লক্ষ লক্ষ দেশবাসীকে প্রচারের মাধ্যমে, মহাকুম্ভে (Mahakumbh) আহ্বান জানিয়ে তাঁদের বিপদের মধ্যে ফেলেছে যোগী সরকার। উত্তরপ্রদেশ (Uttarpradesh) ও কেন্দ্রের সরকারের ‘যৌথ’ উদ্যোগে অব্যবস্থার মহাকুম্ভে স্বজনহারা মানুষের পরিজনদের মৃত্যুকে পর্যন্ত স্বীকার করেনি যোগী সরকার। নিখোঁজ মানুষদের নিয়েও কোনও চিন্তাভাবনা প্রচারসর্বস্ব যোগী সরকারের পদক্ষেপে নেই। এবার মহাকুম্ভে পদপিষ্টের (stampede) ঘটনার দায় নিয়ে যোগী আদিত্যনাথের পদত্যাগ দাবি করলেন দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের সদস্যরা।

যে মহাকুম্ভের আয়োজনে কেন্দ্রের সরকারও ঢালাও টাকার যোগান দিয়েছে, সেখানে সাধারণ পুণ্যার্থীদের কোনও নিরাপত্তা দিতে পারেনি যোগী সরকার। এমনকি এরাজ্যের মৃত পুণ্যার্থীদের মৃত্যুর শংসাপত্র (death certificate) দিতে পর্যন্ত অস্বীকার করেছে তারা। যা নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Mamata Banerjee)। এবার মহাকুম্ভে (Mahakumbh) স্বজন হারানো পুণ্যার্থীদের পাশে বসিয়ে সরব হল দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ।

কলকাতা প্রেস ক্লাবে একটি সাংবাদিক বৈঠকে যাদবপুরের বাসিন্দা অভিষেক রায় বর্ণনা করেন কীভাবে অব্যবস্থার মধ্যে ছয়ঘণ্টার বেশি সময় দিশাহীনভাবে ঘুরেছেন পুণ্য অর্জন করার আশায়। ভিড় ও অব্যবস্থায় চরম জলকষ্টের উল্লেখ করেন তিনি। তবে তার থেকেও মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন সুরজিৎ পোদ্দার। পরিবারের তিন মহিলাকে নিয়ে ভিড়ের মধ্যে চোখের সামনে মা-কে পদপিষ্ট (stampede) হতে দেখেছেন তিনি। দেড় ঘণ্টা কোনও প্রশাসনিক (administrative) সাহায্য পাননি মাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে। শেষে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও সেখানে বিনা ময়নাতদন্তে কোনও কাগজ ছাড়া মায়ের মৃতদেহ রাজ্যে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছেন। সেদিনের মর্মান্তিক পরিস্থিতির বর্ণনা করতে গিয়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি তিনি।

দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের পক্ষ থেকে সাংবাদিক রন্তিদেব সেনগুপ্ত দাবি করেন, এই ঘটনার দায় স্বীকার করে যোগী আদিত্যনাথকে পদত্যাগ (resignation) করতে হবে। সেই সঙ্গে বাংলার ও অন্যান্য রাজ্যের পুণ্যার্থী ও তাঁদের পরিবারের জন্য তাঁরা আরও দাবি করেন, যারা কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে মারা গেলেন এবং তাঁদের মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়া হয়নি,অবিলম্বে উত্তরপ্রদেশ (Uttarpradesh) সরকার সেই শংসাপত্র (death certificate) দিক। মৃতের সঠিক সংখ্যা কত সেটা অনুসন্ধান করে বের করতে হবে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে (administration)। পদপিষ্টের ঘটনার পর যেসব মানুষ এখনো নিখোঁজ তাদের সন্ধান জানানোর জন্য উত্তরপ্রদেশ সরকার অবিলম্বে তৎপর হোক। যাদের অপদার্থতা এবং অপরিণামদর্শিতার কারণে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

যে কেন্দ্রের সরকার ও উত্তরপ্রদেশ সরকারের গাফিলতিতে পুণ্যার্থীদের এভাবে মৃত্যু, সেই দুই সরকারের উপর চাপ তৈরির দাবি সাধারণ মানুষের কাছে করেন গণমঞ্চের সদস্যরা। কুস্তমেলাকে জাতীয় মেলার স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনিয়ন সরকার। কোটি কোটি টাকার অনুদান দেওয়া সরকার কুম্ভমেলাকে নিয়ে প্রচারের গ্যাসবেলুন উড়িয়েছে। কিন্তু কুম্ভমেলার মৃত্যুমিছিল এবং অব্যবস্থা ওই প্রচারের বেলুন ফুটো করে দিয়েছে। এরই পাশাপাশি ইউনিয়ন সরকারের বিমাতৃসুলভ আচরণও প্রকাশ পেয়েছে গঙ্গাসাগর মেলার ক্ষেত্রে। অবিলম্বে পশ্চিমবঙ্গের গঙ্গাসাগর মেলাকে জাতীয় মেলা ঘোষণা করারও দাবি জানান তাঁরা।
–

–

–

–

–


–
