পহেলগাম হামলা পরবর্তীতে যে ছবি উঠে এসেছে, তাতে স্পষ্ট কাশ্মীরের স্থানীয়দের জন্যই মঙ্গলবার বৈসারন ভ্যালিতে (Baisaran) প্রাণ বেঁচেছেন বহু সাধারণ পর্যটকের। গোটা কাশ্মীর শুধু মোমবাতি নিয়ে মিছিল করে সহানুভূতি দেখিয়েই পাশে দাঁড়ায়নি। আটকে পড়া পর্যটকদের খাবার-জল দিয়ে এগিয়ে এসেছেন, বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও কাশ্মীরের মানুষের উপরই জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলে নিজেদের গোয়েন্দা ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা চালিয়েছে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক (MHA)। আদতে জঙ্গিদের কী চোখে দেখে বর্তমান কাশ্মীর, তা স্পষ্ট করে দিলেন জঙ্গি হিসাবে চিহ্নিত আদিল ঠোকারের (Adil Thokar) মা শাহজাদা বানো। ভারতীয় সেনার কাছে দাবি জানালেন তাঁর ছেলেকে যেন দেখলেই এনকাউন্টার (encounter) করা হয়।

আদিল ঠোকরকে স্কেচের মাধ্যমে চিনিয়ে দিয়েছিলেন বৈসরান ভ্য়ালিতে প্রাণে বেঁচে যাওয়া পর্যটকরা। এরপরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক গোয়েন্দা রিপোর্টে প্রমাণ পায় ভারতে কাজ শেষ করে ফের পাকিস্তানেই ফিরে গিয়েছে আদিল, যেখানে সে প্রশিক্ষণ নিয়ে জঙ্গিদের দলে নাম লিখিয়েছিল। ধরতে না পেরে অমিত শাহের দফতর ঝাল মেটাতে বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেয় আদিলের (Adil Thokar) বাড়ি। আলাদাভাবে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে আদিলের মায়ের।

একদিকে ছেলের পরিচয় জঙ্গি হিসাবে প্রকাশ্যে এসেছে। এরপর সেই ছেলের জন্যই বেঘর হতে হয়েছে। এত মৃত্যুর দায় এসেছে ছেলের উপর। এবার আদিলের মা চান যেন দেখলেই এনকাউন্টার (encounter) করা হয় আদিলকে। তিনি বলেন, যদি এই জঘন্য কাজে সত্যিই আমার ছেলের যোগ থাকে তাহলে ফোর্সের (Indian Army) অধিকার রয়েছে যা খুশি করার। তাকে এনকাউন্টার করতে চাইলে করতে পারে। যদি ও ওখানে ছিল, তবে ফোর্সের উচিত ছিল ওই জায়গাতেই তাকে এনকাউন্টার করে দেওয়া।

২০১৮ সালেই বাড়ি ছেড়ে চলে যায় আদিল, জানান মা শাহজাদা বানো। সেই চলে যাওয়ার পরে আর ফিরেও আসেনি। তারপর যোগাযোগও করা বন্ধ করে দিয়েছে। আদিলের কাছে তাঁর আবেদন সে যেন সারেন্ডার (surrender) করে। তার জন্য গোটা পরিবার প্রতিনিয়ত সেনার প্রশ্নের মুখে। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বাড়ি।

শনিবার সকালে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাঁদের জানানো হয়, তাঁরা যেন দ্রুত বাড়ি ছেড়ে দেন। বাড়িটিতে বিস্ফোরণ হবে। এরপর গোটা পরিবারকে নিরাপদ স্থানে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। চোখের সামনে ধ্বংস করে দেওয়া হয় বাড়ি। কার্যত ছেলের জন্য পথে এসে দাঁড়ানো শাহজাদা একদিকে ঘর হারিয়ে প্রশাসনের রোশের শিকার। অন্যদিকে কাশ্মীরে স্থায়ী শান্তিকামী মানুষের কাছেও তিনি কাছের মানুষ হতে পারেননি। তাই ছেলের শাস্তিই দাবি মায়ের।

–
–

–
–

–

–
