ভেঙে পড়া বিমানের অংশ সরিয়ে মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলে অনুসন্ধান এখনও জারি। বি জে মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলের ভাঙা এলাকা সরিয়ে এখনও দেহাবশেষের সন্ধান চালাচ্ছে উদ্ধারকারীরা। তবে ব্যাপক সংখ্যায় দেহাবশেষের সঙ্গে পরিজনদের ডিএনএ (DNA) মিলিয়ে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার কাজ করতে সময় লাগছে বলে দাবি সিভিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। এপর্যন্ত যে পরিমাণ দেহ ও দেহাবশেষ উদ্ধার হয়েছে তাতে মৃতের সংখ্যা ২৭০ ছাড়িয়ে যাওয়ার দাবি বি জে মেডিক্যাল কলেজের (B J Medical College) জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে।
১২ জুন দুর্ভাগ্যজনক বিমান দুর্ঘটনায় হাসপাতালে বিমানযাত্রীদের দেহের পাশাপাশি বি জে মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের দেহ এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের দেহও আনা হয়েছিল সিভিল হাসপাতালে। সর্বমোট ২৫০ দেহ সেই সময়ই আনা হয়। পরে আরও দেহ নিয়ে আসেন হাসপাতালে চিকিৎসকরাই। বিমানযাত্রী ছাড়া অন্তত ২১টি দেহ আনার দাবি করেন তিনি। যার ফলে মৃতের সংখ্যা ২৭০ বলে দাবি জুনিয়র চিকিৎসক সংগঠনের।
মৃতদের তালিকাতে রয়েছেন হাসপাতালে চিকিৎসক ও তাঁদের পরিজনরাও। হস্টেলের ক্যান্টিনে মুহূর্তের মধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন খাবার খেতে আসা চিকিৎসকরা। সেই সঙ্গে বিস্ফোরণের পরে আগুনের গোলায় মৃত্যু হয় আরও অনেকের। জুনিয়র চিকিৎসকরা জানান, ৪ জন চিকিৎসক ও তাঁদের পরিজনের মৃত্যু হয়েছে। ২০ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। তার মধ্যে ১১ জনকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে দেহ সনাক্ত করে পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রবল বাধার মুখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দায়িত্বে থাকা এক চিকিৎসক রবিবার দাবি করেন, তাঁদের কাছে অন্তত ১০০টি দেহ ও দেহাংশ এসেছে। অর্থাৎ ১০০ স্যাম্পলের সঙ্গে ১০০ পরিবারের ডিএনএ (DNA) পরীক্ষা করে দেখতে দীর্ঘ সময় লাগছে। যে কারণে দীর্ঘ সময় লাগছে দেহ সনাক্ত (identification) করতে। এপর্যন্ত ৪৭ জনের ডিএনএ (DNA) স্যাম্পল মিলেছে পরিজনদের সঙ্গে। তার মধ্যে ২৪ জনের দেহ তুলে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই গুজরাট ও রাজস্থানের বাসিন্দা।
যদিও এরই মধ্যে অমানবিকতার অভিযোগ উঠেছে বি জে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। দুর্ঘটনায় চিকিৎসকদের হস্টেলে থাকা তাঁদের পরিবার বিস্ফোরণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। অনেকেরই সন্তান থেকে পরিজন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তারই মধ্যে শনিবার বি জে মেডিক্যাল কলেজের ডিন জানিয়েছেন অতুল্যম হস্টেল খালি করা হচ্ছে তদন্তের স্বার্থে। সেই চিকিৎসকদের বিভিন্ন হস্টেলে জায়গা করে দেওয়া হবে। এর থেকেই স্পষ্ট সেই হস্টেলে থাকা চিকিৎসকদের পরিবার কতটা ক্ষতিগ্রস্ত। তারই মধ্যে দ্রুত তাঁদের ঘর খালি করতে বলায় এক কথায় উভয় সংকটে চিকিৎসকরা। তাঁরা আহত পরিজনদের পাশে দাঁড়াবেন, না কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পালন করবেন, তা নিয়েই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
–
–
–
–
–
–
–
–
–