মুখ্যমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবং মস্তিষ্কপ্রসূত যুগান্তকারী বিভিন্ন উদ্যোগে বাংলা আজ হয়ে উঠেছে শিল্পবান্ধব। এসেছে বিনিয়োগের জোয়ার। সোমবার শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ শিল্প সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরের শিল্পে নয়া দিগন্তের সূচনা করলেন। বিভিন্ন মানোন্নয়নকারী উদ্যোগকে সামনে এনে তিনি পুনরায় প্রমাণ করলেন বাংলার অগ্রগতি ধ্বজাধারী একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।

সোমবার শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চে শিল্প সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিল্পের জন্য সরকারের নিজস্ব জমি ব্যাঙ্ক রয়েছে। প্রচুর দক্ষ শ্রমিকও রয়েছে। ছোট ছোট শিল্পেও অনেক কর্মসংস্থান হয়। তাই ভারী এবং ক্ষুদ্র দু’ধরনের শিল্পেই আমরা সমান গুরুত্ব দিচ্ছি। এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, উত্তরবঙ্গে অনেকে ঘুরতে আসেন, তাঁদের থাকার জন্য একটি কনভেনশন সেন্টার তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেজন্য ১০ একর জমি দেওয়া হচ্ছে। ব্যবসায়িক আদানপ্রদান, বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কর্মসূচির জন্য ব্যবহৃত হবে এই কনভেনশন সেন্টার। একই সঙ্গে উত্তরে একাধিক লজিস্টিক হাব গড়ে তোলার কথাও বলেন তিনি। সেজন্যও ইতিমধ্যে জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উত্তরায়ণে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার তৈরির পাশাপাশি ৫ একর জমির উপরে ১৫০০-২০০০ লোক থাকার মতো হোটেল তৈরি করা হচ্ছে। আরও হোমস্টে ও কটেজ তৈরি হচ্ছে। উত্তরবঙ্গে গজলডোবা, ভোরের আলো থেকে শুরু করে বেঙ্গল সাফারি হয়েছে। সবটাই উত্তরবঙ্গের মানুষের জন্য ঢেলে সাজিয়েছে আমাদের সরকার। এদিকে জলপাইগুড়িতে তৈরি হচ্ছে কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ। ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে তা তৈরি হচ্ছে।

এছাড়াও উত্তরের উন্নয়নে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায় ওয়েবেল পার্কে তৈরি হচ্ছে ডেটা সেন্টার। এছাড়াও জল্পেশ মন্দিরের স্কাইওয়াক তৈরিতে বরাদ্দ করা হয়েছে পাঁচ কোটি টাকা। ১২৩ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৪টি নতুন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক তৈরি করা হয়েছে। আমবাড়ি ফালাকাটা, ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি, আলিপুরদুয়ার ও জয়গাঁতে তৈরি সেই পার্কগুলির উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। উত্তরের শিল্পে লগ্নি হবে ৯ হাজার কোটি টাকা।

এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, দার্জিলিং ঘিঞ্জি হয়ে গিয়েছে। তাই নতুন দার্জিলিং বানান। কালিম্পং, কার্শিয়াং— সব কিছুরই এক্সপ্যানশন করুন। এই কাজ আপনাদেরই করতে হবে। আমরা পাশে আছি। ইদানীং দার্জিলিং ব্র্যান্ড ব্যবহার করে পড়শি দেশ চা-এর ব্যবসা করছে। বিষয়টা জানি। ওরা ভেজাল মিশিয়ে ব্র্যান্ডের নাম ব্যাবহার করে ব্যবসা করছে। টাস্ক ফোর্স তৈরি করে দিয়েছি। ওরা বিষয়টা দেখছে। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখন অরগ্যানিকের যুগ। অনেকেই সকালে গরম জল আর মধু খান। ওতে চা মিশিয়ে দিন, লেবু দিন। হয়ে গেল লেমন হানি টি।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গের ৬টি জেলা থেকে দিঘাগামী ৬টি ভলভো বাসের উদ্বোধন হবে। শিলিগুড়ি, মালদহ, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং রায়গঞ্জ— এই ৬টি জায়গা থেকে প্রতিদিন দিঘার উদ্দেশে রওনা দেবে ভলভো বাস। উত্তরবঙ্গের কথা ভেবেই এই উদ্যোগ। তাঁর সাফ কথা, কোনও কাজ ফেলে রাখবেন না। কিছু মাথায় এলে আমি চিরকুটে লিখে রাখি। সেটা না হওয়া পর্যন্ত থামি না।

আরও পড়ুন – সরকার আইনি পথে কাজ করছে! ধৈর্য ধরুন, আশ্বাস শিক্ষামন্ত্রীর
_

_
_

_

_

_

_

_

_
