অন্যায়ের বিরুদ্ধে জুনিয়র চিকিৎসকদের লড়াইতে আগামীতেও পাশে, বার্তা শশী-কল্যাণ-কুণালের

আইনি লড়াইয়ে ন্যায়বিচার মেলে। তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের (junior doctors) আশ্বস্ত করে বলেন, আপনার নিশ্চিন্তে থাকুন৷ কোনও ভয় নেই, কেউ ক্ষতি করতে পারবে না

আরজি কর-কাণ্ডের সময়ে কুৎসা আর চক্রান্ত করে কিছু জুনিয়র ডাক্তারের কেরিয়ার শেষ করার চেষ্টা হয়েছিল। তখন সেই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়ান আইনজীবী তথা তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অনেক নেতৃত্ব। তাঁদের লড়াইয়ে ভর করে কলেজ এবং হস্টেলে ফেরেন সেই জুনিয়র ডাক্তাররা। কঠিন সময়ে পাশে থাকার জন্য রবিবার কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কেই (Kalyan Banerjee) বিশেষভাবে সংবর্ধনা জানাল ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন (WBJDA)। এদিন ছিল সংগঠনের রাজ্য কমিটির প্রথম বৈঠক। সেখানেই তাঁরা পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেই সঙ্গে পরামর্শ নিলেন সিনিয়রদের, কঠিন সময়ে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদও জানান তাঁদের। এদিনের বৈঠকের আয়োজনে ছিলেন পিএইচএ বা প্রোগ্রেসিভ হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের সভানেত্রী তথা মন্ত্রী ডাঃ শশী পাঁজা (Shashi Panja)। ছিলেন তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী, কঠিন সময়ে জুনিয়র ডাক্তারদের সমন্বয়কারী যুবনেতা মৃত্যুঞ্জয় পাল এবং বিভিন্ন জেলা থেকে আসা রাজ্য কমিটির সদস্যরা। এদিনের সভায় সাংগঠনিক আলোচনা করেন সদস্যরা। সংগঠনকে জেলায় জেলায় ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান নেতারা। সেই সঙ্গে কুৎসা ও অপপ্রচার রুখতে একজোট হওয়ারও ডাক দেন তাঁরা।

স্পষ্টভাবেই তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee) সিপিআইএম-বিজেপির দুরভিসন্ধির কথা উল্লেখ করে সেই কঠিন সময়ের কথা আরও একবার মনে করিয়ে দেন। তিনি বলেন, আর জি কর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সিপিআইএম সংগঠনের ডাক্তাররা, বিজেপির ডাক্তাররা, যারা তৃণমূল বিরোধী তারা যেভাবে ডাক্তার ছাত্রদের সাসপেন্ড (suspend) করানো, হস্টেল থেকে বের করে দেওয়ার দুর্বিসহ দিন দেখিয়েছে। মুখ খোলার কেউ ছিল না। কোনও প্রমাণ ছাড়াই কীভাবে একের পর এক ছাত্রকে কখনও সাসপেন্ড করা হচ্ছে, কাউকে হস্টেল থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। কেরিয়ার শেষ করার চক্রান্ত চলছিল। দুঃখের কথা, কিছু জুনিয়র ডাক্তারই (junior doctors) এই সব করছিল, আর এদের পিছন থেকে মদত দিচ্ছিল কিছু সিনিয়র ডাক্তার। এসব অন্যায় দেখে বসে থাকতে পারিনি। শেষে আইনি লড়াইয়ে ন্যায়বিচার মেলে। তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের (junior doctors) আশ্বস্ত করে বলেন, আপনার নিশ্চিন্তে থাকুন৷ কোনও ভয় নেই, কেউ ক্ষতি করতে পারবে না।

জুনিয়র চিকিৎসকদের (junior doctors) সংগঠনের পাশে দাঁড়িয়ে শশী পাঁজা (Shashi Panja) বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে রাজ্যে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বিরাট পরিবর্তন এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী চান সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা যেন প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছয়, সেই লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে। যারা স্বাস্থ্য পরিষেবায় রাজনীতি করতে চায়, বিঘ্ন ঘটাতে চায়, তাদের দূরে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে কুৎসার জবাব দিতে যৌথভাবে কাজ করার বার্তাও দেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য সকলের জন্য। চিকিৎসকরা বিবেচনা করেন না তার কোনও রাজনৈতিক পরিচয় আছে কিনা। এখানে কখনও দূষিত ফেনাইল, ওষুধের কথা আসবে। এই যে কুৎসা ও বদনাম করার যে চেষ্টা তার বিরুদ্ধে আপনাদেরকে সেই লড়াইটা করতে হবে সামনে থেকে। আমরা প্রোগ্রেসিভ হেলথ অ্যাসোসিয়েশন-ও (PHA) লড়াইটা করবে। আমরা যৌথভাবেই সেই লড়াইটা করব।

প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, আরজি করে ঘটে যাওয়া একটা জঘন্য ঘটনাকে সামনে রেখে মেডিক্যাল কলেজগুলোর বাইরে একটা রাজনীতি শুরু হয়েছিল আর এই ঘটনাকে অপব্যবহার করে কলেজগুলোর ভেতরে এক চক্রান্ত চলছিল, কিছু জুনিয়র ডাক্তারের কেরিয়ার শেষ করার চেষ্টা করছিল কয়েকটা চক্র। এরা অভয়াকে বলি দিয়ে, এদের কলেজ থেকে, হস্টেল থেকে বের করে দিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাইছিল। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার প্রয়োজন ছিল, আমরা সেটাই করেছি।