বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারে সরব হয়েছিল ভারত। অথচ দেখা যাচ্ছে ক্ষমতা হস্তান্তর হওয়া বাংলাদেশেও গণমাধ্যমের (mass media) স্বাধীনতা ভারতের থেকে বেশি। যেভাবে ভারতের একের পর এক গণমাধ্যম সংস্থা ব্যবসায়ীদের নির্দেশে, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে ইতিবাচক প্রচারে মগ্ন, তাতে ভারতের গণমাধ্যমের স্বাধীনতার (press freedom) অবস্থান আগে থেকে ভালো হলেও, আদতে তা দেশের গণতন্ত্রের পক্ষে সুখকর নয়।

সম্প্রতি একটি বেসরকারি ফরাসি সংস্থার সমীক্ষায় প্রকাশিত হয়েছে বিশ্বের ১৮০টি দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বর্তমান পরিস্থিতি। এই ১৮০ টি দেশের মধ্যে ভারতের অবস্থান ১৫১ নম্বরে। যদিও পরিসংখ্যান বলছে ভারতের অবস্থান ছিল ১৫৯ নম্বরে। ফলে এটাকে উন্নতি বলে ধরা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ ১৬ ধাপ এগিয়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় (press freedom) ১৪৯ নম্বরে অবস্থান করছে। অর্থাৎ যে বাংলাদেশের উপর দেশবাসীর স্বাধীনতা দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ভারত, সেই বাংলাদেশে অন্তত সংবাদ মাধ্য়মের স্বাধীনতা ভারতের থেকে বেশি।

ভারতের এই অবস্থানে থাকার কারণও তুলে ধরা হয়েছে সমীক্ষা চালানো ফরাসি সংস্থার পক্ষ থেকে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, বাস্তবে ভারতের সংবাদ মাধ্যমগুলি জরুরি অবস্থার (unofficial state of emergency) মধ্যে দিয়ে চলেছে। তার কারণ হিসাবে ২০১৪ সালে ভারতের নরেন্দ্র মোদির জমানা প্রতিষ্ঠা হওয়াকে তুলে ধরা হয়েছে। সেই সময় থেকেই ভারতের একাধিক প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমে চলে গিয়েছে দেশের বড় শিল্পপতিদের হাতে। আর সেই শিল্পপতিরা ভারতের কেন্দ্রের সরকারকে তুষ্ট করতে কেন্দ্রের তাবেদারিমূলক খবরই প্রকাশ করে চলেছে। ফলে কেন্দ্রের সরকারের এক নায়কতন্ত্রই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ভারতের গণমাধ্যমগুলিতে।

মূলত ভারতে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা, মালিকানার কেন্দ্রীভূত হয়ে যাওয়া, একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের প্রতি আনুগত্য ও সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ – এই কারণেই তলানিতে দেশের সংবাদ মাধ্যম, দাবি রিপোর্টে। বিশ্বের সব থেকে বড় গণতন্ত্রে গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় যেভাবে হস্তক্ষেপ করা হয়েছে তাকে ‘গুরুতর’ বলেই রিপোর্টে দাবি।

সাম্প্রতিক বাংলাদেশে রাজনীতিক, শিল্পী, শিক্ষাকর্মী থেকে সাংবাদিকদের উপর শাসকের খাঁড়া নেমেছে। তা সত্ত্বেও সংবাদ প্রকাশের নিরিখে বিচার করেই ১৬ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। তালিকায় ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে ভারতের পিছনে রয়েছে পাকিস্তান, তাদের অবস্থান ১৫৮ নম্বরে। ভুটানের অবস্থান ১৫২ নম্বরে। এছাড়া শ্রীলঙ্কা, নেপাল থেকে মালদ্বীপও ভারতের থেকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার অবস্থানে এগিয়ে। নেপাল রয়েছে ৯০তম, শ্রীলঙ্কা ১৩৯তম ও মালদ্বীপ ১০৪তম স্থানে রয়েছে।

–

–

–

–

–

–
–
–
–