‘বাংলার বাড়ি প্রকল্প’-র দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দ্রুত শুরু করতে চলেছে রাজ্য

জেলাশাসকদের ইতিমধ্যেই মুখ্যসচিব এ ব্যাপারে জানিয়ে দিয়েছেন

কেন্দ্রের গ্রামীণ আবাস যোজনায় বঞ্চিত গৃহহীনদের মাথার উপরে ছাদ দিতে ‘বাংলার বাড়ি প্রকল্প চালু করেছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার প্রথম কিস্তির টাকা বিলির কাজ তিন মাস আগেই শেষ হয়েছে। আগামী মাস থেকে  দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়া শুরু করতে চলেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই টাকা পাওয়ার শর্ত হলো, প্রথম কিস্তির টাকায় প্রাপকদের বাড়ির ভিত থেকে ঘরের বিম পর্যন্ত কাজ শেষ করতে হবে। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো আরও ১২ লক্ষ গৃহহীন গরিব মানুষকে এই প্রকল্পে আনার জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হবে। জেলাশাসকদের ইতিমধ্যেই মুখ্যসচিব এ ব্যাপারে জানিয়ে দিয়েছেন।

কিন্তু পঞ্চায়েত দফতরের সর্বশেষ রিপোর্ট বলছে, ২১টি জেলার ১২ লক্ষ উপভোক্তা বাড়ি নির্মাণের জন্য প্রথম কিস্তির টাকা পেলেও প্রায় দেড় লক্ষ বাড়ি তৈরির কাজ এখনও শুরু করতে পারেননি। এর মধ্যে ৫০ হাজার উপভোক্তা তাঁদের সমস্ত নথি পেশ করে টাকা পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ইউনিক ডকুমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (ইউডিআইএন) পাননি। অনেকে আবার সেটা পেলেও নানা ত্রুটি থাকায় তা গ্রাহ্য হয়নি। ফলে তাঁরাও হাতে প্রথম কিস্তির টাকা পাননি।

দেখা গিয়েছে, সবচেয়ে বেশি উপভোক্তা ইউডিআইএন পাননি উত্তর ২৪ পরগনায়। ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে এই জেলায় ৮২,১২৮ জন নির্বাচিত উপভোক্তার মধ্যে ৫,৩৯২ জন এখনও ইউডিআইএন-এর জন্য নথিভুক্ত হননি। এর পরেই রয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর। পঞ্চায়েত দফতর অবশ্য বলছে, সারা রাজ্যে ৩ লক্ষ ২২ হাজার ৮৭২টি বাড়ির ভিত থেকে বিম পর্যন্ত কাজ প্রায় শেষ। বাকি কাজ চলছে।প্রথম কিস্তির টাকা বিলির পরেও গৃহনির্মাণে এই গড়মসি ভাবাচ্ছে পঞ্চায়েত দফতরকে। নবান্নে পেশ করা পঞ্চায়েত দফতরের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৪৬ হাজার উপভোক্তা টাকা পাওয়ার পরেও তিন মাসে বাড়ি নির্মাণের জন্য ইট,বালি, সিমেন্ট পর্যন্ত সংগ্রহ করতে পারেননি। কাজ শুরু তো পরের কথা। আরও ৫০ হাজারের বেশি উপভোক্তা নির্মাণ সামগ্রী সংগ্রহ করলেও কাজ শুরু করতে পারেননি। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ দিনাজপুর, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর এই গৃহনির্মাণের গড়িমসি সবথেকে বেশি। রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, এর ফলে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২৬ হাজার, উত্তর ২৪ পরগনায় ১০ হাজারের বেশি বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরুই হয়নি। দক্ষিণ দিনাজপুরে সংখ্যাটা প্রায় ৭ হাজার।