চরম হয়রানির মুখে অবশেষে বাড়ি ফিরলেন হুগলির চুঁচুড়া ২ নম্বর রবীন্দ্রনগরের বাসিন্দা দেবাশীষ দাস। পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক দেবাশীষ গত ১৪ জুন একটি বেসরকারি সংস্থার হয়ে ওড়িশার এক প্রজেক্টে ফায়ার সিস্টেম সংক্রান্ত কাজে গিয়েছিলেন। তার সঙ্গেও ছিলেন আরও কয়েকজন সহকর্মী। কিন্তু সেখানে গিয়ে তিনি যে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন, তা তাকে আতঙ্কিত করে তুলেছে।
দেবাশীষের অভিযোগ, স্থানীয় পুলিশ তাদের বাংলায় কথা বলার কারণে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে। কাজের জায়গা থেকে তুলে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর শুরু হয় তল্লাশি ও জেরা। তিনি পাসপোর্ট, আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার কার্ড, জন্ম শংসাপত্র, মাধ্যমিকের মার্কশিট ও পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট দেখালেও তাতে মুক্তি মেলেনি। তার ফোন কেরে নেওয়া হয়, এবং পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতেও দেওয়া হয়নি।
এই ঘটনায় মানসিকভাবে বিধ্বস্ত দেবাশীষ বলেন, “দেশের ১৪টি রাজ্যে কাজ করেছি, কিন্তু এমন পরিস্থিতি আগে কখনও হয়নি। এখন মনে হচ্ছে বাইরে কাজে যেতে ভয় লাগছে। কিন্তু কাজ না করলে সংসার চলবে কীভাবে?” তাঁর পরিবারও গভীর উৎকণ্ঠায় কাটিয়েছে এই সময়টা। দেবাশীষের মা বিভা দাস বলেন, “ছেলের সঙ্গে কয়েকদিন যোগাযোগ না থাকায় মনে হচ্ছিল হয়তো আর কোনোদিন ছেলেকে দেখতে পাব না। পাসপোর্ট দেখানোর পর ছাড়া হয়েছে। কি ভরসায় আবার বাইরে পাঠাবো?”
এই ঘটনাকে ঘিরে উঠছে এক গুরুতর প্রশ্ন—সব আইনি নথি সঙ্গে থাকার পরও যদি এক পরিযায়ী শ্রমিক এমন হেনস্থার শিকার হন, তাহলে বাইরে কাজ করতে যাওয়া অন্যান্য শ্রমিকরা কতটা নিরাপদ? বিভা দাসের ক্ষোভ, “আজ আমার ছেলের সঙ্গে হয়েছে, কাল কার সঙ্গে হবে বলা যায় না। এভাবে চলতে পারে না।”
আরও পড়ুন – কল্য়াণ চৌবের চুক্তি স্বাক্ষরের অধিকার নেই: ISL নিয়ে সুপ্রিম জটের দোহাই
_
_
_
_
_
_
_
_
_
_