ভারতের প্রাচীন ইতিহাসের সবচেয়ে জটিল রহস্য হল সিন্ধু লিপি (Indus Valley script) পাঠোদ্ধার। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিনের ঘোষিত ১০ লক্ষ ডলারের পুরস্কার ফের উসকে দিল এই রহস্যভেদের ইচ্ছাকে। পুরস্কার ঘোষণার পাঁচমাসের মাথায়, ভারতের প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর (ASI) ঘোষণা করল এক আন্তর্জাতিক সেমিনারের। যেখানে গবেষকরা সিন্ধু লিপির (Indus Valley script) অর্থ উন্মোচনের চেষ্টা করবেন। ২০ থেকে ২২ অগাস্ট, তিনদিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে গ্রেটার নয়ডার পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় ইনস্টিটিউট অফ আর্কিওলজিতে। অনুষ্ঠানটির শিরোনাম : ‘Decipherment of Indus Script: Current Status and Way Forward’। এই সেমিনারে অংশ নেবেন গবেষক, ভাষাবিদ, ইতিহাসবিদ এবং যাঁরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সিন্ধু লিপি পাঠোদ্ধারে কাজ করছেন তাঁরা। গবেষকদের নিজস্ব গবেষণাপত্র আগেই জমা দিতে বলা হয়েছে, যেগুলির ভিত্তিতে থিমভিত্তিক সেশনগুলি পরিচালিত হবে। সেমিনারে অনলাইন ও অফলাইন, দু’ভাবেই প্রবন্ধ উপস্থাপন হবে।

১৯২৪ সালে ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ স্যার জন মার্শালের খনন অভিযানের পরে প্রথম সিন্ধু লিপি চর্চায় আসে। মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পা এলাকায় পাওয়া বিভিন্ন মৃৎপাত্র, সিল ও খোদাইচিত্রে পাওয়া যায় বেশ কিছু রহস্যময় প্রতীকচিহ্ন। ১৯৩১ সালে মহেঞ্জোদারো নিয়ে প্রথম সরকারি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। তবে শতাব্দী পেরিয়ে গেলেও, এই প্রতীকগুলোর অর্থ এখনও পুরোপুরি জানা যায়নি। প্রত্নতত্ত্ব দফতরের হিসেবে, সিন্ধু লিপিতে প্রায় ৪০০-রও বেশি স্বতন্ত্র চিহ্ন রয়েছে। গত এক দশকে এই লিপি পাঠোদ্ধারে স্বাধীনভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দুই ভারতীয় গবেষক- বহতা মুখোপাধ্যায় এবং ভারত রাও, যিনি ‘যজ্ঞানদেবম’ নামেও পরিচিত। বহতা মুখোপাধ্যায় মনে করেন, সিন্ধু লিপির ভিত্তি মূলত বাণিজ্যিক ও কাঠামোগত। অন্যদিকে ভারত রাও লিপি পড়ার জন্য ব্যবহার করছেন আধুনিক ক্রিপ্টোগ্রাফিক বিশ্লেষণ। এই প্রসঙ্গে বহতা মুখোপাধ্যায় বলেন, “ASI-এর এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। এটি শুধু গবেষকদের মনোযোগ আকর্ষণ করবে না, বরং একসঙ্গে বহু মত ও পদ্ধতির বিশ্লেষণও সম্ভব হবে।”

তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঘোষণা করেন, যিনি সিন্ধু লিপি (Indus Valley script) সফলভাবে পাঠোদ্ধার করতে পারবেন, তাঁকে দেওয়া হবে ১ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ প্রায় ৮.৩ কোটি টাকার পুরস্কার। তিনি আরও বলেন, “ইন্ডাস উপত্যকার লিখনপদ্ধতি আমরা আজও পুরোপুরি বুঝতে পারিনি। এই সভ্যতার সঙ্গে প্রাচীন তামিলের যোগ রয়েছে কি না, সে নিয়েও যথেষ্ট গবেষণার প্রয়োজন। তামিলনাড়ুর ইতিহাসে তার যথাযথ স্থান নির্ধারণ করতেই এই প্রচেষ্টা।” আরও পড়ুন: রথযাত্রা উপলক্ষ্যে পুরী স্পেশাল ৩৬৫টি ট্রেন রেলের! সাঁতরাগাছি থেকেও মিলবে পরিষেবা

–

–

–

–

–

–

–

–
–
–
–
–