উত্তর থেকে দক্ষিণ, প্রবল বৃষ্টির কবলে ভারতের একাধিক রাজ্য। সময়ের আগেই কেরালায় বর্ষা (Monsoon ) ঢুকেছে। মুম্বই, পুণে-সহ উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে ভারী বর্ষণের জেরে বিপর্যস্ত জনজীবন। ব্যাহত হয়েছে গণপরিবহন ব্যবস্থাও। বন্যায় ভাসছে অসমের (Flood like situation in Assam) বিস্তীর্ণ এলাকা। ধসে ভেসে গিয়েছে অসম এবং মেঘালয়ের সংযোগকারী ১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের একাংশ। এর ফলে তুরা থেকে গুয়াহাটি পর্যন্ত সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। গত দুদিনে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে শুধুমাত্র বৃষ্টির কারণেই মৃতের সংখ্যা তিরিশ ছাড়িয়েছে। দফায় দফায় ধস, মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং হড়পা বানে বহু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে উত্তর সিকিম (North Sikkim)। ধস আর বৃষ্টির জেরে জায়গায় জায়গায় আটকে পর্যটকরা। শনিবার থেকেই সব গাড়ির পারমিট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রবিবার সকালেও পরিস্থিতির এতোটুকু বদল ঘটেনি। ফুঁসছে তিস্তা (Teesta), যেকোনও মুহূর্তে জল বিপদসীমা ছাপিয়ে যেতে পারে! ব্রহ্মপুত্রের জলস্তর অনেকটা বেড়ে গিয়েছে বলে দাবি স্থানীয় প্রশাসনের।

একটানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত মহারাষ্ট্র। মুম্বইয়ের (Mumbai) কুরলা, সায়ন, দাদর ও পারেল-সহ বেশ কয়েকটি এলাকা জলমগ্ন। রেললাইনে জল জমে যাওয়ায় সেন্ট্রাল, ওয়ের্স্টান ও হারবর লাইনে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত কর্ণাটকের বিস্তীর্ণ এলাকা, এখনও পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। চিন্তা বাড়াচ্ছে উত্তর সিকিম। মৌসম ভবন জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিন সেরাজ্যে আরও বৃষ্টিপাত হবে। ভারী বৃষ্টিতে ইতিমধ্যেই ভেসে গিয়েছে সিকিমের ফিদাং গ্রাম। পাশাপাশি আবার ভুটান পাহাড়ে অতিভারী বর্ষণের সতর্কতা জারির ফলে উত্তরের ডুয়ার্স এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

একনাগাড়ে বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি অসম জুড়ে। ভেসে গেছে ১২টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত ৬০ হাজারের বেশি মানুষ। মৃতের সংখ্যা ১০। বন্যা দুর্গতদের উদ্ধার কাজে নেমেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ব্রহ্মপুত্রের জলস্তর অনেকটা বেড়ে গিয়েছে বলে দাবি স্থানীয় প্রশাসনের। অনেকে বলছেন, বৃষ্টি চলতে থাকলে শীঘ্রই বিপদসীমার উপর দিয়ে বইতে শুরু করবে ব্রহ্মপুত্র। গত ৬৭ বছরের রেকর্ড ভেঙে শনিবার গুয়াহাটিতে ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আগামী দু-তিন দিনে বৃষ্টি বাড়বে বলে সতর্ক করেছে আইএমডি (IMD)।

ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত মনিপুর, মিজোরাম এবং অরুণাচল প্রদেশ। উত্তর-পূর্বের এই তিন রাজ্যে ভূমিধসের পাশাপাশি একাধিক জায়গায় তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। প্রবল বৃষ্টির জেরে মিজোরামে মোট পাঁচটি হোটেল ধসে গিয়েছে। একাধিক পর্যটকের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অরুণাচল প্রদেশে শনিবার মেঘভাঙা বৃষ্টিতে মোট ন’জনের মৃত্যু হয়েছে।তাঁদের মধ্যে সাত জন একটি গাড়িতে ছিলেন।পূর্ব কামেঙের রাস্তা দিয়ে গাড়িটি যাচ্ছিল। বৃষ্টিতে আচমকা রাস্তাটি ধসে যায়। জলের তোড়ে ভেসে যায় ওই গাড়ি। পাশে গভীর খাদে গিয়ে পড়ে। অরুণাচলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মামা নাটুং এই ঘটনায় সমাজমাধ্যমে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। জিলোতে ক্যাবেজ গার্ডেন এলাকা এবং নিকটবর্তী পাইন গ্রোভে ধস নামাই শনিবার আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আগামী তিন-চার দিনে দেশের একাধিক রাজ্যে বৃষ্টির দুর্যোগ বাড়বে বলে জানিয়ে দিয়েছে মৌসম ভবন (IMD)।


–

–
–

–
–

–

–

–

–

–

–

–

–