কলকাতায় ভারত-বাংলাদেশ নদী কমিশনের ৮৬তম বৈঠক বসেছে। রাজ্য-কেন্দ্রের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা। বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশের ১১ প্রতিনিধি। সেচ দফতরের সচিব মণীশ জৈনের উপস্থিতিতেই গঙ্গা-পদ্মা জল বণ্টন, তিস্তা চুক্তি সহ ১১টি ইস্যুতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।বাংলাদেশের (Bangladesh) সঙ্গে ভারতের (India) গঙ্গা জলবণ্টন চুক্তি (Ganga Water Sharing Agreement) পুনর্নবীকরণ (Renewal)নিয়েও আলোচনা হবে।এই প্রতিনিধিরা যাবেন ফরাক্কায় ব্যারেজ (Barrage at Farakka) এলাকাতেও।

জানা গিয়েছে, মূলত গঙ্গা-পদ্মার জলবণ্টন চুক্তি বিষয়ে আলোচনার জন্যই এই প্রতিনিধিদল এসেছেন।এই জলবণ্টন চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৬ সালে। এই অবস্থায় নতুন করে চুক্তি না হলে দেখা দিতে পারে বড় সমস্যা। ফরাক্কা ব্যারেজ সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় জল-বণ্টন ব্যবস্থায় তা ছাপ ফেলতে পারে।বাংলাদেশ থেকে আসা প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব আছেন যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি)-এর সদস্য মুহাম্মদ আবুল হোসেন।এর আগে গতকাল বুধবার ফরাক্কায় গঙ্গা নদীর যৌথ পর্যবেক্ষণর জায়গাটি পরিদর্শন করেন তারা।কলকাতায় ৬ ও ৭ মার্চ দুদিন ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক হবে। জলশক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র জয়েন্ট কমিশনার (এফএম) আর আর সম্ভরিয়ার একথা জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবেগৌড়া এবং বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এই চুক্তি গঙ্গা নদীর জল বন্টন বিষয়ে একটি কাঠামো তৈরি করে। যা ফারাক্কা বাঁধ থেকে শুষ্ক আবহাওয়ায় (জানুয়ারি থেকে মে) জলের প্রবাহ নিশ্চিত করে। চুক্তিটি ৩০ বছরের জন্য কার্যকর ছিল। ২০২৬ সালের ১২ ডিসেম্বর এর মেয়াদ শেষ হবে। ২০২৪ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় শেখ হাসিনা ভারত সফরে আসেন, সেই সময় ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশ ১৯৯৬ সালের চুক্তি পুনর্নবীকরণের জন্য আলোচনা শুরুর কথা জানিয়েছিল।

পুনর্নবীকরণ নিয়ে আলোচনা দুই দেশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাংলাদেশের জন্য এই চুক্তি তাদের জলের চাহিদা মেটানো এবং ভারতের জন্য ভারসাম্য বজায় রাখার চ্যালেঞ্জ। যাতে বাংলাদেশের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি নিজেদের প্রয়োজনও পূরণ হয়।তাই ফারাক্কায় পর্যবেক্ষণ স্থল যৌথ পরিদর্শন এই আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।ওই জায়গায় থেকে দুই দেশের প্রতিনিধিরা গঙ্গার প্রবাহ পরিমাপ করে তথ্য সংগ্রহ করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
দুই দেশের সচিব পর্যায়ের বৈঠকের পর এই বিষয়টি নিয়ে ছয় সদস্যের একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠিত হবে বলে জানা গিয়েছে । সেখানে দুই দেশের প্রতিনিধিরা থাকবেন ৷ সেই টেকনিক্যাল কমিটি মূলত আগামী তিনমাসের মধ্যে এই চুক্তির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে । যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে এই কমিটির বিষয়েও আলোচনা হওয়ার কথা৷

–

–

–

–

–

–

–