Sunday, November 23, 2025

নারী শিক্ষা থেকে ক্ষমতায়ন: অক্সফোর্ডের মঞ্চে পরিবর্তিত বাংলার ছবি তুলে ধরলেন মমতা

Date:

Share post:

কুণাল ঘোষ, সফরসঙ্গী

শিক্ষাই আনে প্রগতি। নারীর শিক্ষা সমাজে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বুঝেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শিক্ষা থেকে নারীর কর্মসংস্থান, সামাজিক নিরাপত্তা নিয়ে যেভাবে ভেবেছেন তিনি, তা ভাবতে বাধ্য করেছে বিশ্ববরেণ্য অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়কেও (Oxford University)। কোন পথে বাংলায় নারীর এই অসামান্য অগ্রগতি, সেই তথ্য কলেজ কলেজের বক্তৃতায় পেশ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। কখনও মোহিত হয়ে, কখনও উচ্ছ্বসিত প্রশংসার সঙ্গে সেই কথাই শুনল অক্সফোর্ডের শ্রোতারা।

বাংলার নারীর বর্তমান চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমেই তুলে ধরেন কন্যাশ্রীর (Kanyasree) কথা। যেভাবে স্কুল থেকে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ (scholarship) নিয়ে বাংলার মেয়েরা শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে, সেই ছবি তুলে ধরেন তিনি। বাংলার কোনও বাবা-মা যেন না বলতে পারেন মেয়েকে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিতে হচ্ছে, শিক্ষাদানে আর্থিক সংস্থান না থাকায়, এটাই লক্ষ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। অক্সফোর্ডে (Oxford University) দাঁড়িয়ে এদিন স্পষ্ট করে দেন তিনি।

শিক্ষায় এই ধারা বাংলাকে কোথায় এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে, তা বলতে গিয়ে মমতা তথ্য পেশ করেন, বর্তমানে স্কুলে ড্রপ আউটের (drop out) পরিমাণ ২ শতাংশের মতো। যা আগে ছিল ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া শেষ হলে তাঁদের জন্য রয়েছে স্মার্ট কার্ড (smart card)। যাতে পড়ুয়াদের বাইরে গিয়ে পড়ার সুযোগ হাতছাড়া করতে না হয়। বাংলার কন্যাশ্রী তাই ইউনাইটেড নেশন্সের (United Nations) খেতাবের কথা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী, যা আজ ভারত ও অন্যান্য জায়গায় মডেল হয়ে গিয়েছে।

শুধুমাত্র শিক্ষার্থী নয়, নারীর ক্ষমতায়নে (women empowerment) স্বাস্থ্যক্ষেত্রে যেভাবে কাজ করেছে তৃণমূল সরকার, সেই তথ্যও তুলে ধরেন তিনি। বর্তমানে বাংলায় প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব ৯৯.৫ শতাংশ, যা আগে ছিল ৬০ শতাংশ। আগামী দিনে এই সংখ্যা ১০০ শতাংশ করার প্রতিশ্রুতি অক্সফোর্ডের (Oxford University) মঞ্চে দাঁড়িয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে উল্লেখ করেন প্রত্যন্ত এলাকার প্রসূতিদের জন্য হাসপাতালের কাছে রাজ্যের উদ্যোগে থাকার জায়গা তৈরি করে দেওয়ার কথা।

নারীর ক্ষমতায়নে (women empowerment) লক্ষ্মীর ভাণ্ডার যে ভূমিকা রেখেছে, তা যে গোটা দেশে অনুসরণ করা শুরু হয়েছে, তার উল্লেখ কেলগ কলেজের বক্তৃতায় উল্লেখ করেন তিনি। সেই প্রসঙ্গেই তিনি তুলে ধরেন, ভারতে ডিমনিটাইজেশনের (demonitisation) পরে মেয়েদের হতাশ মুখের কথা, তাঁদের কান্নার কথা। কারণ তাঁরা স্বামীর থেকে পাওয়া অর্থ যেভাবে সঞ্চয় করতেন ও পরিবারের জন্য খরচ করতেন, তা বন্ধ করে দেয় ডিমনিটাইজেশন। সেখান থেকেই তাঁদের জন্য পকেট মানি দেওয়ার কথা ভাবতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের (Lakshmir Bhander) চিন্তা আসে।

বর্তমানে সেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার যেভাবে বাংলার মহিলাদের আর্থিক সহায়তা হয়ে দাঁড়িয়েছে তা তাঁদের আমৃত্যু পাশে থাকে, স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। যেভাবে কোনও ভেদাভেদ ছাড়া প্রতিটি বাংলার মহিলা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পান, তা যে দৃষ্টান্ত কেলগ কলেজের বক্তৃতায় আবারও সোচ্চারে পেশ করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।

spot_img

Related articles

 ‘ব্ল্যাক টাইগার’-এর অজানা কাহিনি: এক ভারতীয় বীরের জীবনসংগ্রাম

ভারতের রাজস্থানের শ্রীগঙ্গানগরের এক ধুলোমাখা শহরে ১৯৫২ সালে জন্মেছিল এক সাধারণ ছেলে—রাভিন্দ্র কৌশিক। স্কুল-কলেজে নাচ, নাটক, অভিনয়ে সবার...

 সরকার বাড়িতে উৎসবের রঙ! আইবুড়ো ভাতে আবেগে ভাসলেন মৌবনী

৩০ নভেম্বর সাত পাকে বাঁধা পড়তে চলেছেন জাদুসম্রাট জুনিয়র পিসি সরকারের (PC Sorcar) কন্যা, অভিনেত্রী মৌবনী সরকার। বিয়ের...

স্বরাষ্ট্র দফতর বিজেপির হাতে! ‘স্বরাষ্ট্রহীন নীতীশ’ কি বিহারের ‘নিধিরাম’ মুখ্যমন্ত্রী?

বিহারের মন্ত্রিসভা গঠনের পর দফতর বণ্টন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তীব্র আলোচনা। দশম বারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের...

এসআইআরের সেরা কর্মীদের বিশেষ সম্মাননা, তৎপরতা বাড়াতে উদ্যোগ কমিশনের

এসআইআর-এর এনুমারেশন প্রক্রিয়ায় দৃষ্টান্তমূলক দক্ষতা দেখানো বুথ লেভেল অফিসারদের (বিএলও) পুরস্কৃত করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের...