ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন মালদহের চাঁচলের ৬ জন বাংলাভাষী শ্রমিক। পাঞ্জাবের লুধিয়ানায় পশুহত্যার অভিযোগে গ্রেফতার করে তাঁদের রাখা হয়েছে লুধিয়ানা সেন্ট্রাল জেলে। পরিবারের দাবি, কোনও নির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়াই পুলিশ তাঁদের জেলে পাঠিয়েছে এবং সেখানে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন তাঁরা।

জেলে থাকা শ্রমিকরা হলেন—জাকির হোসেন, রাইহান আলম, কুরবান আলি, আজম আলি, মিনজার আলি ও মুক্তার আলম। পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, তাঁরা তিন সপ্তাহ আগে লুধিয়ানার একটি হোটেলে মাংস কাটার কাজে গিয়েছিলেন। সেই কাজের মধ্যেই স্থানীয় জনতার হাতে গণপ্রহারের শিকার হন। পরে পুলিশ এসে তাঁদের গ্রেফতার করে বলে অভিযোগ। এখন তাঁদের বিরুদ্ধে পশুহত্যার মামলা রুজু করা হয়েছে।

শ্রমিকদের পরিবারের অভিযোগ, লুধিয়ানার পুলিশ তাঁদের আটক রেখে শারীরিকভাবে নির্যাতন করছে। আইনি সহায়তা পেতে আইনজীবী নিয়োগ করা হলেও তাতে তেমন লাভ হয়নি। মাথাপিছু ১০ হাজার টাকা নিয়েও আইনজীবী তাঁদের পক্ষে যথাযথ লড়াই করেননি বলে অভিযোগ।

বুধবার মালদহ জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি রফিকুল হোসেন পৌঁছন বেলপুকুরে শ্রমিকদের পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করতে। তিনি জানান, বিষয়টি রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ কমিটির চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলামকে জানানো হয়েছে। রাজ্য সরকার ও জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই উদ্যোগ নিয়েছে শ্রমিকদের মুক্ত করে রাজ্যে ফিরিয়ে আনার জন্য।

পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য, বাড়ির একমাত্র উপার্জনকারীরা জেলে থাকায় তাঁরা চরম আর্থিক সংকটে ভুগছেন। দিন চলে না, অভাব-অনটনে কষ্টের মধ্যে দিন কাটছে। তাঁদের একটাই আবেদন, রাজ্য সরকার যেন দ্রুত হস্তক্ষেপ করে তাঁদের স্বজনদের মুক্ত করে ফিরিয়ে আনে।

স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, শুধুমাত্র বাংলাভাষী হওয়ার কারণেই শ্রমিকদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক আচরণ করা হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে—ভিনরাজ্যে কাজ করতে যাওয়া বাংলার শ্রমিকরা কতটা নিরাপদ?


_

_

_

_
_
_
_
_