Saturday, August 23, 2025

OBC মামলায় চাকরি সৃষ্টিতে বাধা: বিজেপির দ্বিচারিতার মুখোশ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী

Date:

Share post:

রাজনীতির নতুন মঞ্চ হিসাবে ওবিসি তালিকা সংশোধনকে বেছে নিয়েছে রাজ্য়ের বিরোধী দলগুলি। যেখানে পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়কে শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে সমাজে সম্মানজনক জায়গায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছে রাজ্যের সরকার, সেখানে বারবার বিরোধীদের বাধায় সেই পথ বন্ধ হচ্ছে। এমনকি সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে পদক্ষেপ নিলেও তাতে রাজ্যের পদক্ষেপে আদালতের বার্তাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে রাজ্যের বিরোধীরা। ওবিসি সংরক্ষণ (OBC reservation) তালিকা নিয়ে যে স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court), তাতে বিরোধীদের উচ্ছ্বাসকে এবার কটাক্ষ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। সেই সঙ্গে ওবিসি নিয়ে বিজেপির দ্বিচারিতার মুখোশ খুললেন তিনি।

ওবিসি মামলায় অন্তর্বর্তী রায়ে তালিকা তৈরি ও সংশোধনীতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। তবে বাংলার প্রশাসন এখনই তাতে কোনও বড় সমস্যা দেখছে না। মুখ্যমন্ত্রী জানান, অন্তর্বর্তী রায়ে রয়েছে, সম্পূর্ণ রায় হয়নি। সম্পূর্ণ রায় হলে রায়ের সমালোচনা করতে পারি। ওনারা কিছু পরামর্শ, নির্দেশ দিয়েছেন। ওটা নিয়ে লিগাল টিম স্টাডি করছে। আমরা সুপ্রিম কোর্টের কাছে ৩ মাস সময় নিয়েছিলাম। তিনমাস সময় মোতাবেক আমরা কাজটা করেছিলাম। কাজটা সরকার করেনি। কাজটা করেছে ওবিসি কর্পোরেশন। সেখানে কলকাতা হাই কোর্টের একজন প্রাক্তন বিচারপতি রয়েছেন। হাই কোর্টের নিয়ম মেনেই করেছিলাম। কিন্তু প্রতিদিন নতুন নতুন নিয়ম আসতেই পারে।

আদালতের রায়ে নয়, আদালতের বাইরে বিরোধীদের কার্যকলাপ বলে দিচ্ছে একদিকে পিছিয়ে পড়া মানুষদের উন্নয়ন আটকে গিয়ে ও অন্যদিকে সংরক্ষণ জটে শিক্ষা থেকে কর্মসংস্থানে বাধা দিয়েই নিজেদের জয় পতাকা ওড়ানোর চেষ্টা করছে বিরোধীরা। সেখানেই এই প্রসঙ্গে বিরোধীদের মনোভাব স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি প্রশ্ন তোলেন, সিপিআইএম (CPIM) আর বিজেপি (BJP) কোনও দিন চায় না ওবিসি সংরক্ষণ পাশ হোক। ৩৩ শতাংশ লোক যারা বসবাস করেন তাঁদের অধিকার কী করে আমরা কাড়ব। আমরা এটা করিনি, দেশ ভাগের সময় থেকেই আছে। তাদের মানুষের মতো মানুষ গড়ে তুলবেন না? সেই প্রসঙ্গেই তাজমহলের উদাহরণ টেনে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, কী করে ইতিহাসকে মুছবেন।

এই মামলার জটিলতায় যেভাবে রাজ্যের উন্নয়ন আটকে রয়েছে তা বলতে গিয়েই নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্যার কথা উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee) স্পষ্ট করে দেন, চাকরি সৃষ্টি হচ্ছে আর আপনারা বাধা দিচ্ছেন। সেটা নিজেরা খাচ্ছেন। আপনাদের জন্য আজ অনেকে চাকরিহীন হয়ে গেছে। আপনারা এটা আটকাচ্ছেন বলে আমার পুলিশ নিয়োগের হাজার হাজার পদ খালি, নিয়োগ করতে পারছি না। শিক্ষক নিয়োগ করতে পারছি না। আরও অনেক শূন্যপদ রয়েছে।

যে রাজনীতির খেলা বিরোধীরা, বিশেষত বিজেপি শুরু করেছে, তার ছবি স্পষ্ট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে প্রশ্ন করেন, ওবিসি সংরক্ষণ (OBC reservation) আমরা করিনি। এটা মণ্ডল কমিশনের সুপারিশ। ভি পি সিং যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, যখন লড়াই করেছিলেন, তখন বিজেপিও সঙ্গে ছিল। তখন কেন বিরোধিতা করেননি। সময়ে সাথ দেবেন, আর সময়ে মানুষকে অনাথ করে দেবেন, তা তো হতে পারে না। নিচু থেকে যদি মানুষ উপরে উঠে আসে শিক্ষার দ্বারা তাতে আপনাদের আপত্তির কী আছে।

দলনেত্রীর কথার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই বুধবার তৃণমূলের তরফ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিরোধী দলনেতার উদ্দেশ্যকে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়। দলের পক্ষ থেকে ছবি স্পষ্ট করে জানানো হয়, অন্তর্বর্তী কালীন স্থগিতাদেশ হাই কোর্টের। বিজেপি ওবিসি বিরোধী। বিরোধী দলনেতা যিনি লাড্ডু বিলি করেন তাঁর মুখে ভাষা শুনেছি, আদিবাসী ওবিসি সম্পর্কে। বীরবাহা হাঁসদা জুতার নিচে থাকেন। এটা এই বিরোধী দলনেতার মুখে শুনেছি যিনি লাড্ডু বিলি করছেন। যাদের লক্ষ্য চাকরি খাওয়া। ফলে এর পিছনে উদ্দেশ্য যে ওবিসিদের ক্ষতি করব, একটা অস্থিরতা তৈরি করব।

spot_img

Related articles

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ শাহ, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা মোদির: কটাক্ষ তৃণমূলের

অনুপ্রবেশ ইস্যুকে বার বার জাগিয়ে তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদতে নিজেদের ভুল নিজেরাই চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।...

রাজ্যে শুরু SIR প্রস্তুতি: একাধিক পদক্ষেপ নির্বাচন কমিশনের

গোটা দেশেই এসআইআর লাগু হবে ঘোষণা করে দিয়েছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার (Gyanesh Kumar)। বিহারে ৬৫ হাজার...