সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে (College) গণধর্ষণের শিকার ছাত্রী। নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে ১২ ঘণ্টার মধ্যে ধৃত ৩ অভিযুক্ত। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে দোষীদের কঠোরতম শাস্তির দাবি করলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। মনে করালেন, এটা বাংলা। এখানে ধর্ষকদের ফুলের মালা পরানো হয় না। শাস্তি পেতে হয়। শুক্রবার, তৃণমূল (TMC) ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন মন্ত্রী শশী পাঁজা (Shashi Panja), তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য (Trinankur Bhattacharya)। সেখানেই নির্যাতিতার পাশে থাকার আশ্বাস দেন তৃণমূল নেতৃত্ব। পাশাপাশি কেন এখনও অপরাজিতা বিলে সই করলেন না রাষ্ট্রপতি- প্রশ্ন তোলেন শশী পাঁজা। ব্রিজভূষণ, বিলকিস বানুর ধর্ষকদের প্রতি বিজেপির আচরণ মনে করান কুণাল। একই সঙ্গে তাঁরা বলেন, ধর্ষণ নিয়ে রাজনীতি না করে, ঘটনার নিন্দা করে নির্যাতিতার পাশে থাকা উচিৎ সকলের। মোদির সঙ্গে প্রজ্বল রেভান্নার ছবি, বিলকিসের ধর্ষকদের মালা পারানোর ছবি সাংবাদিক বৈঠকে দেখান তৃণমূল নেতৃত্ব।

রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, “সমবেদনা জানানোর ভাষা নেই। আইন ছাত্রীর উপর যারা বর্বর ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের জেলে পাঠানো হয়েছে। নির্যাতিতার পাশে আছি।” এর পরেই বিরোধীদের নিশানা করে শশী বলেন, “অপরাধ হবে আর তা নিয়ে রাজনীতি হবে, এটা চলতে পারে না। যারা রাজনীতিতে দেউলিয়া তারা বিভিন্ন ব্যাখ্যা করছে। সোশাল মিডিয়ায় কাটাছেঁড়া চলছে। তাঁদের কাছে আমার একটাই বক্তব্য, অপরাজিতা বিল বিধানসভায় ১০ মাস আগে পাশ হয়ে গিয়েছে। মানুষ দ্বারা নির্বাচিত বিধায়করা তাতে সায় দিয়েছেন। ওই বিল কে আটকে রেখেছে? রাজনীতি করার আগে উত্তর দিক বিজেপি। রাস্তায় বাঁদরামো করবেন না। তার চেয়ে বিল আগে পাশ করানোর চেষ্টা করুন। মহিলার শরীর রাজনৈতিক যুদ্ধের জন্য নয়। তা সম্মান করার।”

দোষীদের চরম শাস্তির দাবি জানিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, “কে বা কারা করছে বড় কথা নয়, অভিযুক্তরা কোন দলের তা বড় কথা নয়, এদের চামড়া তুলে দেওয়া উচিত। পুলিশকে অনুরোধ করছি সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করুন। এসব জানোয়ারকে ছেড়ে রাখা যায় না, যাবে না।”
আরও খবর: ১১ মহিলাকে লাগাতার ধর্ষণের অভিযোগ ওয়েস্ট ইন্ডিজের তারকা ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে!

ধৃত অভিযুক্তরা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্য এবং কলেজেরই অস্থায়ী কর্মী বলে খবর ছড়ায়। বিষয়টি নিয়ে তৃণাঙ্কুর জানান, ”আমি দায়িত্ব সহকারে বলছি, যে কলেজে (College) এই ঘটনা ঘটেছে, ওই কলেজে ছাত্র পরিষদের কোনও রানিং ইউনিট নেই। তাই ইউনিট প্রেসিডেন্টও ছিল না। তবে ওই অভিযুক্ত যখন ছাত্র ছিল, তখন ছাত্র সংগঠনে তার একটা ছোট্ট পদ ছিল। সেটা অবশ্য টিএমসিপির ব্যর্থতা, তা মেনে নিচ্ছি। কিন্তু ২০২২ সালে জেলা সভাপতি টিএমসিপির যে কমিটি তৈরি করেছিল, তাতে অভিযুক্তের নাম নেই।” তৃণাঙ্কুরের কথায়, ঘটনার প্রতিবাদ, প্রতিকারের থেকেও এখানে তৃণমূল এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে জড়িয়ে কুৎসা করার চেষ্টা চলছে। যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। বিরোধীদের তীব্র কটাক্ষ করে তৃণাঙ্কুর বলেন, মূল অভিযুক্ত এক সময়ে তৃণমূলের কোনও এক কমিটিতে ছিলেন। কিন্তু তাঁরা জ্যোতিষচর্চা করেন না। তাঁদের পক্ষে ভবিষ্যৎ দেখা সম্ভব ছিল না। তাই বুঝতে পারেননি ২০২৫ সালে এসে ওই যুবক এমন ঘৃণ্য কাজ করবে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতির মতে, দোষী কোন রাজনৈতিক দল করে, বা সে কোন ধর্মের মানুষ, তা না দেখে অপরাধ দেখেই যেন তার বিচার হয়।

রাম-বামকে নিশানা করে কুণাল বলেন, তারা সবাই নারী নির্যাতনের পাপে ডুবে আছে। সাম্প্রতিক অতীতে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যেখানে ধর্ষণে অভিযুক্তদের বীরের সম্মান দিয়ে অভ্যর্থনা জানিয়েছে বিজেপি। এই বিষয়ে ব্রিজভূষণ, বিলকিস বানু, উন্নাওয় ঘটনার কথা টেনে কুণালও বলেন, কসবার ঘটনার নিন্দা করার ভাষা তাঁদের নেই। তবে তৃণমূল নির্যাতিতার পরিবারের পাশে আছে।

–

–

–
–

–

–
–
–
–
–