠেকছে ক্রমেই। সেই জায়গায় যেভাবে গায়ের জোরে ওয়াকফ সংশোধনী বিলকে (WAQF amendment bill) জেপিসি অনুমোদন দিলো, তা পুরোপুরি অসাংবিধানিক পদক্ষেপ। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করছি। আসন্ন বাজেট অধিবেশনে (budget session) এই বিল পেশ করা হবে সংসদে, দাবি জানানো হয়েছে সংসদীয় সূত্রে।

উল্লেখ্য, যৌথ সংসদীয় কমিটি (JPC) গঠনের পর ওয়াকফ সংশোধনী বিল পর্যালোচনার জন্য মোট ৩৮টি বৈঠক হয়েছে। গত শুক্র এবং শনিবার ছিল শেষ দফার বৈঠক। সেখানে শাসক-বিরোধী তরজা তুঙ্গে ওঠে। শেষ পর্যন্ত কমিটির তরফে জানানো হয়, শাসক পক্ষ থেকে ২৩টি সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছিল। এর মধ্যে ১৪টি গৃহীত হয়েছে। কিন্তু বিরোধীদের আনা ৪৪টি সংশোধনীর প্রত্যেকটিই খারিজ হয়েছে। বিরোধীরা যা প্রস্তাব করেছেন তার পক্ষে মাত্র ১০টি করে ভোট পড়েছে।