Thursday, August 21, 2025

আর জি করের ধাঁচে ক্রাউড ফান্ডিং! ৮ কোটির হিসাব নেই শিক্ষকদের কাছে

Date:

Share post:

চাকরিহারাদের আন্দোলনেও সেই আরজি কর স্টাইল। একইরকমভাবে ক্রাউড ফান্ডিং (crowd funding) করে আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে ময়দানে নেমেছে মাও-মাকুরা। সেখানে ইন্ধন রয়েছে বাম-বিজেপিরও। জনগণের সিমপ্যাথি আদায় করে তহবিল গঠন করে ইতিমধ্যেই তোলা হয়েছে ৮ কোটি টাকা। সেই টাকার কোনও হিসেব নেই। খরচ-বহির্ভূত টাকা কোথায় আছে, তারও কোনও হদিশ নেই।

শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের নাম দিয়ে হাওড়া শিবপুরের ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কে সম্প্রতি একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। সেখানে বিন্দু বিন্দু করে সিন্ধু তৈরি করা হয়েছে। ঠিক যেমনটি হয়েছিল আরজি কর আন্দোলনের ক্ষেত্রে। সেক্ষেত্রে যেমন জুনিয়র ডাক্তারদের নেতা সেজেছিলেন মাও-মাকু ব্রিগেড, তেমনি ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলের (SSC teachers) চাকরি হারানো শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অশিক্ষক কর্মচারীদেরও নেতা সেজে কোটি কোটি টাকা তাঁরা তুলছেন জনতা তহবিল থেকে। রাজ্য তথা দেশের সর্বত্র তো বটেই, আন্তর্জাতিক স্তরেও কিউআর কোড (QR code) পাঠিয়ে তাঁরা কোটি কোটি টাকা ক্রাউড ফান্ডিং (crowd funding) করছেন সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) আইনি লড়াইয়ের ইস্যুকে সামনে রেখে। এখনই ফান্ডিং ৮ কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। অঙ্কটা ১১ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ।

চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের পক্ষ থেকে অধিকার মঞ্চ নাম দিয়ে সকলের কাছে ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। ঠিক কত টাকা তোলা হয়েছে, তা সুস্পষ্ট নয়। আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশই ক্রাউড ফান্ডিংয়ের উল্লেখিত অঙ্কটি জানিয়েছেন। টাকা তুলে আন্দোলনকে হিংসাত্মক পথে পরিচালিত করতে নকশাল পন্থী সিপিআইএমএলের দুই নেতা সক্রিয়‌। তাঁদের নির্দেশেই এই ক্রাউড ফান্ডিং বলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের অভিযোগ।

উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ বাংলার প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক শিক্ষিকা এবং অ-শিক্ষক কর্মচারীর নিয়োগ বাতিল করে দেয়। তারপর থেকেই রীতিমতো হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে চাকরি হারানো শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছ থেকে টাকা তোলার অভিযান শুরু করেন আন্দোলনকারীদের একাংশ।

শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের অভিযোগ, ৮ হাজার চাকরিহারা নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক-শিক্ষিকার কাছ থেকে তিন দফায় মাথাপিছু মোট ৬৫০০ টাকা করে তোলা হয়েছে। সেই টাকার মোট পরিমাণ ৫ কোটি ২০ লক্ষ। এছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারানো একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির প্রায় ৩ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাদের কাছ থেকে তিন দফায় মাথাপিছু মোট ১০০০০ টাকা করে তোলা হয়েছে। এইভাবে প্রায় ৩ কোটি টাকা তোলা হয়েছে ক্রাউড ফান্ডিংয়ে। প্রায় ৮ কোটি টাকার মধ্যে গত কয়েকদিনে বিকাশ ভবন অভিযান ও সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) রিভিউ পিটিশনের জন্য আইনজীবীদের পেছনে নাকি খরচ হয়ে গিয়েছে প্রায় ৫-৬ কোটি টাকা।

গত বৃহস্পতিবার আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিকাশ ভবন অভিযান হিংসাত্মক রূপ নেয় মাও-মাকু ব্রিগেডের উস্কানিতে। এরপরই মাওমাকু নেতাদের নেতৃত্ব মানতে অস্বীকার করেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একটা বড় অংশ। তাঁরা দাবি তোলেন, এতদিন যে টাকা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে কিউআর কোডের (QR code) মাধ্যমে
তাঁরা জমা দিয়েছেন, তা ফেরত দিতে হবে। সেই টাকায় তাঁরা পৃথক আইনজীবী নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে
লড়াই করবেন। সমস্যা তৈরি হয় এরপরই‌। বিপুল অংকের এই টাকার হিসেব কে দেবে এবং কার কাছে বাকি টাকা রয়েছে, তা নিয়েই শুরু হয়েছে চাপান-উতোর।

spot_img

Related articles

যোগীরাজ্যের পাঠ্যপুস্তকে বাদ কেন রবীন্দ্রনাথকে? সাংসদ ঋতব্রতর প্রশ্নে অস্বস্তিতে কেন্দ্র

উত্তরপ্রদেশের দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে কি বাদ দেওয়া হয়েছে? তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নে স্পষ্টতই...

প্রয়াত সিপিএম নেতা-প্রাক্তন মন্ত্রী দীনেশচন্দ্র ডাকুয়া

প্রয়াত সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা দীনেশচন্দ্র ডাকুয়া। বুধবার এনআরএস হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।...

উপাচার্য নিয়োগের ইন্টারভিউয়ে ডাক মেলেনি! শীর্ষ আদালতে শান্তা দত্ত 

স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের ইন্টারভিউ পর্বে ডাক পাননি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত। যোগ্য হয়েও তাঁকে সুযোগ দেওয়া...

১৫ দিনেই রেকর্ড সাফল্য! রাজ্যে সাড়া ফেলল ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচি

মাত্র পনেরো দিনেই নজির গড়ল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতুন কর্মসূচি, ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’। রাজ্যের মানুষের হাতে উন্নয়নের...