বিশ্বজুড়ে প্রবল প্রতিক্রিয়ার মুখে সাময়িকভাবে পিছু হঠলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকার লাগামছাড়া শুল্ক আরোপের নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে সব দেশ। বিশ্বে মন্দার আশঙ্কা করছে একাধিক বিশেষজ্ঞ সংস্থা। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার নতুন শুল্কনীতি ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চিন ছাড়া বাকি সব দেশের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। অন্য দেশগুলিকে শুল্কে আপাতত স্বস্তি দিলেও চিনের উপর শুল্ক আগের চেয়ে আরও অনেকটা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

ট্রাম্প আগে ঘোষণা করেছিলেন, চিনা পণ্যের উপর ১০৪ শতাংশ হারে শুল্ক বসবে। বুধবার তা আরও বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ হারে চিনের উপর শুল্ক ধার্য্য হবে বলে জানিয়েছেন। এরপরই ক্ষুব্ধ বেজিং বলেছে, একতরফা সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে শুল্ক আরোপ করে তাদের ভয় দেখানো যাবে না। চিনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং এদিন জানান, যেকোনও নেতিবাচক ও বহিরাগত ধাক্কা সামলাতে ‘সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ’ দেওয়ার মতো নীতিগত ব্যবস্থা রয়েছে বেজিংয়ের কাছে। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের পর ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়নের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন চিনের প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে জানা যাচ্ছে, এবার ওষুধের উপরেও ‘বড়’ শুল্ক চাপাতে পারে আমেরিকা। ভারতের ওষুধজাত পণ্যের বৃহত্তম রফতানির বাজার আমেরিকাই। ট্রাম্প জানিয়েছেন, অদূর ভবিষ্যতে আমেরিকায় আমদানি করা ওষুধের উপরেও বড় শুল্ক আরোপ করা হবে। তাঁর যুক্তি, এর ফলে ওষুধ কোম্পানিগুলি তাদের ব্যবসা আমেরিকায় স্থানান্তরিত করতে উৎসাহিত হবে।

এর আগে ওষুধ এবং সেমিকন্ডাক্টরকে পারস্পরিক শুল্কনীতির আওতা থেকে দূরে রেখেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। কিন্তু দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই দুইয়ের উপরেও শুল্ক চাপাতে মরিয়া ট্রাম্প।


প্রসঙ্গত, ভারতের দেশীয় শিল্পগুলির মধ্যে ওষুধ উৎপাদন শিল্প আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের উপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল। আমেরিকাই ভারতের ওষুধজাত পণ্যের বৃহত্তম রফতানির বাজার। ফলে ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপের জেরে সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে এই শিল্পে। শিল্প সংস্থা ফার্মাসিউটিক্যালস এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া’র মতে, গত অর্থবর্ষে প্রায় ২৭.৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ওষুধ রফতানি করেছিল ভারত, যার মধ্যে ৩১ শতাংশই রফতানি হয়েছিল আমেরিকায়, যার বাজারমূল্য প্রায় ৮.৭ বিলিয়ন ডলার। গোটা বিশ্বে জেনেরিক ওষুধ রফতানিতে প্রথম সারিতে রয়েছে ভারত। বিশ্বের মোট জেনেরিক ওষুধের ২০ শতাংশ ভারত রফতানি করে। প্রায় ২০০টি দেশে ওষুধ রফতানি করে ভারতের বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা। ফলে নতুন মার্কিন নীতিতে ফের আরেক দফা ক্ষতির মুখে পড়তে পারে ভারতের রফতানি ব্যবসা।

আরও পড়ুন – লালবাজারে আটক বিজেপির আট বিধায়ক, রাজনৈতিক চিত্রনাট্য কটাক্ষ কুণালের

_

_

_

_

_

_