বর্ষা প্রবেশের আগেই সেচ ও জলপথ দফতর রাজ্য জুড়ে বন্যা মোকাবিলায় প্রায় দেড়শো কোটি খরচে প্রস্তুতি রাজ্যের সেচ দফতরের (Irrigation Department)। রাজ্যের সেচ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া (Manas Bhuniya) শুক্রবার জানিয়েছেন রাজ্যের প্রায় ৪৩ শতাংশ এলাকাই বন্যাপ্রবণ। সেই বাস্তবতাকে মাথায় রেখে বর্ষার আগে ১৪৫ কোটি টাকার বেশি খরচ করে ১১৬টি জলাধার ও বাঁধ (embankment) মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি বন্যাপ্রবণ এলাকায় কেন্দ্রীয় ও জেলা স্তরে নতুন বন্যা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র চালু হয়েছে।

আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী উত্তরবঙ্গে বর্ষা (monsoon) ঢুকেছে ২৯ মে, দক্ষিণবঙ্গে ঢোকার সম্ভাবনা রয়েছে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে। এবার রাজ্যে গড়ের তুলনায় ৫-৬% বেশি বৃষ্টির আশঙ্কা, যদিও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, হুগলি-সহ কয়েকটি জেলায় বৃষ্টির ঘাটতির সম্ভাবনাও জানাচ্ছে আইএমডি (IMD)।

সেচ দফতর সূত্রে খবর, রাজ্যে মোট ১০হাজার ৫৮৪ কিমি নদীবাঁধ রয়েছে। যার মধ্যে ১ হাজার ৫২৯ কিমি বাঁধ ইতিমধ্যেই ইট, কংক্রিট বা বোল্ডার দিয়ে সুরক্ষিত করা হয়েছে। রয়েছে ৬৭ কিমি সমুদ্রবাঁধ, ৮৪০৯ কিমি নিকাশি খাল, ২৮০০টি সুইস ও ১৯টি পাম্পিং স্টেশন। ২০২৪-র বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১ হাজার ৯৯১টি নদী বাঁধ (river embankment) ও ৪৮টি সমুদ্রবাঁধ এলাকা, আর ভেঙে যাওয়া ১৪২টি বাঁধের মেরামতির কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের উপকূলে নিম্নচাপজনিত কারণে ইতিমধ্যেই উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বহু জায়গায় নদী বাঁধ ভেঙেছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ৫ কোটি টাকার জরুরি মেরামতির কাজ হাতে নিয়েছে রাজ্য।

জলাধার থেকে আচমকা জল ছাড়ার কারণে যাতে বন্যা না হয়, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ডিভিসি (DVC), ডিভিআরআরসি, সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ার ও সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিবদের বৈঠক হয়েছে ২৬ এপ্রিল, মুখ্যসচিবের পৌরহিত্যে। পাশাপাশি জলসম্পদ ভবনে চালু হয়েছে কেন্দ্রীয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ,এবং রাজ্যজুড়ে ৩৭টি রিজিয়নাল ও ডিভিশনাল কন্ট্রোল রুমও। জরুরি পরিস্থিতিতে মাঠ পর্যায় থেকে তথ্য পৌঁছে দিতে ১৯৮টি বন্যাপ্রবণ ব্লকে তৈরি করা হয়েছে কুইক রেসপন্স টিম (QRT)।

এদিকে কলকাতা পুরসভার সঙ্গে যৌথ সমীক্ষায় শহরের নিকাশি খালগুলির সমস্যা চিহ্নিত করে চলছে পরিষ্কারের কাজ। ১২৩৩ কিমি খালে চলছে চুক্তিভিত্তিক পরিচ্ছন্নতা। রাজ্যের দাবি, কেন্দ্রীয় জল আয়োগ,আবহাওয়া দফতর,ডিভিসি (DVC), ফারাক্কা ব্যারেজ (Farakka barrage) কর্তৃপক্ষ সহ সমস্ত কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় রেখে এবারের বর্ষা মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে।

–

–

–

–

–

–
–
–
–