রাজ্যের পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তন আনতে অভিনব উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার। উন্নয়ন ও নাগরিক পরিষেবা সহ একাধিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পাওয়া পঞ্চায়েতগুলিকে এবার ‘লার্নিং সেন্টার’ হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। এই কেন্দ্রগুলিতে পিছিয়ে থাকা ও দুর্বল পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিরা প্রশিক্ষণ নেবেন।
রাজ্য জুড়ে ইতিমধ্যেই শতাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতকে বেছে নেওয়া হয়েছে, যারা নিজেদের দক্ষতা ও কর্মক্ষমতার নিরিখে প্রশংসিত। রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা ২-৩ দিন এই লার্নিং সেন্টারে থেকে বাস্তব অভিজ্ঞতার মাধ্যমে উন্নয়নের কৌশল শিখবেন। প্রশিক্ষণ শেষে তাঁরা নিজ নিজ এলাকায় ফিরে সেই মডেল অনুসরণ করে উন্নয়নমূলক কাজ চালাবেন।
লার্নিং সেন্টার পঞ্চায়েতগুলিতে অতিথি জনপ্রতিনিধিদের জন্য গ্রামবাসীদের বাড়িতে হোম-স্টে-র মতো থাকার ব্যবস্থা করা হবে। থাকা-খাওয়া ও প্রশিক্ষণের যাবতীয় খরচ বহন করবে ওই পঞ্চায়েত। এই উদ্যোগটি বাস্তবায়িত হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘রাষ্ট্রীয় গ্রাম স্বরাজ অভিযান’ প্রকল্পের আওতায়। ইতিমধ্যেই প্রত্যেক জেলাকে পাঠানো হয়েছে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (SOP), যেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে কীভাবে এই লার্নিং সেন্টার চালাতে হবে।
প্রশিক্ষণের মূল বিষয়বস্তু:
• গ্রাম পঞ্চায়েত ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান তৈরি
• জীবিকা উন্নয়ন
• দৈনন্দিন প্রশাসনিক দক্ষতা
• কম খরচে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন
• শিশুবান্ধব গ্রাম গড়ে তোলা
• স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিতকরণ
দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমান-সহ একাধিক জেলায় লার্নিং সেন্টার গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। প্রত্যেক জেলার প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, নির্বাচিত পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (DPR) ও পরিকল্পনা দপ্তরে জমা দিতে হবে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য, রাজ্যের প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতকে স্বনির্ভর ও দক্ষ করে গড়ে তোলা। একই সঙ্গে পঞ্চায়েত স্তরের প্রশাসন ও পরিষেবা ব্যবস্থার সামগ্রিক মানোন্নয়ন ঘটানো। ‘গুরু’ পঞ্চায়েতদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পিছিয়ে পড়া অঞ্চলগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা কার্যত নতুন দিশা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে প্রশাসনিক মহলে।
আরও পড়ুন – তথ্য গোপন! ওয়েনাড় সাংসদ প্রিয়াঙ্কাকে নোটিশ কেরালা হাইকোর্টের
_
_
_
_
_
_
_
_