বিজেপি শাসিত ওড়িশায় নিরাপদ নন খোদ সরকারি আধিকারিকরা। নিজের দফতরে সব কর্মীদের সামনে মাটিতে ফেলে হ্য়াঁচড়াতে হ্যাঁচড়াতে বাইরে বার করে আনা হল এক ওড়িশা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের (OAS) আধিকারিককে। মুখে মারা হল লাথি। নবীন পট্টনায়েকের (Naveen Pattanaik) বিজেডি শাসনের অবসানে বিজেপির রাজত্বে ঠিক কোন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ, এই ঘটনা থেকে সেই জঙ্গল রাজের ছবি আরও স্পষ্ট। ঘটনায় বিক্ষোভে সামিল ওএএস আধিকারিকদের সংগঠন (OAS Association)। বেগতিক দেখে দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রী মোহন মাঝির (Mohan Majhi)।

ওড়িশার রাজধানী শহর ভুবনেশ্বরের (Bhubaneswar) পুরসভার আধিকারিকের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় (ভাইরাল ভিডিওর সত্যতা বিশ্ববাংলা সংবাদ যাচাই করেনি)। সেখানে দেখা যায় কিছু যুবক মারতে মারতে মাটিতে ফেলে দেন রত্নাকর সাহু (Ratnakar Sahoo) নামে এক আধিকারিককে। তারপর তার কলার ধরে মাটিতে হেঁচড়ে দফতরের বাইরে বের করে নিয়ে যায়। তারই মধ্যে এক যুবক আধিকারিকের মুখে জুতোসহ পা দিয়ে আঘাতও করে। আধিকারিক বারবার কিছু বোঝানোর চেষ্টা করলেও তার কথায় কান দেয়নি হামলাকারী যুবকরা।

ঘটনার সূত্রপাত, ভুবনেশ্বরের লোকসভা নির্বাচনের বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ প্রধানকে নিয়ে। সোমবার পুরসভার কাজ শুরু হওয়ার পর বিজেপির এক আধিকারিক জীবন রাউত ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা আচমকাই পুরসভার অতিরিক্ত কমিশনার ওএএস (OAS) সাহুর (Ratnakar Sahoo) ঘরে ঢুকে আসে। দাবি করে তিনি বিজেপি প্রার্থী প্রধানের সঙ্গে দুর্বব্যহার করেছেন। তিনি বারবার তা অস্বীকার করলে তার উপর চড়াও হয় বিজেপি নেতার সঙ্গীরা।

এর পরের গোটা ঘটনাই প্রকাশিত ভিডিও-তে। শুধুমাত্র এক বিজেপি নেতাকে অসম্মান করার অভিযোগ তুলে সরকারের শীর্ষ পদের এক আধিকারিককে প্রকাশ্য দিবালোকে রাজধানী শহরে যেভাবে হেনস্থা হতে হয়, স্বাভাবিকভাবে তাতে বিক্ষুব্ধ রাজ্যের ওএএস আধিকারিকদের সংগঠন। বাধ্য হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মোহন মাঝি মঙ্গলবারই দেখা করেন ওএএস-দের সংগঠনের সঙ্গে। আশ্বাস দেন আধিকারিকদের নিরাপত্তার। কিন্তু যে জঙ্গলরাজ বিজেপি ওড়িশায় ক্রমাগত প্রতিষ্ঠা করে চলেছে, তাতে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিতে আদৌ নিশ্চিন্ত নন আধিকারিকদের সংগঠন।

আরও পড়ুন: বুধেই ঘোষণা বিজেপি রাজ্য সভাপতির নাম! উঠে আসছে একটি নাম

ঘটনার পরই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেডি প্রধান নবীন পট্টনায়েক (Naveen Patanaik)। কীভাবে দিবালোকে রাজধানী শহরে এই ঘটনা ঘটে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। যদি একজন সরকারি আধিকারিক এই রাজ্যে নিরাপদ না থাকেন তবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। দ্রুত ঘটনায় যুক্ত দোষীদের শাস্তি দিয়ে নাগরিকদের প্রশাসনের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আবেদন জানান তিনি।

–

–

–

–

–
–
–
–