Thursday, December 18, 2025

স্ত্রীর উপর যৌন নির্যাতনের প্রতিশোধেই হজরত-কে খুন জলিলের, দাবি পুলিশ সুপারের

Date:

Share post:

স্ত্রী সুফিয়ার উপর হওয়া যৌন নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতে স্ত্রীকেই টোপ হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছিল। তাকে দিয়েই ফোন করিয়ে  মদের পার্টি করার প্রলোভন দেখানো হয় হজরতকে। তারপর তাকে ডেকে এনে খুন করে জলিল। পূর্বপরিকল্পনা মতোই মহম্মদ জলিল গাজি ও তার স্ত্রী সুফিয়া বিবি মিলে হজরত লসকর কে খুন করেছিল। খুনের আগে অস্ত্রে ধার দিয়ে, কেরোসিন কিনে বাড়িতে মজুত করেছিল জলিল। শুধু তাই নয় দেহ যাতে শনাক্ত না করা যায়, সেই জন্যই মুন্ডু কেটে অন্যত্র ফেলে দিয়েছিল তারা।

তবে হজরত বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে স্ত্রীকে জলিলের বাড়ি যাচ্ছি বলে আসে। তার হাতের ট্যাটুই দেহ শনাক্ত ও খুনিদের ধরতে সাহায্য করেছ তদন্তকারী পুলিশকে। বৃহস্পতিবার বারাসাত পুলিশ জেলার সুপার পতিক্ষা ঝারখরিয়া বারাসাতের ময়নায় সাংবাদিক বৈঠক করে এমনই জানান। দত্তপুকুর থানার বাজিতপুরের হজরত লসকর খুনের ঘটনার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, খুনে ব্যবহৃত হাতুড়ি ও হাসুয়া পুলিশ উদ্ধার করেছে। তবে হজরতের মোবাইল ফোন পুলিশ এখনও উদ্ধার করতে পারেনি।

জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন অর্থাৎ ২ ফেব্রুয়ারি দুপুর তিনটে নাগাদ হজরত তার গাইঘাটার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। স্ত্রীকে বলেছিলো বামনগাছিতে জলিলের বাড়ি যাচ্ছি, সকালেই ফিরে আসব। গাইঘাটা  থেকে বাসে করে এসে বারাসাতের গেঞ্জি মিলের কাছ থেকে মদ, চিপস কিনে বামনগাছি স্টেশন সংলগ্ন জলিলের ভাড়া বাড়িতে এসেছিল হজরত। সেখান থেকে সন্ধ্যা নাগাদ মদের পার্টি করতে বাজিতপুরের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় সকলে মিলে। আনুমানিক রাত সাড়ে সাতটা থেকে আটটার মধ্যে হজরতকে খুন করে জলিল ও তার স্ত্রী সুফিয়া। প্রথমে পেছন থেকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে সুফিয়া। পরে হজরতের মুন্ডু কেটে ফেলে। পরের দিন তিন তারিখ ভোরে মুন্ডুহীন দেহ উদ্ধার হয়। ওই দিন দুপুরে ঘটনা স্থলে জনতার ভীড়ের মধ্যে থেকেই পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে থাকে জলিল ও তার স্ত্রী। পরের দিন অর্থাৎ ৪ তারিখ আটটা থেকে সাড়ে আটটা নাগাদ বামনগাছি স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে জম্বুর যাওয়ার জন্য রওনা দেয় জলিল। সুফিয়া এলাকাতেই থেকে যায়। ১২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে জম্বুর শাম্বা এলাকা থেকে পুলিশ জলিলকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ সুপার খুনের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, জলিল ও হজরত দুজনই মুলত অপরাধ জগতের লোক। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে। তাদের চুরির মালের ভাগবটরা নিয়ে গন্ডগোল ছিল। হজরত পুলিশকে খবর দিয়ে কয়েকবার দলের লোকেদের ধরিয়ে দিয়েছিল। ফলে আগে থেকেই হজরতের উপর রাগ ছিল জলিলের। তবে খুনের মূল কারণ জলিলের স্ত্রী সুফিয়ার উপর হজরতের বারংবার যৌন নির্যাতন। এই বিষয়টি মেনে নিতে না পারায় স্বামী স্ত্রী দুজনে মিলেই পরিকল্পনা করে হজরতকে খুন করে। তাদের অতিরিক্ত বিশ্বাস ছিল যে মুন্ডু লুকিয়ে ফেললে আর দেহ শনাক্ত করতে পারবে না পুলিশ। আর তাদেরও খোঁজ পাবেনা পুলিশ। তাই মুন্ডু কেটে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে বামনগাছি স্টেশন সংলগ্ন কচু বনের মধ্যে ফেলে দিয়েছিল।

spot_img

Related articles

নিউটাউনের ঝুপড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

উত্তর ২৪ পরগনার নিউটাউনে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার সন্ধ্যার পর...

বিজনেস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি কনক্লেভ: বিনিয়োগের বার্তা নিয়ে শিল্পপতিদের সামনে মুখ্যমন্ত্রী

রাজ্যে শিল্প ও বিনিয়োগের সম্ভাবনাকে আরও বিস্তৃত করতে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ‘বিজনেস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি কনক্লেভ’। ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে...

২২ জানুয়ারি থেকে শুরু ৪৯তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা, ভার্চুয়ালেও মিলবে মেলার স্বাদ

আর দেড় মাসের অপেক্ষা। আগামী ২২ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে ৪৯তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। বইপ্রেমীদের জন্য এ...

যুবভারতীর বিশৃঙ্খলা-কাণ্ডে শোকজের জবাব জমা তিন শীর্ষ কর্তার

যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে মেসির অনুষ্ঠান ঘিরে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার ঘটনায় শোকজের জবাব জমা দিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, ক্রীড়া...