Saturday, November 15, 2025

রাষ্ট্রপতি শাসন! রাজ্যপালের সামশেরগঞ্জ-রিপোর্ট বিজেপি-কে খুশি করতে, তোপ তৃণমূলের

Date:

Share post:

মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জে অশান্তির প্রায় একমাস পার। জনজীবন স্বাভাবিক করে স্থানীয় মানুষ নিত্যদিনের কাজ থেকে ব্যবসা বাণিজ্য স্বাভাবিক করেছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে পরিস্থিতি ঘোরালো করার চেষ্টা রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের (Governor C V Ananda Bose)। তিনি নিজে যে সামশেরগঞ্জে গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলে এসেছিলেন, সেই সামশেরগঞ্জ (Samsherganj) নিয়ে এতদিন পরে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে রিপোর্ট পেশের কথা মনে পড়ল রাজ্যপাল বোসের। সেই রিপোর্টে আবার রাষ্ট্রপতি শাসনের (President rule) উল্লেখ রয়েছে। যা থেকে স্পষ্ট, বিজেপির প্ররোচনার রাজনীতিতে পা দিয়েই বিজেপি নেতাদের খুশি করতে রিপোর্ট পেশ বাংলার রাজ্যপালের, দাবি রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের।

ওয়াকফ আইন বিরোধী আন্দোলন ঘিরে উত্তপ্ত হয় মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ, সুতি এলাকা। এরপর রাজ্য পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক ধরপাকড়ও শুরু করে। বেতবোনা গ্রামের যে সব পরিবার অশান্তির উস্কানিতে মালদহে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাঁরাও ঘরে ফিরে আসেন। তাঁদের ভাঙা-পোড়া ঘর তৈরির জন্য প্রাথমিক অর্থ সাহায্য নিয়ে পাশে দাঁড়ান একাধিক তৃণমূল সাংসদ। সেই পরিস্থিতিতেও মালদহের আশ্রয় শিবির ও সামশেরগঞ্জের গ্রামে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। সেই সময় তিনি বার্তা দিয়েছিলেন, রাজ্যের সরকার যেভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে তা যথাযথ। ঘটনার নিন্দা করেও সদর্থক পদক্ষেপের পক্ষে ছিলেন রাজ্যপাল।

১৯ এপ্রিল মুর্শিদাবাদ থেকে ঘুরে এলেও এতদিনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে (MHA) রিপোর্ট পেশ করলেন রাজ্যপাল (Governor C V Ananda Bose)। সেখানে তাঁর দাবি, পরিস্থিতি যদি আবার খারাপ হয় তবে সেখানে ৩৫৬ ধারা, অর্থাৎ রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে গ্রামগুলিতে বিএসএফ পোস্ট ও আরও বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সুপারিশ করেন তিনি। এই রিপোর্ট স্বাভাবিকভাবেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি তৃণমূলের। রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ দাবি করেন, রাজ্যপাল যে রিপোর্ট দিয়েছে সেটা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। তিনি তাঁর পলিটিকাল অ্যাসাইনমেন্ট জনিত কারণে রিপোর্ট দিয়েছেন।

তার কারণ হিসাবে কুণাল উল্লেখ করেন, প্রথমত তিনি জানেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। সেখানে ‘অবনতি যদি হয়’ – এই কথাগুলো আসে না। দুই, রাজ্যপাল জানেন ওই সীমান্ত বর্তী এলাকায় সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব বিএসএফ-এর (BSF)। সেটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের (MHA) যেটা দেখেন অমিত শাহের। যদি ওপাশ থেকে এপাশে হামলাকারীরা এসে উস্কানি দেয়, সেটা দেখার দায়িত্ব বিএসএফ-এর, যারা তাদের দায়িত্ব সীমান্ত রেখা থেকে ১৫ থেকে ৫০ কিমি করে নিয়েছে।

সেই সঙ্গে রাজ্যপালের নিজের দায়িত্ব পালন না করে রাজ্যকে কলুষিত করার অভিযোগও তোলেন তিনি। তাঁর স্পষ্ট দাবি, বিএসএফ-কে (BSF) সঠিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। সেই সুপারিশের বদলে তিনি বাংলাকে ইঙ্গিতপূর্ণ কলুসিত করলেন। বিজেপিকে খুশি করার মতো ইঙ্গিত করেছেন ‘যদি’ ‘কিন্তু’ লাগিয়ে। এটা একটা রাজনৈতিক পত্র, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে লেখা।

spot_img

Related articles

রাজ্যে আসন্ন WBCS পরীক্ষা: জারি বিজ্ঞপ্তি

প্রকাশিত হল ডব্লুবিসিএস-এর পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি। পশ্চিমবঙ্গ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (PSC, WB) বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, ২০২৬ সালের মার্চ...

পরিবারে SIR আতঙ্কে মৃত্যুর ছায়া, চাকরির আশ্বাস দিয়ে পাশে তৃণমূল

এসআইআর আতঙ্কে আত্মঘাতী বাবা। অসহায় পরিবার। কী করে হবে দিন গুজরান? ভিটেমাটি চলে যাবে না তো? এসব আতঙ্ক...

গণমাধ্যমই সাঁটিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশী তকমা! জবাব দিতে তৈরি বাংলা

পেশায় শ্রমিক। পেটের দায়ে তারা নানা জায়গায় ছোটেন। কাজের তাগিদে অন্যত্র গেলেই একশ্রেণির মিডিয়া চিৎকার করে ওঠে, ওই...

বিহারের ফলাফলে বাংলা নিয়ে মোদির স্বপ্ন ‘সেগুড়ে বালি’: ধুইয়ে দিল তৃণমূল

একদিকে যখন বিহারে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হচ্ছে, তখন বাংলার বিজেপি নেতারা হঠাৎই আবির খেলা, মিষ্টিমুখে মেতে উঠেছেন। ফলাফল...