Friday, December 5, 2025

চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস, ঋণের টাকায় চড়া সুদের ফাঁদে কিডনি বিক্রি!

Date:

Share post:

কিডনি বিক্রির চক্রে চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস। অশোকনগর থানার পুলিশ জানতে পেরেছে, ঋণের টাকায় চড়া সুদের ফাঁদে ফেলে কিডনি বিক্রি করা হত।এই চক্রে শুধু ধৃত গুরুপদ জানা, বিকাশদের টিম নয়, একাধিক টিম সক্রিয় রয়েছে। ধৃতদের জেরা করে এমনই তথ্য এসেছে পুলশের হাতে।তদন্তকারীদের দাবি, কিডনি বিক্রির প্রতিটি চক্রের কাজের ধরন প্রায় এক। সুদখোর এজেন্টদের সঙ্গে কমবেশি সব চক্রেরই যোগাযোগও রয়েছে। ক্যানিং থেকে ব্যারাকপুর–সহ হাওড়াতেও অশোকনগরের কায়দাতেই অসহায় মানুষদের চাপ দিয়ে কিডনি বিক্রি করিয়েছিল বলেই জেরায় ধৃতরা স্বীকার করেছে।

পুলিশের দাবি, অমিত, পিয়ালি এবং মৌসুমিরা কিডনি বিক্রির খদ্দের জোগাড় করতে রীতিমতো দালাল রেখেছিল। তারাই কলকাতা–সহ সংলগ্ন এলাকার নেফ্রোলজি সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত।কারণ, সেখান থেকেই দালালরা জানতে পারত কোন রোগীর কিডনির প্রয়োজন।তাদের রক্তের গ্রুপ কী, সেটাও জানত দালালরা। দালালদের কাছ থেকে প্রথমে তথ্য জোগাড় করা হত, তারপর গুরুপদ ওরফে অমিত সুদখোর ব্যবসায়ীদের ময়দানে নামিয়ে দিত। বিকাশদের মতো একাধিক চক্রের সুদখোর ব্যবসায়ী চড়া সুদে ঋণের ফাঁদে ফেলে কিডনি বিক্রি করার জন্য চাপ দিত অসহায় মানুষকে। চাপে রাজি হওয়ার পরেই তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হতো অমিতের কাছে।

জানা গিয়েছে, কিডনি দানের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথি, আইনি স্বীকারোক্তি দেওয়ার পাশাপাশি কিডনি দাতাদের প্রয়োজনীয় নথি, কোর্টের এফিডেভিট ও একজন চিকিৎসকের ফিট সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয়। বারাসত মহকুমা এলাকার প্রায় সব কিডনিদাতাকে একজন নেফ্রোলজি চিকিৎসকই এই ফিট সার্টিফিকেট দিতেন বলে জানা গিয়েছে। তাই সেই চিকিৎসককেও সন্দেহের তালিকায় রেখেছে অশোকনগর থানার পুলিশ।

পুলিশ জানতে পেরেছে, গত দু’বছরে অশোকনগর এলাকা থেকে ১০ জন কিডনি দানের আবেদন করেছেন। এ ছাড়াও মধ্যমগ্রামের ৬ জন, হাবরার ৫ জন, নিউটাউন থেকে ২ জন আবেদন করেছিলেন। বারাসত, দেগঙ্গা, দত্তপুকুর, বাগুইআটি এলাকায় একজন করে কিডনি দানের আবেদন করেছিলেন।নিয়ম অনুযায়ী কিডনি দানের ক্ষেত্রে প্রথমে হয় পুলিশ ভেরিফিকেশন। তার পর হয় মহকুমা স্তরে হেয়ারিং। স্বাভাবিক ভাবেই পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় চাপ দিয়ে কিডনি বিক্রির বিষয়টি কেন ধরা পড়ল না, সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। একজন চিকিৎসকই বা কেন বারবার ফিট সার্টিফিকেট দিচ্ছেন? এই বিষয়টিও কী ভাবে জেলার স্বাস্থ্য কর্তাদের নজর এড়িয়ে গেল, এই প্রশ্নও উঠেছে। পুলিশের অনুমান, এই চক্রের সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত।

 

 

 

spot_img

Related articles

কুণালে হাত ধরে ‘অরণ্যবহ্নি রানি শিরোমণি’ বইয়ের প্রচ্ছদ প্রকাশ

তাঁর লেখা 'রানি সাহেবা' বইয়ের মাধ্যমে চুয়াড় বিদ্রোহের নেত্রী রানি শিরোমণিকে আবার পাদপ্রদীপের নিয়ে এসেছিলেন প্রাক্তন সাংসদ তথা...

বাংলা সম্পর্কে সংসদে অসত্য বলেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী! তীব্র ধিক্কার দোলাদের

রাজ্যসভায় সেন্ট্রাল এক্সাইজ অ্যামেন্ডমেন্ট বিলের উপর আলোচনার শেষে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বক্তব্য ঘিরে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হল।...

সন্দেশখালি কাণ্ডে আরও চাপে শেখ শাহজাহান! হাইকোর্টে বিস্ফোরক রিপোর্ট সিবিআইয়ের

আরও বিপাকে সন্দেশখালির শেখ শাহজাহান ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা। কলকাতা হাইকোর্টে জমা দেওয়া সিবিআই–এর সর্বশেষ অনুসন্ধানী রিপোর্টে দাবি করা...

আর জি কর চিকিৎসক অনিকেত মামলায় নতুন মোড়! সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের এসএলপি

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক ডাঃ অনিকেত মাহাতোর যোগদান সংক্রান্ত মামলায় নয়া মোড়। আগামী ৮ই ডিসেম্বর এই...