প্রথমে এসএসসি দফতরের সামনে। সেখানে কেউ প্রচার না করায় ফিরে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে হাজির হয় চাকরিহারা শিক্ষকদের (SSC teachers) একাংশ। সেখান থেকে আবার ওয়াই চ্যানেলে গিয়ে চাকরিহারা শিক্ষকদের পরিচয় হাতড়ানোর চেষ্টা করেন বিরোধী রাজনৈতিক দল প্রভাবিত শিক্ষকরা। সেখানেও তাঁদের পাশে নেই যোগ্য চাকরিহারাদের শিক্ষকদের বড় অংশ। কার্যত অনশন যে উদ্দেশ্যহীন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর (Bratya Basu) বৈঠকের পরই তা প্রমাণিত হয়ে যায়। আরও স্পষ্ট হয়ে যায় রাজনৈতিক প্ররোচনায় এক শ্রেণির শিক্ষক বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছিলেন, তা শিক্ষকদের বৃহৎ শ্রেণি বুঝতে পেরে গিয়েছে। এবার তাই অনশনই তুলে নিলেন তাঁরা। আদতে এভাবে যে কোনও সমাধান সূত্র মিলবে না, তাও বুঝে গিয়েছেন অনশনরত (hunger strike) শিক্ষকরা।

যাঁরা অনশন চালাচ্ছিলেন তাঁদের কী চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবি অন্য় যোগ্য (untainted) চাকরিহারা শিক্ষকদের মতোই ছিল। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী, এসএসসি দফতর, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সঙ্গে বৈঠকে আইনি পথে যে সমাধান সূত্র খুঁজছেন চাকরিহারা শিক্ষকরা, সেটা ছাড়া যে আর বিকল্প কোনও পথ নেই, তা হয়তো রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত শিক্ষক শ্রেণি এবার বুঝতে পেরেছে। কিন্তু অনশনের পথে এসে যাওয়ায় বড় অংশের শিক্ষক সমাজ (SSC teachers) বিচ্যুত তারা এখন। তাই বেশি দেরি হওয়ার আগে রবিবারই অনশন (hunger strike) তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁরা।

বিকাশ ভবনের বৈঠক শেষে চাকরিহারা শিক্ষকরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা অনশন করছেন না। রাজ্যের কাছে তাঁরা যোগ্য-অযোগ্য তালিকা চেয়েছেন। সেই সঙ্গে মিরর ইমেজ প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) আইনি পরামর্শ নিয়ে ২১ তারিখের পরে দুটি বিষয়ই প্রকাশ্যে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। রাজ্যের তরফ থেকে শিক্ষকদের কাছে রিভিউ পিটিশন সংক্রান্ত পরামর্শ চাওয়া হয়েছে। কোন কোন পয়েন্ট তুলে ধরলে পিটিশন মজবুত হওয়া সম্ভব তা জানাতে বলা হয় শিক্ষকদের।

এরপরই অনশনরত শিক্ষকদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায় তাঁরা উদ্দেশ্যহীনভাবে রাজ্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। পক্ষান্তরে অন্য শ্রেণি তালিকা প্রকাশ থেকে রিভিউ পিটিশনের (review petition) কাজ এগিয়ে ফেলেছে। ফলে মাত্র চারদিনেই অনশনের পথ থেকে সরে এলেন এবার শিক্ষকরা। পাল্টা নিজেরাই ড্রপ-বক্স বানিয়ে রিভিউ পিটিশনের জন্য় পরামর্শ দেওয়ার অনুরোধ জানালেন শিক্ষকদের কাছে। কার্যত এবার রাজ্যের দেখানো পথেই পা দিলেন তাঁরা।



তবে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির প্রভাবে গোটা প্রক্রিয়ায় যে সমস্যা তৈরি করতে চলেছেন এই শিক্ষকরা, তাও তাঁদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় স্পষ্ট। ১৭ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দায়ের করা আবেদনের শুনানি। যেখানে রাজ্যের পড়ুয়াদের কথা মাথায় রেখে ২৬ হাজার শিক্ষকদের চাকির বাতিলের রায় পুণর্বিবেচনার আবেদন জানানো হয়েছে। সেখানে নজর রাখছেন চাকরিহারা শিক্ষকরা। কারা এই আবেদনের প্রতিবাদ করছে, তাতেই স্পষ্ট হয়ে যাবে এরপরেও কারা চান না যোগ্য শিক্ষকরা চাকরি ফিরে পান। সেখানে ঠিক এই শুনানির আগের দিন ১৬ এপ্রিল থেকে দিল্লিতে আন্দোলনের ডাক দিলেন অনশন সমর্থক শিক্ষকরা। ১৬ এপ্রিল থেকে যন্তর মন্তরে অবস্থান বিক্ষোভ করে তাঁরা মামলা জটিল করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন, বলে আশঙ্কা এক শ্রেণির শিক্ষকদের।


–

–

–

–
–

–
