উপনির্বাচনের আগে শেষ রবিবার। ছুটির দিনে প্রচারে শেষ জোর। আর সেই সুযোগকে কার্যত মহাঅস্ত্রে পরিণত করল তৃণমূল। একদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদধন্য প্রার্থী আলিফা আহমেদ, অন্যদিকে রুপোলি পর্দার তারকা রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় আর বিকেলে মাঠ কাঁপাতে নামলেন বিধায়ক-নায়িকা সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়—সব মিলিয়ে রবিবারে কালীগঞ্জ যেন রং মাখা রাজনৈতিক উৎসবের পীঠস্থানে পরিণত হল।

রবিবার সকাল থেকেই একঝাঁক প্রচারে মেতে ওঠেন তৃণমূল প্রার্থী আলিফা আহমেদ। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল সাংসদ তথা জনপ্রিয় অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোলাপি কুর্তি আর সানগ্লাসে চেনা সেই স্টার স্টাইল—কালীগঞ্জের অলিগলিতে দেখা মিলতেই ভিড় জমে যায় রচনার গাড়ির চারপাশে। কেউ স্মরণ করেন তাঁর অভিনীত সিনেমা, কেউ বা ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’-এর দৃশ্য। রচনার পিছনে দৌড়াতে দৌড়াতে বছর ত্রিশের প্রিয়া বিবি বলে ওঠেন, “বাংলার দুই দিদি এখন আমাদের সঙ্গে—এক নম্বরে মমতা দিদি, আর দুই নম্বরে দিদি নাম্বার ওয়ান!”

সকাল থেকে শুরু হওয়া রোড শো ঘুরে বেড়ায় কালীগঞ্জ বাজার, বড়কুলবেড়ি, চাঁপাই, ঘাসাডাঙা সহ বিভিন্ন এলাকা। সর্বত্র মানুষের উন্মাদনা ও উৎসাহে জমে ওঠে প্রচার। জনতার গলায় গলা মেলান তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। স্লোগানে মুখরিত হয় গোটা এলাকা।

দিনের দ্বিতীয়ার্ধে প্রচারে নামেন বিধায়ক ও অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। জামালপুর মাঠে সভা শুরুর আগেই উপচে পড়া ভিড়। সেখানে দাঁড়িয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করে সায়ন্তিকার তোপ, “নির্বাচনের সময় এলেই বিজেপি নেতারা প্লেনে-কপ্টারে আসবেন মিথ্যের ঝুড়ি নিয়ে। সারা বছর দেখা মিলবে না। বিজেপি তেরি ফির সে হোগি হার।”


অধিকারী গোষ্ঠীকে নাম না করে আক্রমণ করে সায়ন্তিকার কটাক্ষ, “বাংলায় এখন হিন্দু পরিবারে কেউ শুভেন্দু নামে ছেলের নাম রাখে না, যেমন মুসলিম পরিবারে মীরজাফর রাখা হয় না।” এই সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, বিধায়ক মোশারফ হোসেন, জেলা সভাধিপতি তারান্নুম সুলতানা মীর, কালীগঞ্জ ব্লক সভাপতি দেবব্রত মুখোপাধ্যায়, পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী শেফালী খাতুন-সহ অন্যান্য তৃণমূল নেতৃত্ব।


একদিকে স্থানীয় প্রয়াত জনপ্রিয় নেতা লাল সাহেবের কন্যা, অন্যদিকে একের পর এক তারকা প্রচার—সব মিলিয়ে রবিবারে তৃণমূল শিবিরে চরম উৎসাহ, আর বিরোধী শিবিরে কার্যত নিস্তব্ধতা। এলাকাবাসীর কথায়, “একদিকে জনদরদী দিদি, অন্যদিকে রুপোলি পর্দার নায়িকা—এই মেলবন্ধনে আলিফাকে আটকানো কঠিন।” তৃণমূলের রবিবাসরীয় প্রচার শেষ করল জয়ধ্বনি দিয়েই, ভোটের আগেই জমে উঠল রাজনৈতিক ময়দান।
আরও পড়ুন – ধর্মঘটের ডাক! তার আগেই সম্পাদক-সভাপতি নির্বাচন সিটুর

_
_
_

_

_

_

_

_