রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ভাবমূর্তি নষ্টের অপচেষ্টা! CBI-এর চার্জশিটের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন অভিষেকের আইনজীবী

বারবার তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) CBI-র বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ব্যবহারের অভিযোগ তোলেন। ফের তার প্রমাণ মিলল। ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ভাবে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের ভাবমূর্তি নষ্টের অপচেষ্টা করছে সিবিআই। প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ মামলায় অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের বিরুদ্ধে পেশ করা চার্জশিটে ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়’ বলে যে নামটি উল্লেখ করা হয়েছে তা রাজনৈতিক কারণে করা ভিত্তিহীন অভিযোগ বলে বিবৃতি দিয়েছেন তাঁর আইনজীবী সঞ্জয় বসু (Sanjay Basu)।

২৮ পাতার চার্জশিটে সিবিআই সুজয়কৃষ্ণ-সহ কয়েক জনের কথোপকথনের অডিও ক্লিপের কথা জানিয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ, অডিও-তে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং TMC বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের পাশাপাশিই জনৈক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও শোনা গিয়েছে। অডিও-র সত্যতা যাচাইয়ের জন্য CBI সেটি সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্সেস ল্যাবরেটরিতে পাঠিয়েছে। তবে, কে সেই অভিষেক, চার্জশিটে তাঁর পরিচয়ের কোনও উল্লেখ নেই।

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী সঞ্জয় জানান, তাঁর মক্কেল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন। বিবৃতিতে তিনি লেখেন, ”আমার মক্কেল ইডি ও সিবিআইকে তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছেন। তাঁকে যেখানে যখন ডেকে পাঠানো হয়েছে, তিনি হাজিরা দিয়েছেন। যে নথি চাওয়া হয়েছে তা জমা দিয়েছেন। তার পরেও ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে সিবিআই। অপরাধের তদন্তের দায়িত্বে থাকা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে কোনও চার্জশিট পেশ করেনি।”
আরও খবর: ‘বিতর্কিত’ বিজ্ঞপ্তি বাতিল করল কলকাতা পুরসভা, আধিকারিককে শোকজ

এরপর সিবিআই-এর চার্জশিটের বিষয়ে সঞ্জয় বসু (Sanjay Basu) বিবৃতিতে লেখেন, ”যে দাবি তারা চার্জশিটে করেছে তার সমর্থনে কোনও নথি বা প্রমাণ পেশ করতে পারেনি সিবিআই। এই থেকে স্পষ্ট আমার মক্কেলকে ফের অকারণে নিশানা করা হচ্ছে। যে চার্জশিটের কথা বলা হচ্ছে, সেটি আমার মক্কেলকে হয়রানির একটা উপায় মাত্র।”

বিবৃতিতে অভিষেকের আইনজীবীর অভিযোগ, ”এর আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করেছিল ED। কোনও প্রমাণ না পেয়ে কলকাতা হাই কোর্ট ইডির বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। একটি রাজনৈতিক শক্তি ইডিকে দিয়ে হেনস্থায় ব্যর্থ হওয়ার পরে এবার সিবিআইকে ব্যবহার করছে। সাম্প্রতিক চার্জশিটে প্রমাণ না থাকলেও সন্দেহ তৈরির একটা মরিয়া চেষ্টা। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সিবিআইয়ের এই চেষ্টা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কালিমালিপ্ত করার একটা ব্যর্থ চেষ্টা মাত্র। খতিয়ে না দেখেই এই মামলায় যে ভাবে ব্যক্তিদের বয়ান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তা সিবিআই তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয়।”

শুধু বাংলা নয়, অবিজেপি রাজনৈতিক দলগুলি গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ব্যবহার করে হেনস্থার অভিযোগ তোলেন। আপ নেতা কেজরিওয়াল বা ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে হয়রানির ঘটনা তার সাম্প্রতিক উদাহরণ। একইভাবে বাংলাতেও এই ষড়যন্ত্র বিজেপি চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ শাসকদলের।