নিজেদের অপশাসন ঢাকতে অতীতকে বিকৃত করার নতুন রাজনীতিতে মত্ত কেন্দ্রের মোদি সরকার। কেন্দ্রের ক্ষমতায় টিকে থাকতে উন্নয়নের নতুন দিশা নেই। তাই সমালোচনায় ভর করেই রাজনীতিতে টিকে থাকার মরিয়া চেষ্টা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi)। সেই তালিকায় নবতম সংযোজন – মোদির নিজের বই লিখে ফেলা। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর (Indira Gandhi) সময়ের এমার্জেন্সি-কে নিয়ে সম্প্রতি রাজনীতির অঙ্ক কষা শুরু করেছে বিজেপি। এবার সেই এমার্জেন্সি (Emergency) নিয়ে বই লেখার ঘোষণা মোদির। যে প্রধানমন্ত্রী একের পর এক স্বৈরাচারী পদক্ষেপ নিয়ে গণতন্ত্রকে কার্যত হাসির খোরাকে পরিণত করেছেন, সেই নরেন্দ্র মোদির এমার্জেন্সির সময়ের অভিজ্ঞতার কাহিনীকে গিরগিটির স্বৈরাচারিতা (camouflaged dictatorship) কটাক্ষ বাংলার শাসকদল তৃণমূলের।

নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে নরেন্দ্র মোদি প্রচার করেন, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সময়ের জরুরি অবস্থার সময়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে বই (The Emergency Diaries) লিখছেন তিনি। দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সেই বই প্রকাশ করবে। জরুরি অবস্থার ৫০ বছর পূর্তিতে প্রকাশিত হবে সেই বই। আরএসএস-এর (RSS) প্রচারক হিসাবে সেই সময়ের নিজের অভিজ্ঞতা সেখানে তুলে ধরেছেন নরেন্দ্র মোদি। সেই সঙ্গে ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৭-এর সেই সময়ের তাঁর ছবিও থাকছে এই বইতে।

‘The Emergency Diaries’ chronicles my journey during the Emergency years. It brought back many memories from that time.
I call upon all those who remember those dark days of the Emergency or those whose families suffered during that time to share their experiences on social…
— Narendra Modi (@narendramodi) June 25, 2025
যে জরুরি অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সেখানেই ইন্দিরা গান্ধী কীভাবে দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় কাজ করেছিলেন সেই সময়ে তা স্পষ্ট করেন তৃণমূল সাংসদ সাগরিকা ঘোষ (Sagarika Ghose)। তিনি ব্য়াখ্যা করেন, ১৯৭৫ সালে ইন্দিরা গান্ধী (Indira Gandhi) জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন কারণ আরএসএস গোটা দেশকে অরাজকতার দিকে ঠেলে দিচ্ছিল। হ্যাঁ, জরুরি অবস্থা একটি কালো দাগ ছিল, কিন্তু সেই একই ইন্দিরা গান্ধী নির্বাচন ঘোষণা করেছিলেন, পদত্যাগ করেছিলেন এবং জনসাধারণের প্রশ্নের সম্মুখিন হয়েছিলেন। জরুরি অবস্থাকে (Emergency) অনুকরণ না করে কেন নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) আগে এই ধরনের সাংবাদিক বৈঠক ডাকছেন না, প্রশ্ন সাগরিকার (Sagarika Ghose)।

Indira Gandhi imposed #Emergency1975 because @RSSorg was pushing India towards total anarchy. YES, the Emergency was a BLOT, BUT the same #IndiraGandhi called elections, resigned and took questions in public. Why doesn’t @narendramodi hold a press conference like this 👇🏽first… pic.twitter.com/NP5nlx2J7s
— Sagarika Ghose (@sagarikaghose) June 25, 2025
তৃণমূলের পক্ষ থেকে মোদির একের পর এক কীর্তি ফাঁস করে এই বই নিয়ে নরেন্দ্র মোদির পর্দাফাঁস করা হয়। দাবি করা হয়, গত ১১ বছর ধরে নরেন্দ্র মোদির সময়ে ভারত অঘোষিত জরুরি অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। তার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তি, একটি দল ১৪০ কোটি মানুষের স্বপ্নকে প্রতিস্থাপন করেছে। চেনা যায় না এমনভাবে ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে। কোনও বিতর্ক, কাঁটাছেড়া, ঐক্যমত ছাড়াই আইন পাস হয়। আইন আজ আর শক্তিমানদের মনে ভয় ধরায় না, দুর্বলদের আতঙ্কের কারণ। সংবাদ মাধ্যমকে হুমকি দিয়ে বিজেপির তাবেদারির সংবাদ মাধ্যমে পরিণত করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন নিজেদের বিজেপির রবার স্ট্যাম্পে পরিণত করেছে। ইডি আর সিবিআই বিজেপির রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শক হিসাবে কাজ করে।


সেই সঙ্গে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ নিয়ে তৃণমূলের স্পষ্ট বার্তা, তল্লাশি ও গ্রেফতারি দিয়ে বিরোধীদের মুছে ফেলা হচ্ছে। সেই সঙ্গে দাবি করা হয়, ভিন্নমত পোষণকারী ও সমালোচকদের অপমানিত, পদদলিত ও গ্রেফতারের মাধ্যমে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়। সংখ্যালঘুরা রাষ্ট্র পরিচালিত সন্ত্রাসের ভয়ে বাঁচে। দলিত ও পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়কে অত্যাচারিত করে রাখা হয়েছে। ঘৃণা ও ধর্মান্ধতা এখন মূল স্রোতে চলে এসেছে। এটাকে কোনওভাবেই গণতন্ত্র বলা যায় না। এটা যত্নসহকারে রঙ বদলানো স্বৈরাচার (camouflaged dictatorship)।


–
–

–
–
–

–

–
