বাংলা বিরোধী বিজেপি সরকারের নিত্যদিন নিত্য নতুন পথে হেনস্থা বাঙালিদের। কোথাও জেলে ভরে রেখে মারধর, কোথাও দেশের সীমানা পার করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ। বিজেপি শাসিত রাজধানী দিল্লিতেও পার পাননি বাঙালি বাসিন্দারা। বসন্ত কুঞ্জের জয়হিন্দ কলোনির (Jaihand Colony) বাঙালিদের পরিষেবা থেকে বঞ্চিত রেখে কার্যত ‘শায়েস্তা’ করার পথে হাঁটে রেখা শর্মার (Rekha Sharma) প্রশাসন। প্রতিবাদে সরব হন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর নির্দেশে রবিবার উচ্ছেদের হুমকির ভয়ে থাকা বাঙালি পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করলেন তৃণমূল সাংসদদের প্রতিনিধি দল। সরেজমিনে তদন্ত চালালেন কতখানি অনিশ্চিত জীবনের মধ্যে রয়েছেন দিল্লির বাঙালি বাসিন্দারা।

রবিবার সকালে রাজ্যসভার তিন সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় (Sukhendu Sekhar Ray), সাগরিকা ঘোষ (Sagarika Ghose) ও সাকেত গোখলে (Saket Gokhale) যান জয়হিন্দ কলোনিতে। ঘন্টা খানেক জয়হিন্দ কলোনিতে দরিদ্র পরিবারগুলির সঙ্গে আলোচনায় বিজেপির চরম নির্মমতার কথা শুনে তীব্র নিন্দায় ফেটে পড়েন তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ষীয়ান সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। তিনি বলেন, যেভাবে বস্তি উচ্ছেদ করছে বিজেপি, তা জরুরি অবস্থার থেকেও অবর্ণনীয়। সেই সময়ে জরুরি অবস্থায় বস্তি উচ্ছেদ নিয়ে গোটা দেশে আন্দোলন হয়েছিল।এই দরিদ্র কয়েয়শো মানুষ বসন্তকুঞ্জের জয় হিন্দ কলোনিতে দিন কাটান। এদের মধ্যে বাঙালি বেশি, অল্পকিছু অসমের পরিবার থাকে। এদের মধ্যে কেউ কাগজ কুড়ায় কেউ পরিচারিকা কাজ করে। এই সামান্য রোজকারে তাদের পরিবার চলে। আর্বজনার স্তুপে ভরা দুর্গন্ধময় এককথায় অবর্ননীয় একটা পরিবেশে তিন দশকের বেশি সময় তারা এই কলোনীতে বসবাস করে। এই মানুষগুলো আমাদের মতো ভারতীয়। তাঁদের কাছে যাবতীয় প্রমাণপত্র আছে। কিন্তু রোহিঙ্গার তকমা দিয়ে তাদের ভিটেহারা করতে নির্মমতা পরিচয় দিচ্ছে বিজেপি। ষড়যন্ত্র এবং চক্রান্তকারী বিজেপির লক্ষ্য একটাই – বাঙালি খেদাও। কোনও পরিচয় পত্রের তোয়াক্কা না করে এই হত দরিদ্র মানুষগুলোকে জল ও বিদুৎ-এর লাইন কেটে আরও চরম পরিনতির দিকে ঠেলে দিতে চেয়েই বিজেপির এই নোংরা রাজনীতি।

ইতিমধ্যেই জয়হিন্দ কলোনীর (Jai Hind Colony) জমি বিবাদ আদালতে পৌঁছেছে। তিরিশটি পরিবার জমির মালিকানার দাবি জানিয়েছে। আদালতে এই মামলা বিচারাধীন। সেপ্টেম্বরে আদালতে পুনরায় শুনানি আছে। তা সত্ত্বেও জমির মালিক এবং প্রসাশনের দখলদারির এই টানাটানির খেসারত দিতে হচ্ছে এই দরিদ্র বাঙালী পরিবারগুলিকে।

আরও পড়ুন: বাংলা-বিরোধী বিজেপি! অসম থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হল গৃহবধূ আরতিকে

তৃণমূল সাংসদদের প্রতিনিধিদল সব রকমভাবে জয়হিন্দ কলোনীর বাঙালিদের পাশে থাকার বার্তা দেয়। তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রত্যেক বাঙালির মর্যাদা, পরিচয়, এবং অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশঙ্কা সরাতে তাঁদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই চালানো হবে।
–

–

–

–

–

–

–

–