Sunday, December 14, 2025

‘এরপর কি সবাই আশাহত হলে বিচারপতিদের ছবি নিয়ে রাস্তায় নামবে?’ আদালত অবমাননার মামলায় ভর্ৎসনার শিকার চাকরিপ্রার্থীরা

Date:

Share post:

‘এরপর কি সবাই আশাহত হলে বিচারপতিদের ছবি নিয়ে রাস্তায় নামবে?’ আদালত অবমাননার মামলায় বৃহস্পতিবার ঠিক এভাবেই ভর্ৎসনার শিকার হলেন সুপার নিউমেরারির শারীর শিক্ষা এবং কর্মশিক্ষার(SLST) ওয়েটিং লিস্টের চাকরিপ্রার্থীরা। ২৫ এপ্রিল কিরণ শঙ্কর রায় রোডে হওয়া ঘটনায় আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, ফিরদৌস শামীম ও সুদীপ্ত দাশগুপ্তকে মারধর এবং বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর ছবি মাড়িয়ে যাওয়ার ঘটনায় বিক্ষোভ প্রদর্শনকারী চাকরিপ্রার্থীদের তীব্র ভর্ৎসনা করল বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বৃহত্তর বেঞ্চ।

বৃহস্পতিবার, এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের সাফ মন্তব্য, ‘আমরা ছবিতে বিচারপতির ছবি মাটিতে রেখে মাড়িয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখেছি। এটা যদি আদালতের অবমাননা না হয়, তবে আর কি?’ এদিন অভিযুক্তদের আইনজীবীরা ঘটনার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে বলেন, এটি হতাশার বহিঃপ্রকাশ, তারা কখনোই আদালতকে অপমান করতে চাননি। অভিযুক্তরা সুপার নিউমেরারি পোস্টের চাকরিপ্রার্থী ছিলেন এবং একটি ইন্টারিম আদেশের কারণে তাদের নিয়োগ স্থগিত হয়ে যায়। তাঁরা বিচারপতির ছবি আনেননি। তাঁরা ছবির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। বিচারপতির ছবি মাড়াননি।

অভিযুক্তদের আইনজীবীর বক্তব্যে ক্ষুব্ধ বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য বলেন, ছবির পাশে দাঁড়ানো হয়েছে মানে কি? আপনারা বলছেন ছবি আনেননি কিন্তু আমরা ছবিতে স্পষ্ট চাকরিপ্রার্থীদের হাতে বিচারপতির ছবি দেখতে পাচ্ছি। আপনারা ছবি না এনে থাকলে কি ছবি হওয়ায় উড়ে এল? ছবি মাড়িয়ে চলে যাচ্ছেন দেখা যাচ্ছে। এরপর থেকে কি সবাই আদালতের রায়ে হতাশ হলে বিচারপতির ছবি নিয়ে রাস্তায় নামবে? এটা কেমন যুক্তি?

শুধু তাই নয়, বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের সাফ বক্তব্য, সব ক্ষেত্রে ক্ষমা চাওয়া যথেষ্ট নয়। তিনি আরো বলেন, যদি জাস্টিফাই করা না যায়, তাহলে জেলে যান। আপনারা কি সেখানে পিকনিক করতে গিয়েছিলেন? আদালত অভিযুক্তদের আইনজীবীর কাছে আর কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাদের নামও জানতে চায়।

অন্যদিকে, এই মামলায় অপর অভিযুক্ত তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “আমি যেটা বলেছি তার জন্য ক্ষমা চাই না। আমার এই ঘটনার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। ঘটনাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।” একইসঙ্গে, আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, বিচারপতিদের পোস্টার ব্যবহার কলকাতা হাইকোর্টের সংস্কৃতি নয়। এর আগে কখনো হয়নি। এর আগে একজনের (অভিজিৎ গাঙ্গুলি) পোস্টার দেওয়া হয়েছিল রিক্সায়, শাড়িতে, ধুতিতে। তুমি ভগবান বলে। কে এনেছেন এই কালচার? আদালতে মামলা চলাকালীন প্রেস কনফারেন্স হচ্ছে। কে এই সংস্কৃতি আনল? এই ঘটনার সঙ্গে কুণাল ঘোষের কোনো সম্পর্ক নেই বলে উল্লেখ করে, বৃহত্তর বেঞ্চের সামনে তুলে ধরেন পুলিশ কমিশনারের রিপোর্ট। ওই রিপোর্টে তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে কিচ্ছু বলা হয়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর দাবি, এই মামলা সম্পূর্ণরূপে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।

আরও পড়ুন – প্রধানমন্ত্রীর সভায় যাচ্ছি না: জানালেন ‘অভিমানী’ দিলীপ

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

spot_img

Related articles

হনুক্কা উৎসবের মধ্যেই সিডনির বন্ডি বিচে গুলিবর্ষণ, মৃত অন্তত ১০

ইহুদি ধর্মীয় উৎসব হনুক্কার মধ্যেই অস্ট্রেলিয়ার সিডনির জনপ্রিয় বন্ডি সমুদ্র সৈকতে হামলা(Sydney Bondi Beach Shooting)। কমপক্ষে ১০ জনের...

ক্রীড়ামন্ত্রীকে টানা ৪ ঘণ্টা স্টেডিয়ামে বসিয়ে রেখেও আসেননি শতদ্রু

অভিজিৎ ঘোষ মেসিকে কেন্দ্র করে যুবভারতীর ঘটনায় অনেকে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে (Sports Minister Arup Biswas) টার্গেট করছেন। কয়েকটি মিডিয়া...

টলিপাড়ায় প্রথম সমকামী বিয়ে! দুই অভিনেত্রীর বিবাহবাসরে হাজির স্টুডিও পাড়ার কলাকুশলীরাও 

একে অন্যকে অনেকদিন ধরেই পছন্দ করতেন, কিন্তু টলিউডের (Tollywood) জনপ্রিয় দুই অভিনেত্রীর মধ্যে যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে সে...

১২২ বছর পর রহস্যের উন্মোচন! কোনারক সূর্যমন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে সরছে বালি

ওড়িশার কোনারক সূর্যমন্দিরের (Konark Sun Temple) গর্ভগৃহ থেকে বালি সরানোর কাজ শুরু হল মঙ্গলবার থেকে। প্রায় ১২২ বছর...