ফুটবলের জাগলিং দেখিয়ে পরিবারকে ভরসা জোগাচ্ছে বিশেষভাবে সক্ষম অমিত!

১৫ বছর বয়স সেই বয়স থেকেই ফুটবলের জাগলিং দেখানো শুরু

সংসার সামলাতে ফুটবলের জাগলিং দেখিয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিশেষভাবে সক্ষম ছেলে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে দূরে রেখে নিজের প্রতিভার জোরেই জয় করছে মানুষের মন। আর তাতেই যা পারিশ্রমিক মিলছে, তা দিয়ে চলছে তাদের সংসার।এ যেন এক হার না মানার গল্প! হাতে পায়ে ফুটবল নিয়ে নাচিয়ে সংসার সামলাচ্ছেন নদীয়া মাজদিয়ার ছেলে অমিত বিশ্বাস।

বছর পঁচিশের অমিত  জন্ম থেকেই কানে শুনতে পায় না এবং মুখে কথা বলতে পারে না। তার হাঁটাচলা অঙ্গভঙ্গির মধ্যেও রয়েছে অস্বাভাবিকতা। তবে একবার ফুটবল পায়ে পড়লে গোটা দিন সেই ফুটবলকে পায় নিয়ে নাচাতে পারে সে। তার এই প্রতিভা এখন তার রোজগারের চাবিকাঠি। জাগলিং দেখিয়েই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে বিশেষভাবে সক্ষম অমিত। তবে অমিত যেখানেই যায় সঙ্গে থাকেন তার মা।

ছোট থেকে পড়াশোনা সেভাবে হয়ে ওঠেনি। বাবা একজন তাঁতি ! দুই বোন এক ভাইকে নিয়ে অভাবের সংসার। সেই অভাবের সংসারেই হাল ধরেছেন এবার বিশেষভাবে সক্ষম ছেলে। ছোট থেকে তার স্বপ্ন ছিল একজন ফুটবলার হবে। তবে ভালো কোথাও প্রশিক্ষণ নিতে পারেনি টাকার অভাবে। তবে একবার ফুটবল পায়ে পেলে সারাদিন সেই ফুটবল নিয়েই কেটে যায় তার। ফুটবলের নানান রকমের জাগলিং দেখাতে পারে অমিত। তার যখন ১৫ বছর বয়স সেই বয়স থেকেই ফুটবলের জাগলিং দেখানো শুরু তার। এইভাবে প্রথমে একটা দুটো জায়গা থেকে ডাক আসতো। এখন বিভিন্ন জেলা থেকে তার ডাক আসে সেখানে গিয়ে জাগলিং দেখানোর জন্য। সেই জাগলিং দেখিয়ে যা আয় হয় তা পুরোটাই নিজের পরিবারের হাতে তুলে দেয় অমিত।

এ বিষয়ে অমিতের মা সুলতা বিশ্বাস জানান, অভাবের কারণে তারা ছেলেকে নিয়ে এগোতে পারেননি। তবে তাদের ছেলে নিজে তার প্রতিভার জোড়ে এগিয়ে চলেছে। নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, হাওড়ার মতো বিভিন্ন জেলায় তার এখন ডাক আসে জাগলিং দেখানোর জন্য। সে জাগলিং দেখেই যা আয় হয় তা সে পুরোটাই এসে তুলে দেয় পরিবারের জন্য। বিশেষভাবে সক্ষম হয়েও অক্লান্ত চেষ্টা করে যায় নিজের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর।

এ বিষয়ে কোন্নগরের ফুটবল উদ্যোক্তা সঞ্জয় হালদার বলেন, এই ধরনের প্রতিভাবান ছেলেদের আরও বেশি করে সুযোগ দেওয়া উচিত। যাতে আগামী দিনে জীবনের মূল স্রোতে ফিরতে পারে তারা। বিশেষভাবে সক্ষম হয়েও অমিত কোনও দিক থেকেই কারোর থেকে পিছিয়ে নেই।