Wednesday, December 17, 2025

ডুপ্লিকেট এপিকে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র, নির্বাচন কমিশনের ভুল ধরিয়ে তিন যুক্তিতে বিঁধলেন সাকেত

Date:

Share post:

নির্বাচন কমিশন স্বীকার করে নিয়েছে ভোটার তালিকায় ভুল রয়েছে। কিন্তু সেই ভুল স্বীকার করতে তারা রাজি নয়। তৃণমূলের পক্ষ থেকে ২৪ ঘন্টা সময় দেওয়া হয়েছিল ভুল স্বীকার করার জন্য, কিন্তু নির্বাচন কমিশন শুধু আই-ওয়াশেই ব্যস্ত। ডুপ্লিকেট ভোটার আইডি কেলেঙ্কারির বিষয়ে স্পষ্ট উত্তর দিতে তারা পারেনি। কেন এই ভুল, সেই ব্যাখ্যা দিতেও তারা অপারগ। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যসভা তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখেল এক্স হ্যান্ডেলে নির্বাচন কমিশনের মুখোশ খুলে দিলেন। তাদের সাফাই যে কার্যত আই-ওয়াশ, তা সুস্পষ্ট করে দিলেন যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা দিয়ে।

সাকেত লেখেন, ভারতের নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ সর্বৈব সত্য। তাই তড়িঘড়ি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে নেমেছে নির্বাচন কমিশন। তারা বিজ্ঞপ্তিতে যা বলছে, তা আদতে নিজেদের নিয়ম ও নির্দেশিকাবিরুদ্ধ৷
প্রথমত, ভোটার আইডি কার্ডগুলিকে এপিক বলা হয়। সেই এপিক ইস্যু করার প্রক্রিয়াটি নির্বাচন কমিশনই নিবন্ধন করেছে।এখন একই এপিক নম্বর ইস্যু করে সাফাই গাইছে তারা।

নির্বাচন কমিশনের প্রথম দাবি, আলফা নিউমেরিক সিরিজ ব্যবহার করার কারণে নির্দিষ্ট রাজ্যে একাধিক ভোটারদের জন্য একই নম্বরের এপিক ইস্যু করা হয়েছিল। কিন্তু এপিক কার্ড নম্বর তিনটি অক্ষর এবং সাত সংখ্যার একটি ক্রম। তা প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য আলাদা। তাই দু’টি ভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটারদের জন্য একই হওয়া অসম্ভব৷ তাহলে কীভাবে পশ্চিমবঙ্গের ভোটারদের মতো একই এপিক নম্বর হরিয়ানা, গুজরাট এবং অন্যান্য রাজ্যে ইস্যু করা হল।

নির্বাচন কমিশনের দ্বিতীয় দাবি, দু’জনের একই এপিক নম্বর হলেও তাদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ভোট দিতে অসুবিধা হবে না। কিন্তু একই এপিক নম্বর বাংলার একজন ভোটার এবং অন্য রাজ্যের একজন ব্যক্তিকে বরাদ্দ করা হলে ছবির অমিলের কারণে ভোট বাতিল হতে পারে। বিভিন্ন রাজ্যে একই এপিক নম্বর ইস্যু করে ষড়যন্ত্র করে অ-বিজেপি দলের ভোট বাতিল করা হতে পারে, সেই সম্ভাবনা থেকেই যায়। তৃতীয়ত নির্বাচন কমিশনের দাবি ছিল, আলফা নিউমেরিক কোডের সদৃশতার কারণে একই এপিক নম্বর বিভিন্ন ভোটারের নামে ইস্যু হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের বিধি অনুযায়ীই এপিক তৈরির জন্য ব্যবহৃত সফ্টওয়্যারগুলি একটি ট্র্যাক রাখে, যাতে নিশ্চিত করা যায় যে একই এপিক একাধিক ব্যক্তিকে বরাদ্দ করা না হয়। এছাড়াও, এপিক নম্বর ভোটারদের বিশদ বিবরণকে তাদের ছবির সাথে লিঙ্ক করে এবং এটি একটি স্থায়ী অনন্য পরিচয় পত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। তাই বিভিন্ন রাজ্যে একাধিক ব্যক্তিকে একই এপিক নম্বর বরাদ্দ করা অসম্ভব। পূর্ব পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ছাড়া একই এপিক ইস্যু করার কোনও অর্থ হয় না। এই ঘটনা নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে নির্বাচন কমিশনের তৈরি তিন সদস্যের প্যানেল নিয়েও, যে প্যানেলের দুই সদস্য হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাই নির্বাচন কমিশনকে এই জালিয়াত কেন, তার স্পষ্ট উত্তর দিতে হবে।

আরও পড়ুন- পরিবারকে অন্ধকারে রেখেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর! দেহ দেখতে আর্জি শাহজাদির পরিবারের

spot_img

Related articles

মেসির ভারত সফরের টাকার অঙ্ক শুনলে চমকে যাবেন, সমালোচনায় সরব হাবাস

অনিশ্চয়তার অন্ধকারে ভারতীয় ফুটবল, সেখানে লিও মেসিকে(Messi) এনে কোটি কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। এই নিয়ে আগেই সমালোচনা...

যুবভারতী কাণ্ডে বাড়ল সিটের সদস্যসংখ্যা, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে ফরেনসিক টিম

লিওনেল মেসির (Lionel Messi) কলকাতা সফরে যেভাবে যুবভারতীতে বিশৃঙ্খলা হয়েছে তার তদন্তে আগেই SIT গঠন করা হয়েছে। এবার...

ফের আলিপুর চিড়িয়াখানায় বাঘিনী মৃত্যু! গত তিনমাসে মৃত ৩ রয়্যাল বেঙ্গল

ফের আলিপুর চিড়িয়াখানায় বাঘিনীর (Tigress) মৃত্যু। বুধবার সকালে একটি  সাব অ্যাডাল্ট রয়্যাল বেঙ্গল বাঘিনীর  মৃত্যু হয়। এই নিয়ে...

ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে অগ্রগতি, শিলাবতী ও কাটান খালে সমীক্ষার সিদ্ধান্ত রাজ্যের

ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান (Ghatal Master Plan) রূপায়ণের পথে আরও এক ধাপ এগোল রাজ্য সরকার। দীর্ঘদিন আটকে থাকা এই...