পরিকল্পনা করেই যে অক্সফোর্ডের কেলগ কলেজে (Kellogg College) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বক্তৃতার সময়ে বিশৃঙ্খলার পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল, তা স্পষ্ট হয়েছিল এসএফআই-এর (SFI) স্বীকারোক্তিতেই। তারপরেও তৃণমূলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল, গোটা বিষয়টাই রাম-বাম আঁতাঁতে ঘটানো হয়েছিল। এসএফআই-এর পরে এবার আরও দুই বিক্ষোভকারীর রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশ্যে আসতেই স্পষ্ট হয়ে গেল বিজেপি (BJP) ও এসএফআই (SFI) পরিকল্পনা করেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্বমঞ্চে হেনস্তার পরিকল্পনা করেছিলেন কেলগ কলেজে। শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় নন, তাঁদের আক্রমণের লক্ষ্য ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায়ও। বিজেপি কর্মীরা নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে আবার গর্বের সঙ্গে সেই বিশৃঙ্খলার ছবি প্রকাশ করে বীরত্ব জাহিরও করেছেন।

অক্সফোর্ডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতা চলাকালীন নজরবিহীন বিশৃঙ্খলা তৈরি করে একদল উচ্ছৃঙ্খল বহিরাগত। গোটা সময়টায় সেই পরিকল্পনা যে তাঁদের ছিল না, সাময়িক বাধা দিয়ে নিজেরাই প্রচারের আলোয় আসার চেষ্টা চালিয়েছিলেন, তা স্পষ্ট সুশীল দোকওয়াল আক্কার ফেসবুক পোস্টে। এই চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বর্তমানে ইংল্যান্ডের ব্রেন্টে কর্মরত। ২৭ মার্চ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতার সময়ে আচমকা পোস্টার নিয়ে তিনি ও তাঁর দুই সঙ্গী সঙ্গ দেন এসএফআই কর্মীদের।

গোটা পরিকল্পনাই যে এসএফআই (SFI) কর্মী ও বিজেপি (BJP) কর্মীরা একসঙ্গে করেছিলেন, স্পষ্ট আক্কার পোস্ট করা ছবিতে। সেখানেই দেখা যাচ্ছে এসএফআই-এর (SFI) কর্মীদের সঙ্গে প্রেক্ষাগৃহের বাইরে একসঙ্গেই পরিকল্পনা করা ও অপেক্ষা করায় সামিল বিজেপি (BJP) কর্মীরা। এক সারিতে দাঁড়িয়ে একের পর এক প্রশ্ন করে চিৎকার করতে থাকেন তাঁরা। বলাই বাহুল্য, সেদিন বক্তৃতা চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সেই সব প্রশ্নের জবাব দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।

তবে গোটা ঘটনার ছবি ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করে বিজেপি কর্মীদের বাহবা অর্জন করেছেন। সেখানেই প্রকাশিত আরও এক বিজেপি কর্মীর পরিচয়। রজতশুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায় নামে আরেক বিজেপি কর্মী সেখানে নিজের ভিডিও শেয়ার করেন। সেখানে তিনি নিজেই স্বীকার করেন বিজেপির উচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেই তাঁরা কেলগ কলেজে ‘কর্মসূচি’ আয়োজন করেছিলেন। পরবর্তী কর্মসূচি কলকাতায় বিজেপির নেতারা সামলে নেবেন, বলেও দাবি করেন রজতশুভ্র।


এর আগে এসএফআই কর্মীদের পরিচয় প্রকাশ্যে আসার পরে দলের সোশ্যাল মিডিয়ায় যেভাবে গর্বের সঙ্গে ‘কর্মসূচি’ সফল করার বার্তা ও অভিনন্দন দেওয়া হয়েছিল, তারই প্রতিফলন বিশৃঙ্খলা তৈরি করা বিজেপি কর্মীদের সোশ্যাল মিডিয়া পেজেও। একসঙ্গে পোস্টার তুলে ধরে যেভাবে একই সুরে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে সেদিন বিশৃঙ্খলা তৈরি করা হয়েছিল, তাতে স্পষ্ট শুধুমাত্র বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা রাম-বাম যৌথ উদ্যোগে চালানো হয়েছিল, যা শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee) নয়, অক্সফোর্ড কর্তৃপক্ষও বিশৃঙ্খলাকারীদের প্রেক্ষাগৃহের বাইরে ফেলে দেওয়ার মধ্যে দিয়ে নস্যাৎ করে দিয়েছিল।


–

–

–
