জঙ্গিমুক্ত কাশ্মীরের যে প্রচার নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর বিজেপি চালিয়েছে গোটা দেশজুড়ে, সেই বার্তা যে আদতে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে, সেই পর্দাই ফাঁস হয়েছে পহেলগাম হামলায় (Pahalgam attack)। এবার কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা (Farooq Abdullah) স্পষ্ট করে দিলেন কাশ্মীরের ভিতরেই দশকের পর দশক জঙ্গিরা নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তাবায়িত করে চলে। মৌলানা অফজল গুরু গ্রেফতারি ও মুক্তির প্রসঙ্গ টেনে স্মরণ করিয়ে দিলেন ফারুক। আর সেখানেই স্পষ্ট, কাশ্মীরে লুকিয়ে থাকা জঙ্গি হ্যান্ডলারদের খোঁজই পায়নি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক (MHA)। পাশাপাশি ফারুক দাবি করলেন কাশ্মীরের মানুষের স্বার্থবিরোধী যে সিন্ধু জল চু্ক্তি (Indus Water treaty) হয়েছিল তা যেন নতুন করে কাশ্মীরবাসীর কথা বিবেচনা করে নেওয়া হয়।
সিন্ধু জলচুক্তিতে আদৌ কোনও লাভ হয়নি জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের। পহেলগাম হামলা পরবর্তীতে ভারত সরকার এই জলচুক্তি বাতিল করার কার্যত আশার আলো দেখছেন কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা। ভারত জলচুক্তি নাকচ করলেও আদতে পাকিস্তানের মানুষকে জলের অভাবে রাখা হবে না বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। তবে নতুন করে এই জল চুক্তি হলে তাতে কাশ্মীরের মানুষের উপকার হবে বলেও তিনি দাবি করেন। আদতে নেহেরুর সময়ে এই জলচুক্তি হয়েছিল, তখন কাশ্মীরবাসীর কোনও বক্তব্য পেশের জায়গা রাখা হয়নি। তাই এবার ভারত জলচুক্তি ভাঙার পরে যেন নতুন করে চুক্তি করে কাশ্মীরের মানুষের কথা মনে রেখে, দাবি ফারুকের।
তবে যে যুদ্ধ জিগির ভারত ও পাকিস্তান প্রতিদিন তুলে চলেছে, তা আসন্ন বলে মনে না করলেও ফারুক আবদুল্লা বিশ্বাস করেন পাকিস্তানের পাপের ঘড়া পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন একেবারে সাধারণ মানুষ। তাই কোনওভাবেই যাতে যুদ্ধ না হয়, সেই বার্তা দেন ফারুক। সেই সঙ্গে স্মরণ করিয়ে দেন ভারত মহাত্মা গান্ধীর দেশ। পাকিস্তান হত্যার মতো জঘন্য কাজ করলেও ভারত সহনশীনতাই দেখাবে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ঘুরিয়ে সেই মোদি সরকারের ব্যর্থতাকেই তোপ দেগেছেন কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। ১৯৯৪ সালে কাশ্মীরের অনন্তনাগ এলাকা থেকে মৌলানা মাসুদ আজাহারকে (Masood Azhar) গ্রেফতার করেছিল কাশ্মীর পুলিশ। তার পরেও বিমান হাইজ্যাকের ঘটনায় মুক্তি দিতে হয় সেই আজাহারকে। সেই ঘটনা স্মরণ করিয়ে ফারুক আবদুল্লার দাবি, সেই সময় মৌলানা মাসুদকে (Masood Azhar) গ্রেফতার করতে বেগ পেতে হয়েছিল তাঁদের, কারণ সেখানেও স্থানীয় মদতে আশ্রয়ে ছিল আজাহার। এবারেও তাই জঙ্গিদের আশ্রয় দিতে স্থানীয় মানুষের সাহায্য যে অবশ্যই রয়েছে, তেমনটাই দাবি করেন প্রাক্তন কাশ্মীর মুখ্যমন্ত্রী।
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–