বাংলার শিল্প ক্ষেত্রে বদনাম ঘোঁচানোর স্পষ্ট ছবি উঠে এসেছে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের (BGBS) মঞ্চ থেকে। বিনিয়োগ থেকে নতুন বাংলা গঠনের যে ছবি বাস্তবায়নের পথ বিজিবিএস-এর মঞ্চ থেকে পেয়েছে তা তাক লাগিয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। একমাত্র রাজ্য হিসাবে বাংলাই প্রতিবেশী রাজ্য, এমনকি প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে যৌথ বাণিজ্য ও উন্নয়নের পথে হাঁটার পথ প্রথমবার খুলে দিয়েছে দুদিনের সম্মেলন থেকে। এই সাফল্যকে স্বপ্ন পূরণ বলে অভিব্যক্তি ব্যক্ত করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।

বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুদিনের বিজিবিএস (BGBS) দেখেছে জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিশ্বনেত্রী হিসাবে। আর তা সম্ভব হয়েছে দীর্ঘদিন লক্ষ্যে অবিচল থাকার ফলেই। সেই কথা জানিয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে লেখেন, ২০১১ সালে যখন এই অফিসের দায়িত্ব নিয়েছিলাম, একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীজ্ঞা নিয়েছিলাম যে আমার এখানে থাকার প্রতিটি পদক্ষেপ বাংলাকে ভবিষ্যতের জন্য সমৃদ্ধশালী করে তুলব। আমার লক্ষ্য স্পষ্ট লক্ষ্য: একটি এমন বাংলা তৈরি করা যেখানে প্রত্যেক বাঙালি গর্বের সঙ্গে বলতে পারবে, “বাংলা আজ যা ভাবে, ভারত তা কাল ভাবে” (What Bengal thinks today, India thinks tomorrow)।

কতটা সফল বিজিবিএস ২০২৫, তা তুলে ধরতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, গতকাল, বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে নীতিনির্ধারক (policymakers), কর্পোরেট নেতৃত্ব (corporate leaders), শিল্পপতি, বিশ্বমানের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ দ্বারা পরিবৃত ছিলাম, তখন নিজের চোখের সামনে স্বপ্নকে বাস্তবায়িত হতে দেখছিলাম। বাংলার ১.৭২ কোটি মানুষকে দারিদ্র থেকে উন্নিত করা সম্ভব হয়েছে, এবং বাংলা উঠে এসেছে সমৃদ্ধি ও সুযোগ তৈরির এক শক্তিক্ষেত্র হিসাবে। আমি গর্বের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, এবছরের বিজিবিএস-এ (BGBS) ২১২টি মউ (MoU) ও লেটার্স টু ইনটেন্ড (Letters to Intent) স্বাক্ষরিত হয়েছে, সেই সঙ্গে ৪ লক্ষ ৪০ হাজার ৫৯৫ কোটি লগ্নির প্রস্তাব এসেছে।

এই বাণিজ্যিক যাত্রা যে কোনওভাবেই থমকে থাকবে না তার আভাস দুদিনের সম্মেলনের মঞ্চ থেকে তুলে ধরেছিলেন শিল্পপতিরা। সেই কারণগুলি ব্যাখ্যা করে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, গতকাল, বীরভূমের দেউচা পাঁচামি থেকে কয়লা উৎপাদন শুরু হয়েছে, যা শিল্পের ভবিষ্যৎকে বিপুল জ্বালানির যোগানের পথ করে দেবে। পাশাপাশি, অশোকনগর থেকে তেল উৎপাদন বাংলাকে ভারতের পেট্রোলিয়াম মানচিত্রে জোরের সঙ্গে প্রতিষ্ঠা দেবে। ‘বিশ্ব বাংলা’ তৈরির স্বপ্ন, এমন এক বাংলা যা উদাহরণ হবে, এমন এক বাংলা যা ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত, এমন বাংলা যা বিশ্বের দরবারে বার্তা দেবে, তা আমাদের চোখের সামনে খুলে গিয়েছে। দ্রুততার সঙ্গে যে কল্পনা আমি করেছি তা ফল প্রদান করতে শুরু করেছে, এবং বিশ্ব মানচিত্রে বাংলা নেতৃত্ব, উদ্ভাবন ও অংশীদারের স্থান দখল করে নিয়েছে।
–

–

–

–

–

–

–
