প্রেমিকের সঙ্গে স্বামীকে খুনের পরিকল্পনা, ব্যুমেরাং হল তরুণীর নিজের জীবনেই !

গোপন প্রেম বেশিদিন গোপনও থাকেনি

এই ঘটনা সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানায়! পরকীয়ায় ‘পথের কাঁটা’ সরাতে প্রেমিকের সঙ্গে স্বামীকে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু সেই ষড়যন্ত্র ব্যুমেরাং হয়ে এল তরুণীর নিজের জীবনেই। স্বামীর হাতে ‘খুন’ হতে হল তাকে।

হাড়হিম কাণ্ড ঘটানোর পর থানায় আত্মসমর্পণ করে স্ত্রীকে খুন করার কথা স্বীকার করেছে স্বামী। সোমবার গভীর রাতে ভয়াবহ ঘটনার‌ স্বাক্ষী সোনারপুরের মাহিনগর। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

জানা গিয়েছে, ক্যানিংয়ের হেরোভাঙা এলাকার বাসিন্দা বাপি গায়েন। বছর আটেক আগে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন প্রিয়াঙ্কাকে। বিয়ের পর বাপি পার্ক সার্কাসের একটি কারখানায় চাকরি পান। তারপর স্ত্রীকে নিয়ে সোনারপুরের মাহিনগরে একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকতে শুরু করেন। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ভাড়া বাড়ির পাশের ঘরে থাকতেন সুপ্রকাশ দাস ও তার স্ত্রী। জানা গিয়েছে, পাশাপাশি থাকার সুবাদে ধীরে ধীরে প্রিয়াঙ্কা ও সুপ্রকাশের মধ্যে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে গোপন প্রেম বেশিদিন গোপনও থাকেনি। বিষয়টি জানতে পারেন বাপি। তারপর থেকেই সংসারে অশান্তি শুরু হয়। এসবের মাঝে স্ত্রীকে নিয়ে ওই ভাড়াবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যান সুপ্রকাশ। তারপরও অবশ্য প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে তার সম্পর্ক বজায় ছিল।

অশান্তি থেকে বাঁচতে এবং পরকীয়ায় ‘পথের কাঁটা’ স্বামীকে সরাতে সুপ্রকাশের সঙ্গ নিয়ে বাপিকে খুনের ছক কষে প্রিয়াঙ্কা। কাকতালীয়ভাবে প্রিয়াঙ্কার ষড়যন্ত্রের কথা শুনে ফেলেন বাপি। এরপরই নিজেকে বাঁচাতে বাপি উলটে স্ত্রীকেই খুনের সিদ্ধান্ত নেয়। পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে এসব কথা নিজেই স্বীকার করেছে বাপি।

প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, সোমবার রাতে স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা ঘুমিয়ে পড়তেই তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন বাপি। স্ত্রীকে খুনের পর নিজের অপরাধ স্বীকার করে সোজা সোনারপুর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন । পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।

প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, বাপি-প্রিয়াঙ্কার মধ্যে মাঝেমধ্যেই অশান্তি হত। তবে এমন ঘটনা ঘটবে, তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। তদন্তে নেমে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পরকীয়া থেকেই এই পরিণতি। তদন্ত শুরু করেছে সোনারপুর থানার পুলিশ। শেষ পর্যন্ত তদন্ত কোন দিকে গিয়ে পৌঁছায় সেদিকেই তাকিয়ে সবাই।