আহমেদাবাদে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে যান আমেরিকার বাসিন্দা বিশ্বাসকুমার রমেশ। তিনি বিমানের ১১এ নম্বর আসনে, ইমার্জেন্সি এক্সিটের পাশে বসে ছিলেন। সেই থেকেই দেশজুড়ে এক অভূতপূর্ব মনস্তাত্ত্বিক প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে—সবাই চাচ্ছেন বিমানে উঠলেই ১১এ সিট!

এই প্রবণতা নিয়ে চমকে গিয়েছেন ট্র্যাভেল এজেন্টরা। কলকাতা, মুম্বই থেকে শুরু করে দিল্লি, চেন্নাই—প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী যোগাযোগ করছেন শুধুমাত্র এই প্রশ্ন নিয়ে—”১১এ সিট পাওয়া যাবে?”

ট্র্যাভেল এজেন্ট ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার জাতীয় কমিটির সদস্য অনিল পাঞ্জাবি জানিয়েছেন, “ইমার্জেন্সি এক্সিটের সিটগুলো সবসময় একটু বেশি দামের হয়, কিন্তু এখন তো অনেক যাত্রী ১১এ-র জন্য দ্বিগুণ দিতেও রাজি। এটা একেবারে নতুন ট্রেন্ড।”

কলকাতার এক ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লায়ার রাজেশ ভাগনানি বলেন, “জানি জীবন-মৃত্যু ভাগ্যের উপর নির্ভর করে। তবু যেখানে একটু হলেও বাঁচার সম্ভাবনা বেশি, সেখানে বসতেই চাই। ১১এ পেলে মনের ভিতরে একটা ভরসা তৈরি হয়।”

অন্যদিকে, পার্ক স্ট্রিটের ব্যবসায়ী জিতেন্দ্র সিং বাগ্গা বলেন, “আমাকে আমেরিকা যেতেই হবে, কিন্তু ১১এ না পেলে যাত্রা বাতিল করব। ওই সিটেই বসে মানুষটা বেঁচেছে—এটা তো কিছু বলেই।” ট্র্যাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার ইস্টার্ন রিজিয়নের চেয়ারম্যান অঞ্জনি ধানুকার বক্তব্য, “এটা পুরোপুরি মানসিক ব্যাপার। কেউ কেউ মনে করছেন ওই সিটে বসলে অন্তত মনের শান্তি মিলবে।”

তবে বিমান নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনও নির্দিষ্ট আসনকে ‘নিরাপদ’ বলা বৈজ্ঞানিকভাবে সঠিক নয়। বিমানের দুর্ঘটনা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে তার ধরন, উচ্চতা, গতি এবং ভূমির অবস্থানের উপর। তবুও মানুষের মনস্তত্ত্বে এখন গেঁথে গিয়েছে একটাই বার্তা—”১১এ মানেই নিরাপত্তা, ১১এ মানেই অলৌকিক রক্ষা।” এই অলৌকিক বিশ্বাসকে ঘিরেই এখন টিকিট বুকিংয়ের সময় যাত্রীদের সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত প্রশ্ন—“১১এ ফাঁকা আছে তো?”

আরও পড়ুন – নবান্নের ছাড়পত্র ছাড়া আর নয় কোনও সমঝোতা পত্র, দফতরগুলিকে কড়া নির্দেশ রাজ্যের

_

_

_

_
_
_
_
_